রাঙ্গুনিয়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি:
সারাদেশে তীব্র দাবদাহে অতিষ্ঠ জনজীবন। তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রিও ছাড়িয়ে যাচ্ছে কোথাও কোথাও। বৃষ্টির আশায় আকাশপানে তাকিয়ে মানুষ। প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষার জন্য রোদ, বৃষ্টির প্রয়োজন অনস্বীকার্য। কিন্তু অনেক দিন ধরে বৃষ্টির দেখা নেই। এমন অবস্থায় বৃষ্টি কামনায় মুসল্লিদের নিয়ে ইসতিসকার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়েছে রাঙ্গুনিয়ায়৷ চলমান প্রচণ্ড তাপ প্রবাহের কারণে অতিষ্ঠ মানুষ সৃষ্টিকর্তার অনুগ্রহ লাভের জন্য নামাজ শেষে দুই হাত তুলে কান্নাকাটিও করেন৷
বুধবার (২৪ এপ্রিল) সকালে উপজেলার সরফভাটা ইউনিয়নের আল উম্মাহ ফাউন্ডেশন এর উদ্যোগে ‘আমাদের সরফভাটা’র ব্যবস্থাপনায় সালাতুল ইসতিসকা বা বৃষ্টির জন্য বিশেষ নামাজ আদায় করেন। সরফভাটা ইত্যাদি চত্বরের পশ্চিমে রাস্তা সংলগ্ন খোলা মাঠে এ নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। নামাজে এলাকাবাসীসহ বিভিন্ন স্থানের মুসল্লিরা অংশ নেন। বিশেষ এ নামাজে ইমামতি করেন মাওলানা আবুল বয়ান।
দুই রাকাত নামাজের আগে নসিবতপূর্ণ বক্তব্য দেয়া হয়৷ পরে দুই রাকাত নামাজে ইসতিসকা আদায় করেন মুসল্লিরা৷ নামাজ শেষে মুসল্লিদের নিয়ে খুতবা ও আল্লাহতালার দরবারে দুই হাত তুলে মোনাজাত করেন তারা৷ চলমান প্রচণ্ড দাবদাহের কারণে অতিষ্ঠ মানুষ সৃষ্টিকর্তার অনুগ্রহ লাভের জন্য এ সময় দুহাত তুলে কান্নাকাটিও করেন৷ শেষে হযরত ওসমান বিন আফফান (সা:) নূরানী কিন্ডারগার্টেন এর ব্যবস্থাপনায় আগত মুসল্লীদের মাঝে শরবত বিতরণ করা হয়৷
নামাজে অংশ নেয়া স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন ধরে অনাবৃষ্টির কারণে মানুষ, পশুপাখিসহ সবাই খুব কষ্টে আছে। পানির অভাবে চাষাবাদ কাজে মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। এজন্য তারা বৃষ্টির আশায় নামাজ পড়েছেন।
নামাজে অংশ নেয়া বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম, মাওলানা ফজলুল করিম, মোহাম্মদ এমদাদ হোসাইন জানান, বনায়ন ধ্বংসের কারণে প্রতিবছর তাপমাত্রা বাড়ছে। এখনই সচেতন না হলে সামনের দিনে আরও বিপদে পড়তে হবে। সবুজায়ন বাড়াতে সবাইকে গাছ লাগাতে হবে।
আল উম্মাহ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মুফতি দিলদার বিন কাশেম জানান, চলমান তীব্র তাপপ্রবাহ, অনাবৃষ্টির কারণে মানুষের জনজীবন বিপন্ন হয়ে পড়েছে। অতীতে আরব দেশে যখন এমন প্রখর রোদ আর গরম ছিল তখন হযরত মুহাম্মদ (সা.) পরিত্রাণ চেয়ে সাহাবাদের নিয়ে এভাবেই বৃষ্টি এবং তাপপ্রবাহ থেকে রক্ষার জন্য উন্মুক্ত মাঠে নামাজ আদায় করতেন। তাই আমরাও রাসূল (সা.) এর সুন্নাহ্ সালাতুল ইসতিসকা( বৃষ্টির জন্য নামাজ) আদায় করে দোয়া করেছি। নামাজে ধারনার চেয়েও বেশি মানুষের সমাগম হয়েছে। আশাকরি মহান আল্লাহ পাক আমাদের ভুলত্রুটি ক্ষমা করে রহমতের বৃষ্টি দান করবেন।