ই-পেপার | বৃহস্পতিবার , ২৭শে জুন, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

ঈদগাঁও বাজারের অধিকাংশ হোটেলে পচা-বাসি নিম্নমানের খাবার!

সেলিম উদ্দীন, ঈদগাঁও প্রতিনিধি:

কক্সবাজারের ঈদগাঁও বাজারের অধিকাংশ হোটেলে পচা, বাসি ও নিম্নমানের খাবার বিক্রির অভিযোগ দীর্ঘদিনের। অসাধু হোটেল ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে জরুরি অভিযানের দাবি করে আসছেন ভোক্তারা।

জানা যায়, উপজেলার অধিকাংশ হোটেলে নিম্নমানের এবং পচা, বাসি খাবার বিক্রি হচ্ছে। এসব খাদ্য খেয়ে প্রতারিত ও পেটের পীড়ায় আক্রান্ত হচ্ছে ক্রেতারা।

চট্টগ্রাম -কক্সবাজারের প্রবেশদ্বার ঈদগাঁও বাস ষ্টেশন, উপজেলার ঐতিহ্যবাহী ঈদগাঁও বাজারে প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে হাজার হাজার মানুষ আসে। তারা ক্ষুধা নিবারনের জন্য বেছে নেয় এসব হোটেল।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, আকর্ষণীয় রঙ মিশ্রিত ভেজাল ও বিভিন্ন ধরনের খাবার বিক্রি হচ্ছে। খাবার হোটেলের মিষ্টিতে ২-৩ দিনের পচা বাসি ও বিভিন্ন ধরনের নিম্নমানের মিষ্টি বিক্রয় হচ্ছে।

অভিযোগ আছে, ভাতের হোটেলে ভেজাল মরিচ ও মসলার গুঁড়ো দিয়ে মাছ, মাংস রান্না করা হচ্ছে। বাসি মাছ ও মাংসের সঙ্গে মিশিয়ে নতুন তরকারি রান্না করে বিক্রি করা হচ্ছে। হোটেলগুলোয় খাদ্য পরিবেশন ও মিষ্টি তৈরির সঙ্গে জড়িতদের পোশাক নোংরা। সম্প্রতি থালা বাসন পরিষ্কার করার ডিটারজেন্টের বদলে টয়লেটে ব্যবহৃত হারপিক দিয়ে থালা-বাসন পরিষ্কার করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।

এভাবেই চলছে ঈদগাঁও বাজারের প্রধান সড়কস্থ পূবানী নামের খাবার হোটেল। চরম অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরী করা খাবার বাসি হয়ে গেলেও ফেলে দেয়া অথবা নষ্ট না করে বরং পঁচা এসব খাবার চড়াদামে বিক্রি করে আসছে সমালোচিত এ হোটেলটি।

গত সোমবার রাতে এ হোটেলের টেবিলে পরিবেশিত ছানার মিষ্টি মুখে তুলেই বিকট দুর্গন্ধের কারনে ফেলে দিতে বাধ্য হন স্থানীয় এক৷ সাংবাদকর্মী। অনেক আগে তৈরী করা মিষ্টি নষ্ট হয়ে গেলেও পঁচা এ মিষ্টি বিক্রি করা হচ্ছিল চড়াদামে। নষ্ট মিষ্টির বিষয়টি হোটেলের ম্যানেজারকে জানালে তড়িঘড়ি করে মিষ্টির গামলাটি শো কেস থেকে সরিয়ে ফেলা হয়। সরিয়ে নেয়ার সময় দেখা যায়, মিষ্টি নষ্ট হওয়ার কারনে সাথে থাকা সিরকা ঘোলাটে হয়ে গেছে। অথচ পঁচা এ মিষ্টি প্রতিদিন বিক্রি করে আসছে তারা।

ভূক্তভোগী সাংবাদিকের সাথে একই টেবিলে ছিলেন দৈনিক নয়াদিগন্তের প্রতিনিধি আতিকুর রহমান মানিক। তিনি জানান, পঁচা মিষ্টি পরিবেশনের বিষয়টি স্বীকার করে ম্যানেজার বলেন, মিষ্টি ফ্রীজে না রাখায় “একটু সমস্যা” হয়েছে ।

এ ব্যাপারে মোঃ ইব্রাহিম নামে বাজারের এক ক্রেতা বলেন, উন্নতমানের আসবাবপত্র সমৃদ্ধ চাকচিক্যপূর্ণ পুবানী হোটেলের পেছনের দিকে যেখানে খাদ্য প্রস্তত করা হয় তা খুবই নোংরা। ভুক্তভোগী একজন ক্রেতা কবির বলেন, এ ব্যাপারে আপত্তি জানালে হোটেল মালিক ও কর্মচারীরা মিলে গ্রাহকদের সঙ্গে খুবই দুর্ব্যবহার করে থাকে।

জানতে চাইলে হোটেল মালিক উত্তম রায় পুলক বলেন গরমের কারনে মিষ্টিতে একটু সমস্যা হয়েছে। তবে এসব (বাসী-পচা) মিষ্টি তিনি প্রায় প্রতিদিন খেলেও কোন সমস্যা হয়না বলে দাবী করেন পুলক।

ঈদগাঁও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুবল চাকমা বলেন, হোটেলে বাসী-পচা খাবার বিক্রি করলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।