কক্সবাজার অফিস :
কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান। ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী কুতুবদিয়া উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান ও মুজিবুর রহমান কক্সবাজার পৌরসভার সদ্য সাবেক মেয়র। এর আগে দীর্ঘদিন ছিলেন সদর উপজেলার ঝিলংজা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। এই দুইজনের নিয়ন্ত্রণে কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের নয়টি উপজেলা, চারটি পৌরসভা ও একটি সাংগঠনিক উপজেলা কমিটি। এসব সাংগঠনিক উপজেলায় কমিটি গঠনসহ চারটি সংসদীয় আসনে প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে এই দু’জনের স্বাক্ষর ও সুপারিশে। সরকার দলীয় সংগঠনের জেলার প্রধান হিসেবে অত্যন্ত প্রভাবশালী ও ক্ষমতাধর হিসেবে ইতোমধ্যে পরিচিতি পেয়েছেন জাদরেল এই দুই নেতা।
ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে জেলা সভাপতি ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী কুতুবদিয়া উপজেলা ও মুজিবুর রহমান কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন।
বুধবার (৮মে) শেষ হওয়া চলতি সময়ের প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোটে হেরেছেন হেভিওয়েট এই দুই প্রার্থী।
কুতুবদিয়ার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোটে কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী মোটরসাইকেল প্রতীকে ৩ হাজার ৯৬৫ ভোট পেয়ে শোচনীয়ভাবে পরাজয় বরণ করেছেন। প্রতিদ্বন্দ্বী তিনজন প্রার্থীর মধ্যে তিনি হয়েছেন তৃতীয়। এমনকি তাঁর জামানত বাজেয়াপ্ত হওয়ার আশংকা করা হচ্ছে। প্রতিদ্বন্দ্বী হানিফ বিন কাশেম ঘোড়া প্রতীকে পেয়েছেন ২৭ হাজার ২৪৯ ভোট। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা অপর প্রার্থী আসহাব উদ্দিন আনারস প্রতীকে পেয়েছেন ৫ হাজার ৪৩৮ ভোট। তবে, ভোটের দুদিন আগে থেকে অসুস্থ হয়ে ঢাকায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী।
নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, কুতুবদিয়া উপজেলায় ছয়টি ইউনিয়নে ভোটার সংখ্যা ৯৭ হাজার ১৭০ জন। সেখানে ৩৬ হাজার ৬৫২ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। এই উপজেলায় ভোট পড়েছে ৩৭ শতাংশ।
অপরদিকে, কক্সবাজার সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান আনারস প্রতীকে পেয়েছেন ২৭ হাজার ৮৩৩ ভোট। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী, কক্সবাজার পৌরসভার সাবেক চারবারের চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা নুরুল আবছার মোটরসাইকেল প্রতীকে ৩৬ হাজার ৬০০ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তাঁর চেয়ে ৮ হাজার ৭৬৭ ভোট কম পেয়ে পরাজিত হয়েছেন মুজিবুর রহমান।
নির্বাচন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, কক্সবাজার পৌরসভা এবং সদর উপজেলার পাঁচ ইউনিয়ন- ঝিলংজা, পিএমখালী, খুরুশকুল, চৌফলদন্ডি ও ভারুয়াখালিতে মোট ভোটার ১ লাখ ৪৪ হাজার ৮০১ জন। নির্বাচনে ৬৪ হাজার ৪৩৩ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। সকাল থেকে মেঘাচ্ছন্ন ও উৎসবহীন পরিবেশেও ৪৪ শতাংশ ভোট পড়েছে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
অপরদিকে, মহেশখালী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সরকারি দল আওয়ামী লীগের কোনো প্রার্থী ছিলোনা। এই উপজেলায় প্রার্থী হয়েছিলেন মহেশখালী-কুতুবদিয়া আসনের সরকার দলীয় সংসদ সদস্য আশেকউল্লাহ রফিকের চাচাতো ভাই, বিএনপির বহিস্কৃত নেতা হাবিবউল্লাহ ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক সিরাজুল মোস্তফার ভাগ্নে জয়নাল আবেদিন ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান শরিফ বাদশা। এই উপজেলায় জয়নাল আবেদিন বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন।
নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, মহেশখালী উপজেলায় একটি পৌরসভা ও ৮টি ইউনিয়ন মিলে ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ৫৭ হাজার।