আন্তর্জাতিক ডেস্ক
পশ্চিমা বিনিয়োগকারীরা মুখ ফিরিয়ে নেওয়াসহ নানান কারণে অর্থনৈতিক মন্দায় পড়েছে তুরস্ক। সেই মন্দা কাটিয়ে তুলতে এখন আবার পশ্চিমাদের দিকেই ঝুঁকছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান।
গত সোমবার লিথুয়ানিয়ার ন্যাটো সম্মেলনে যোগ দিয়ে— হঠাৎ করে ৩২তম দেশ হিসেবে সুইডেনকে সদস্যপদ দিতে সম্মতি জানান এরদোয়ান। মূলত পশ্চিমা মিত্রদের খুশি করতেই এমন পদক্ষেপ নেন তিনি। অথচ সম্মেলনে যোগ দেওয়ার আগে তিনি জানান, সুইডেনের সদস্যপদের অনুমোদন দেবেন না তিনি। কারণ দেশটি তুরস্কের শর্ত পূরণ করেনি।
এরদোয়ানের এ পদক্ষেপের মাধ্যমে একটি বিষয় পরিষ্কার হয়েছে— অর্থনৈতিক সমস্যা দূর করতে উদগ্রীব তিনি।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে আঙ্কারাভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান সাদিক ইনস্টিটিউটের রাজনৈতিক বিশ্লেষক বাতু কোসকুন বলেছেন, ‘এই হচ্ছে ক্লাসিক এরদোয়ান, যেখানে নীতি বা কথার সুর হঠাৎ বদলে যেতে পারে – কোনো পূর্বাভাস ছাড়াই।’
তিনি আরও বলেছেন, ‘এরকম একটা ইউ-টার্ন নিলে অন্য যে কোনো রাজনৈতিক নেতাকে ভুগতে হতো, কিন্তু এরদোয়ানের কোনো সমস্যাই হচ্ছে না।’
‘এর কারণ হলো, এই সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের প্রতিদান হিসেবে তিনি ইতোমধ্যেই সুইডেন, যুক্তরাষ্ট্র, ন্যাটো এবং ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন— সবার কাছ থেকেই কিছু অঙ্গীকার আদায় করে নিয়েছেন।’ যোগ করেন বাতু কোসকুন।
সুইডেনকে সদস্যপদের অনুমোদন দিতে রাজি হওয়ায়, তুরস্ক এখন আশা করছে, তারা যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে দ্রুত বহুল প্রতীক্ষিত এফ-১৬ যুদ্ধবিমান পাবে।
এই বিশ্লেষক বলেছেন, নির্বাচনের পর এরদোয়ান এখন অনেকটাই আত্মবিশ্বাসী। বিশেষ করে রাশিয়া এবং পশ্চিমা বিশ্ব উভয়ের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক থাকায় তার আত্মবিশ্বাস বেশি। তবে তার জন্য এখন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো দেশের অর্থনীতি চাঙ্গা করা। আর তিনি সেটিই করছেন ।
পশ্চিমাদের সঙ্গে সম্পর্ক বৃদ্ধির পাশাপাশি রাশিয়ার সঙ্গেও সম্পর্ক বজায় রাখার বিষয়টির দিকে নজর রাখছেন তিনি। যদিও কয়েকদিন আগে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি তুরস্ক সফরে আসার পর তিনি তার হাতে পাঁচ ইউক্রেনীয় সেনা কমান্ডারকে তুলে দেন। এ বিষয়টি আবার রাশিয়াকে ক্ষুব্ধ করে।