চট্টগ্রাম ব্যুরো:
কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লি: এর মহাব্যবস্থাপক (পরিকল্পনা) ও বিপনন বিভাগসহ দুটি গুরুত্বপূর্ণ পদ ধরে রেখে প্রকৌশলী গৌতম কুন্ডু দায়িত্ব পাওয়ার পর বিভিন্ন বিভিন্ন অনিয়ম, দুর্নীতি ও গ্রাহক হয়রানি, জিম্মি করে ফাইল প্রতি ২ হাজার টাকার থেকে শুরু করে লাখ টাকা পর্যন্ত ঘুষ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। কয়েকজন গ্রাহক বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ করেছেন। গৌতম কুন্ডুর বিরুদ্ধে কোম্পানির গাড়ি অনুমতি না নিয়ে ড্রাইভিং শিখতে গিয়ে কোটি টাকার গাড়ি নষ্ট করা হলেও তার বিরুদ্ধে কোন ধরণের ব্যবস্থা না নিয়ে শাস্তির পরিবর্তে ৫ লাখ টাকা গাড়ি মেরামতের খরচ দেখানোর অভিযোগ রয়েছে।
জানা গেছে, কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্টিটিবিউশন কোম্পানির জিএম হিসেবে পরিকল্পনা ও বিপননের দায়িত্ব পালন করে আসলেও এমডি প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম হজ্ব পালন করতে গেলে এ সুযোগে বিপনন এবং মার্কেটিং বিভাগেরও মহাব্যবস্থাপক হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর প্রকৌশলী গৌতম কুন্ডু শুরু করে গ্রাহক হয়রানি ও ফাইল প্রতি ঘুষ আদায়। গৌতম কুন্ডুর কারণে সেবামূলক এ প্রতিষ্ঠানে হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে গ্রাহকদের।
অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রকৌশলী গৌতম কুন্ডু বিপনন বিভাগের জিএম হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে আবাসিকের পূর্ণ সংযোগ ও অনুমোদন গ্রাহক ফাইল প্রতি ২ হাজার টাকা থেকে ৫ হাজার টাকা করে আদায় করছেন। পরিকল্পনা বিভাগের মালামাল উঠানামার ফাইল প্রতি এমপিও অনুমোদন করতে ৫ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা, ডিআরএস ও সিএমএস তৈরী করতে কোম্পানির ঠিকাদার ও শিল্পকারখানার ফাইল প্রতি ওআরএস ও সিএমএস থেকে ২ লাখ টাকা থেকে চার লাখ টাকা পর্যন্ত বিভিন্ন ফাইল প্রতি আদায়ের অভিযোগ রয়েছে। এর মধ্যে ডিলাক্স বেকারী গ্রাহক সংকেত নং২৬০বি০০২৫, জহুরুল হক গ্রাহক সংকেত নং১৫৫২-১৫৬০, মো. আনোয়ার গ্রাহক সংকেত নং ১৩টি-৬৪৫৭ এর কাছ থেকে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ করেছে বলে তারা স্বীকারও করেছেন।
এমডি প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম হজ্জে যাওয়ার পর গৌতম কুন্ডুর নেতৃত্বে একটি সিন্ডিকেট অল্পদিনের মধ্যে কয়েক কোটি টাকার ঘুষ বাণিজ্য, গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি এবং সৎ ও দক্ষ অভিজ্ঞ অফিসারদের সরিয়ে টাকার বিনিময়ে প্রায় ৩০ জনকে বদলী করে নিজের পছন্দের লোকজনদের চেয়ারে বসিয়ে দিয়ে কোটি টাকার বদলী বাণিজ্য অভিযোগ উঠেছে সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে। গত ডিসেম্বরের স্পোর্টস চট্টমেট্টো-ঘ-১১-৩৫০৬ অবৈধভাবে নিজের ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহারে নিষেধ থাকার পরও চট্টগ্রাম বিমান বন্দরে নিয়ে মাঠে ড্রাইভিং শিখতে গিয়ে গাড়ি বন্দরের একটি দেয়ালের সাথে ধাক্কা লেগে দুমড়ে মুছড়ে যায়। উক্ত গাড়ি অবৈধভাবে ব্যবহার করতে গিয়ে শাস্তির বদলে কোম্পানির পক্ষ থেকে গাড়ি মেরামতের জন্য ৫ লাখ টাকা ওই গাড়ি মেরামতের জন্য ব্যবস্থা করে দেয়।
মো. অনোয়ার নামের এক গ্রাহক বলেন, তার কাছে গিয়েছিলাম আমার একটা কাজে। যতোদিন পর্যন্ত টাকা হাতে দিইনি ততোদিন উনি আমার ফাইল ধরেন নি। অফিসের স্টাফরা বলেছেন, স্যারের জন্য টাকা না দিলে ফাইল বছরের পর বছর পড়ে থাকবে, কাজ হবে না।
এ বিষয়ে বিদ্যুৎ ও গ্যাস সুরক্ষা আন্দোলনের নেতা আলমগীর নুর বলেন, কর্ণফুলী গ্যাস কোম্পানির অফিসে গ্রাহক হয়রানির সাথে যেসব অফিসার জড়িত এবং অনিয়ম দুর্নীতির সাথে যারা যুক্ত তাদের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়ে সরিয়ে দেয়া উচিত। না হয় এ ধরণের সেবামূলক প্রতিষ্ঠান থেকে সেবা নিতে এসে হয়রানির পরিমাণ আরও বেশী বাড়তে থাকবে বলে তিনি জানান।
অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য জানার জন্য প্রকৌশলী গৌতম কুন্ডুর মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। এসএমএস পাঠানো হলেও কোন উত্তর দেননি।
এবিষয়ে পেট্টোবাংলার চেয়ারম্যান জনেন্দ্র নাথ সরকার বলেন, কর্ণফুলী গ্যাসের কয়েকজন অফিসারের বিরুদ্ধে বেশ কিছু অভিযোগ আমাদের কাছে এসেছে। অভিযোগ তদন্ত করে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে
এইচ এম কাদের,সিএনএন বাংলা২৪: