ই-পেপার | বুধবার , ২৬শে জুন, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

মোহনগঞ্জে বাম্পার ফলনে খুশি কৃষক পরিবার

রিংকু রায়,মোহনগঞ্জ,নেত্রকোণা:

নেত্রকোণার মোহনগঞ্জ উপজেলার ডিঙ্গাপোতা হাওরসহ নিম্নাঞ্চলে নতুন ধান কাটা পুরোদমে শুরু হয়েছে। বোরো ধানের বাম্পার ফলনে হাসি ফুটেছে ৩৬ হাজার কৃষক পরিবারের মাঝে। কৃষকরা বলছেন,এবারই প্রত্যাশার চেয়ে বেশি ধান গোলায় তুলবেন। হাওরজুড়েই উৎসবের আমেজ। ধান কাটা,মাড়াই,সিদ্ধ দেওয়া আর শুকানোর কাজে ব্যস্ত হাওরের কৃষাণ-কৃষাণী।

ভালো ফলন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকার পাশাপাশি ধানের ন্যায্য মূল্যও পাচ্ছেন কৃষকরা। উপজেলা কৃষি বিভাগ জানায়, এ বছর উপজেলায় ১৬ হাজার ৯শ ৭০ হেক্টরের মধ্যে হাওরের নিম্নাঞ্চলে সাড়ে ৬হাজার ৫শ হেক্টর বোরো ধান আবাদ করা হয়েছে। এর মধ্যে শনিবার পর্যন্ত ২৬ শতাংশ সার্বিক ও হাওরের নিম্নাঞ্চলে ৬৮শতাংশ ধান কাটা হয়েছে। প্রধান জাত ব্রি-৮৮, ব্রি- ৮৯, ব্রি- ৯২, জনকরাজ, ইস্পাহানী- ৬ সহ উচ্চ ফলনশীল হাইব্রিড ধান।

এসব ধানের বাজারমূল্য ৯০০ টাকা থেকে ৯৬০ টাকা পর্যন্ত। হাওরপাড়ের উপজেলা মোহনগঞ্জ তেতুলিয়া মাইজপাড়া গ্রামের কৃষক শওকত আলী ধানের ফলনে ভীষন খুশি। ধানের ফলন কেমন হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এ বছর ৮০ কাঠা জমিতে ব্রি-৮৮ জাতের আবাদ করেছিলেন। সব জমির ধান কাটা, মাড়াই ও শুকানোর পর গোলায় তুলেছেন।

সব মিলিয়ে ৭শ ৫০মণ ধান পেয়েছেন। প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতি না হওয়ায় ফলন ভালো মোহনগঞ্জের ডিঙ্গাপোতা হাওরপাড়ের ৩৫ হাজার ৬শ কৃষক পরিবারে স্বস্তি ফিরে এসেছে। মোহনগঞ্জ উপজেলার গৌড়াকান্দা গ্রামের কৃষক মালেক তালুকদার বুরুজ মিয়া বলেন, এবার তিনি ব্রি- ৮৮ ও ব্রি- ৮৯ জাতের ধান লাগিয়েছিলেন। ধান পেয়েছেন ২শ মণের মতো।

 

উপজেলার খুরশিমূল গ্রামের ধান ব্যবসায়ী মোজাম্মেল মিয়া জানান, আমরা হাওর থেকে ব্রি- ৮৮ জাতের ধান ৯৬০ টাকা থেকে ৯৮০ টাকায় ক্রয় করছি। এবার ব্রি- ২৮ ও ব্রি- ২৯ জাতের ধান একেবারেই কৃষকরা আবাদ করেননি। মোহনগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুস শাকুর সাদি জানান, এবার ধান কাটার শ্রমিক পাওয়া নিয়ে কৃষকদের কোনো সমস্যায় পড়তে হচ্ছে না। হাওরের কৃষক ফসল তোলার কাজ আরও সহজ করতে কম্বাইন হারভেস্টার ব্যবহার করছেন।

উপজেলায় ১০০টি কম্বাইন হারভেস্টারে ফসল কাটা, মাড়াই ও ঝাড়ার কাজ করছে। তিনি বলেন, ‘একটি কম্বাইন হারভেস্টার দিয়ে এক ঘণ্টায় ১একর জমির ধান কাটতে পারে। প্রাকৃতিক কোনো দুর্যোগ না হলে মে মাসের মধ্যভাগে হাওরে আবাদ করা শতভাগ জমির ধান কাটা সম্ভব। প্রত্যাশার চেয়ে বেশি ধান পাবেন বলে কৃষকের মাঝে হাওর জুড়ে অন্যরকম এক উৎসব চলছে।

দিনরাত ব্যস্ত হাওরের কৃষক পরিবারের লোকজন। যেভাবে ধান কাটা হচ্ছে চলতি মাসের শেষের দিকেই ৯০শতাংশ ধান কাটা শেষ হবে বলে আশা করছে কৃষকরা।