শিব্বির আহমদ রানা, বাঁশখালী:
সাগরে নিষেধাজ্ঞা শেষে অন্য সবার মতো গত রোববার (২৩ জুলাই) রাতে মাঝি-মাল্লাসহ ১৮-২০ জনের বহরে মাছ ধরতে যায় বাঁশখালী উপজেলার চাম্বল ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের পশ্চিম চাম্বল বাংলাবাজার এলাকার জসীম বহদ্দারের একটি ফিশিং বোট।
ওই বোটের শ্রমিক হিসেবে সমুদ্রে মাছ ধরতে যাওয়া এক শ্রমিক লাশ হয়ে ফিরেন। নিহত শ্রমিক গণ্ডামারা ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব বড়ঘোনার হামিদ উল্লাহ বাপের বাড়ীর মোহাব্বত আলীর বড় পুত্র মো. আব্দুর রশিদ (৫০)।
সোমবার (২৪ জুলাই) সকালে বঙ্গোপসাগরের কুতুবদিয়া চ্যানেলের বাহিরে মাছ ধরতে জাল বসানোর জন্য জালের গুচ্ছ স্থাপন (গোঁজগাড়া) করার সময় জালের সাথে থাকা ‘বিয়োন চোরা’ নামক একটি লম্বা গাছ তাঁর ঘাঁড়ের উপর পড়ে যায়। ওই গাছের ধাক্কা খেয়ে আব্দুর রশিদ সাগরে পড়ে যায়। পরে তাকে উদ্ধার করলে তার মৃত্যু হয়েছে বলে নিশ্চিৎ হন তার সাথে যাওয়া অন্যান্য শ্রমিকরা।
নিহত রশিদের পার্শ্ববর্তী প্রতিবেশী মো. মোজাহিদ জানান, ‘আজ দুপুর আড়াইটার সময় রশিদের মরদেহ পৌছায় তার বাড়িতে। তার গালের চোয়াল ভাঙ্গা দেখা যায়। তার মরদেহ নিয়ে আসেন আরেকটি বোটে করে। ওই বোটের লোকজন জানিয়েছেন ভোরে মাছ ধরতে গিয়ে গোঁজ গাড়ার সময় গাছের বারী খেয়ে সাগরে পড়ে যায়। সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করলে ততক্ষণে সে মারা যায় বলে জানা যায়।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বাংলাবাজার বোট মালিক সমিতির সভাপতি হেফাজ উদ্দিন জানান, গত রাতে জসিম বহদ্দারের ফিশিং বোটে শ্রমিক হিসেবে গিয়ে গণ্ডামারার আব্দুর রশিদ নামের এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। নিহত ওই ব্যাক্তির একই এলাকার আরো কয়েকজন শ্রমিকও ওই বোটে ছিলো। তাদের কাছ থেকে শুনেছি লোকটি মাথা ঘুরিয়ে হঠাৎ করে বোট থেকে পড়ে যায়। তাছাড়া সে নাকি মৃগ রোগী। বোটের লোকজন তাকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করলেও পরে তাঁর মৃত্যু হয়।’
তিনি আরো বলেন, জসিম বহদ্দারের সাথে নিহতের পরিবারের স্বজনদের সাথে কথা হয়েছে। বোট মালিক জসিম বহদ্দার নিহতের পরিবারকে কিছু অর্থসহায়তা দেয়ার কথা দিয়েছে। এতে দুই পক্ষ সম্মতি পোষণ করায় লাশটি দাফন করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
উল্লেখ্য, নিহত আব্দুর রশিদ দুই ছেলে ও তিন কন্যা সন্তানের জনক। তাঁর এক মেয়ে বিবাহ দিলেও এখনো অবিবাহিত রয়েছে আরো দুই মেয়ে। তার দুই ছেলে পরিবারে সবার ছোট। পরিবারের ব্যয়ভার বহন করতে উপার্জনের একমাত্র অবলম্বন ছিলেন নিহত আব্দুর রশিদ।
নুর মোহাম্মদ, সিএনএন বাংলা২৪