মোঃ আরাফাত সানি, টেকনাফ:
কক্সবাজারের টেকনাফে ইয়াবাসহ আটক মাদককারবারীকে ছিনিয়ে নেওয়ার সময় বিজিবি’র সাথে মাদক কারবারিদের গুলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এতে বিজিবির ৭ সদস্য আহত হয়েছে বলে বিজিবি সূত্রে জানা গেছে। এ সময় মাদক কারবারিদের সাথে গোলাগুলিতে এক রোহিঙ্গা নিহত হয়েছেন।
বুধবার (২ আগস্ট) দুপুর সাড়ে ১২টায় টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের লেদা এলাকায় বিজিবি সদস্যরা ইয়াবা উদ্ধারে গেলে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন হ্নীলার ২৪ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা রফিক (৪৮)। এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ আরও কয়েকজনকে আইএমও হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসা জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে জানা গেছে।
বুধবার রাতে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে টেকনাফ-২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্ণেল মোহাম্মদ মহিউদ্দিন আহমেদ জানান, লেদার চিহ্নিত মাদককারবারী জাফর আলমকে ২০ হাজার পিস ইয়াবা ট্যাবলেটসহ আটক করে বিজিবি। পরবর্তীতে লেদা বাজার অতিক্রমকালে তার সহচরেরা মাইকিং করে তাদের আত্মীয় স্বজন দিয়ে রাস্তা অবরোধ করে। এ সময় জাফর আলমের ভগ্নিপতি ডাকাত হারুন তার দলবল নিয়ে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রসহ ঘটনাস্থলে উপস্থিত বিজিবি ও স্থানীয় জনতার উপর গুলিবর্ষণসহ হামলা করে এবং মাদক কারবারি জাফর আলমকে ছিনিয়ে নিতে চেষ্টা করে। এ সময় বিজিবি আত্মরক্ষার্থে কয়েক রাউন্ড গুলি করে এবং সন্ত্রাসীদের ছত্রভঙ্গ করে আসামি ও মাদকসহ বিওপিতে ফেরত আসে। এ সময় মাদককারবারী ও সন্ত্রাসীদের হামলায় ৭ জন বিজিবি সদস্য গুরুতর আহত হয়। যাদের মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাদের সকলকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এতে সন্ত্রাসীদের গুলিতে স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি হতাহত হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।
বিজিবি’র অধিনায়ক আরও জানান- ইয়াবাসহ আটক জাফর আলম একজন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত চিহ্নিত মাদক কারবারী। জব্দকৃত ইয়াবা ট্যাবলেটসহ নিয়মিত মামলার মাধ্যমে টেকনাফ মডেল থানায় হস্তান্তর এবং উক্ত ঘটনার সাথে জড়িত জ্ঞাত ও অজ্ঞাত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উল্লেখ্য যে, আটক জাফর আলম তার ভাই মোহাম্মদ আলম, জাহাঙ্গীর আলম ওই এলাকার শীর্ষ মাদক কারবারী ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত আসামি। তাদের একাধিক মাদকের মামলা রয়েছে। তারা আত্মসমর্পণের পরও পূণরায় মাদক ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের রয়েছে একটি মাদক পাচারের বিশাল সিন্ডিকেট। রয়েছে অবৈধ অস্ত্র ও ভাড়াটিয়া একদল রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী। যার কারণে তারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে হামলা করতে দ্বিধাবোধ করে না। তাদের রয়েছে অবৈধ শত-শত কোটি কোটি টাকার বাড়ি-গাড়ি ইত্যাদি। শীঘ্রই তাদেরকে আইনের আওতায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে উক্ত অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারসহ ইয়াবা কারবারের চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসবে। পাশাপাশি তাদের অবৈধ সম্পদ অনুসন্ধান করতে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন সচেতন লোকজন।