
নিজস্ব প্রতিবেদক
কাঁচা মরিচের ঝাঁজে জনগণ দিশেহারা হয়ে পড়েছিল। পাল্লা দিয়ে প্রায় প্রতিদিনই বাড়ছিল পণ্যটির দাম। অবস্থা এমন হয়েছিল যে, সকাল বিকেলেও দামের তারতম্য দেখা যাচ্ছিল। এ অবস্থায় দাম নিয়ন্ত্রণে ভারত থেকে কাঁচা মরিচ আমদানি শুরু হলে একদিনের ব্যবধানে রাজধানীর বাজারে কাঁচা মরিচের দাম কমেছে ৩০০ টাকা। সোমবার (৩ জুলাই) কারওয়ান বাজারে মরিচের পাইকারি দাম ছিল ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা কেজি। কিন্তু হাত ঘুরে তা খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা কেজিতে।
রাজধানীর কারওয়ান বাজার থেকে মোহাম্মদপুরের সাদেক খান কৃষি মার্কেট পর্যন্ত যেতেই দামের এই তারতম্য দেখা যায়। তবে এ কারণে জরিমানা গুনতে হয়েছে ব্যবসায়ীদের।
সকালে জাতীয় ভোক্তা সংরক্ষণ অধিকার অধিদপ্তরের সঙ্গে রাজধানীর কারওয়ান বাজার ঘুরে দেখা যায়, কাঁচা মরিচের ধরন ভেদে পাইকারিতে ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। সেই কাঁচা মরিচই রাজধানীর মোহাম্মদপুরের খান কৃষি মার্কেটে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে ভোক্তা সংরক্ষণ অধিকার অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা অভিযানে গেলে কাঁচা মরিচের দাম তাৎক্ষণিক নেমে আসে ২০০ টাকা কেজিতে।
সাদেক খান কৃষি মার্কেটে ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সকাল থেকেই বাজারে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা কেজি দরে কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছিল। কাঁচা মরিচের এত দাম হওয়ায় তারা কেউই ২৫০ গ্রামের বেশি কাঁচামরিচ কিনতে পারছিলেন না।
কিন্তু দুপুর ১২টার দিকে ভোক্তা সংরক্ষণ অধিকার অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা ওই মার্কেটে অভিযানে যান। যাওয়ার পরপরই সেখানে কাঁচা মরিচের দাম ২০০ টাকা কেজিতে নেমে আসে। অভিযানিক দল দেখে ক্রেতারা হুমড়ি খেয়ে পড়েন দলের সঙ্গে। এ সময় ক্রেতাদেরকে এক কেজি বা আধা কেজি মরিচ কিনতে দেখা যায়।
অভিযানিক দল বিক্রেতাদের কাছে তাদের কাঁচা মরিচ কেনার রশিদ দেখতে চান। কিন্তু দুই একজন সেই রশিদ দেখাতে পারলেও বাকিরা দেখাতে পারেননি। তাদের রশিদে দেখা গেছে কেউ কাঁচা মরিচ পাইকারি কিনেছেন ১৮০ টাকা কেজি, আবার কেউ পাইকারি কিনেছেন ১৯৫ টাকা কেজিতে।
এ সময় যারা রশিদ দেখাতে পারেনি তাদেরকে জরিমানার আওতায় আনা হয়। এরকম সা ব্যবসায়ীকে সাড়ে ৭ হাজার টাকা জরিমানা ধার্য করে আদায় করে অভিযানিক দল।
বিক্রেতাদের একজন মাসুদুর রহমান সিএনএন বাংলা২৪কে বলেন, সব দোষ শুধু আমাদেরই। আমরা তো কিনে এনে পাঁচ দশ টাকা লাভে বিক্রি করি। আর সরকারি লোকজন এসে আমাদেরকেই জরিমানা করে। যেখান থেকে কাঁচা মরিচ বেশি দামে বিক্রি করা হয়, তারা তাদের কাছে যেতে পারে না।
অভিযান শেষে জাতীয় ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মাসুম আরেফিন বলেন, আমরা কারওয়ান বাজার থেকে এসেছি। কারওয়ান বাজারের মূল্য এবং সাদেক খান কৃষি মার্কেটের মূল্যের ওপর ভিত্তি করে আমরা জরিমানা করেছি। আমরা ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা কেজি পাইকারি দরে কিনতে দেখেছি কারওয়ান বাজারে।
তিনি আরও বলেন, ওনাদের মূল অপরাধগুলো হচ্ছে যে পণ্য ক্রয় করেছেন সেই ক্রয়ের ভাউচারগুলো দেখাতে পারছিলেন না। একই সঙ্গে তাদের দোকানে কোনো মূল্য তালিকা রাখা হয়নি। আমরা তাদেরকে এ বিষয়ে বার বার সতর্ক করেছি কিন্তু সেগুলো তারা কর্ণপাত করেননি। বাজার অস্থিরতার বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান সব সময় চলতে থাকবে।
এইচ এম কাদের,সিএনএন বাংলা২৪: