ই-পেপার | বৃহস্পতিবার , ২৭শে জুন, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

জার্মানির সহায়তায় গাজা থেকে ৬৮ শিশু উদ্ধার

ডয়চে ভেলে

গাজার একটি দাতব্য কেন্দ্র থেকে শিশু ও কর্মীদের পশ্চিম তীরে সরিয়ে নিতে সহযোগিতা করেছে জার্মান পররাষ্ট্র দপ্তর। তবে এই স্থানান্তরে ক্ষুব্ধ হয়েছেন ইসরায়েলের উগ্র ডানপন্থী রাজনীতিবিদরা।

 

জার্মান পররাষ্ট্র দপ্তর জানিয়েছে, সোমবার ৬৮ শিশুর পাশাপাশি ১১ কর্মী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের রাফার এসওএস চিলড্রেনস ভিলেজ থেকে পশ্চিম তীরের বেথলেহেমে ‘অস্থায়ীভাবে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।’

 

পররাষ্ট্র দপ্তরের একজন মুখপাত্র জানান, রাফাতে পরিচালিত দাতব্য কেন্দ্রটির জন্য সহযোগিতা চেয়ে নভেম্বরের মাঝামাঝি জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ জানিয়েছিল এসওএস চিলড্রেনস ভিলেজ নামের এনজিওটি।

 

ওই মুখপাত্র আরও বলেন, ‘আমাদের এই নিবিড় প্রচেষ্টা শেষ পর্যন্ত সফল (সোমবার) হয়েছে বলে স্বস্তি লাগছে এবং সংশ্লিষ্ট সবাইকে আমরা ধন্যবাদ জানাতে চাই।’

 

গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় রাফা শহরে ১০ লাখের বেশি শরণার্থী আশ্রয় নিয়েছে। অনেকেই জনাকীর্ণ আশ্রয়কেন্দ্র ও তাঁবুর নিচে কোনো রকম দিন কাটাচ্ছেন। ইসরায়েলি চেকপয়েন্ট এবং ওই উপত্যকায় ইসরায়েলের চলমান সামরিক অভিযানের কারণে গাজায় সাহায্য পৌঁছানো বাধাগ্রস্ত হয়েছে। দাতব্য সংস্থাগুলো জানিয়েছে, সেখানে মজুত খাদ্য ও সরবরাহ দ্রুত ফুরিয়ে যাচ্ছে।

 

এদিকে, রাফাতে থাকা হামাস সদস্যদের নির্মূল করতে অভিযান চালানোর কথা বলে আসছে ইসরায়েল। কিন্তু সেখানে পূর্ণমাত্রায় হামলা করা হলে গুরুতর মানবিক বিপর্যয়ের ঘটতে পারে বলে সতর্ক করে আসছে যুক্তরাষ্ট্র ও জার্মানির মতো দেশগুলো।

 

ইসরায়েল আরও জানিয়েছে, যেকোনো সামরিক অভিযানের আগে রাফা শহরের কিছু অংশ খালি করার পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছেন তারা।

 

টাইমস অব ইসরায়েল জানিয়েছে, সরকারের নিরাপত্তা সংক্রান্ত মন্ত্রিসভার সুস্পষ্ট অনুমোদন ছাড়াই জার্মানির অনুরোধে অপারেশনটি সমন্বয় করেছে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ও জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ।

 

শিশুদের সরিয়ে আনার এই পদক্ষেপটির সমালোচনা করেছেন ইসরায়েলের অতি-ডানপন্থী অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোট্রিচ। এই অভিযানটিকে ‘নৈতিক ব্যর্থতা’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর কাছে এর জবাবও চেয়েছেন তিনি।

 

নিরাপত্তা বিষয়ক মন্ত্রিসভার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি সূত্রের বরাত দিয়ে ইসরায়েলের চ্যানেল টুয়েলভ জানিয়েছে, এই উদ্ধার অভিযান বা স্থানান্তর প্রক্রিয়াটি ‘গাজায় জিম্মি ও তাদের পরিবারের প্রতি হাস্যকর এবং অনৈতিক আচরণ।’

 

গত বছরের ৭ অক্টোবর হামাসের সন্ত্রাসী হামলার সময় ২৫০ ইসরায়েলিকে জিম্মি করে হামাস। ইসরায়েল বিশ্বাস করে, গাজায় তাদের মধ্যে ১৩০ বন্দী রয়েছেন, যাদের ৩২ জন এর মধ্যে মারা গেছেন বলে ধারণা করা হয়।

 

পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি বসতিতে পৌর সেবা দিয়ে আসছে গুশ এটজিয়ন আঞ্চলিক পরিষদ নামের একটি সংস্থা। ৬৮ জন শিশুকে যে পথ ধরে সরিয়ে আনা হয়েছে, সেই পথে নেমে উদ্ধার অভিযানের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে সাধারণ মানুষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন সংস্থাটির বিদায়ী চেয়ারম্যান শ্লোমো নে’মান।