ই-পেপার | মঙ্গলবার , ৩রা ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

দীর্ঘদিনেও হয়নি ঈদগাঁও উপজেলা ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি: নেতাকর্মীরা হতাশ

নিজস্ব প্রতিনিধি:

কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি দীর্ঘ চার বছরেও ঘোষিত হয়নি। এনিয়ে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা চরম ক্ষুব্ধ হয়ে উঠছেন। দ্রুতই কমিটি ঘোষণার জোর দাবি উঠেছে।

 

জানা যায়, নবগঠিত ঈদগাঁও উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি ৪ বছরেও ঘোষিত না হওয়ায় তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের মাঝে হতাশা বিরাজ করছে। অনেক নেতাকর্মী কমিটি ঘোষণার জন্য দিনের পর দিন আশায় আশায় অপেক্ষার পর বিদেশে পাড়ি জমিয়েছেন।

 

আরো জানা যায়, জেলা ছাত্রলীগের তৎকালীন সভাপতি ইসতিয়াক আহমদ জয় ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মোর্শেদ হোসাইন তানিমের স্বাক্ষরে ২০১৯ সালের ৮মে তৎকালীন ঈদগাঁও সাংগঠনিক উপজেলা ছাত্রলীগে আবু হেনা বিশাদকে সভাপতি ও ইরফানুল করিমকে সাধারণ সম্পাদক করে ১৩ সদস্যের একটি কমিটি অনুমোদন দেয়া হয়। উক্ত কমিটি দু’দিন পার না হতেই ফের বিলুপ্ত ঘোষণা করে দেন জেলা কমিটি। সেই থেকে নতুনভাবে উপজেলা পর্যায়ে আর কোনো কমিটি ঘোষিত হয়নি। যার কারণে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ইউনিয়নে ছাত্রলীগের রাজনীতি থেকে অনেকে ছিটকে পড়ছেন।

 

তথ্যে মতে, ঈদগাঁও উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদপ্রত্যাশীরা কক্সবাজার শহরে জেলা ছাত্রলীগের দায়িত্বশীলদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে চলছেন। কমিটির বিষয়ে অবগত করার পরেও কালক্ষেপন করে চলছেন জেলার নেতারা। কবে দেবে কমিটি সেটিও সুনির্দিষ্ট করে বলা হচ্ছেনা। যাতে উপজেলা পর্যায়ে অনেকের মাঝে অনিহা চলে আসছে। অনেক নেতাকর্মী কমিটির আশাও ছেড়ে দিচ্ছেন।

 

ছাত্রলীগের ঈদগাঁও উপজেলা কমিটি দ্রুতসময়ে অনুমোদন দিয়ে ইসলামপুর, ইসলামাবাদ, পোকখালি, জালালাবাদ ও সদর ঈদগাঁও ইউনিয়নে নতুন নেতৃত্ব সৃষ্টি, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানভিত্তিক কমিটি দিয়ে বৃহত্তর এলাকায় ছাত্রলীগকে সুসংগঠিত করার জোর দাবি জানিয়েছেন সক্রিয় নেতাকর্মীরা।

 

একাধিক কর্মীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, কমিটি ঘোষিত না হওয়ায় অনেক মেধাবী শিক্ষার্থী ছাত্র রাজনীতি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। বহু নেতাকর্মী উজ্জীবিত হওয়ার পরিবর্তে হতাশায় দিন পার করছেন।

 

আরমান উদ্দিন নামের একজন সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে লিখেছেন- ‘জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক আপনাদের প্রতি অনুরোধ, ঈদগাঁও উপজেলা ছাত্রলীগের উপর একটু দৃষ্টি রাখেন। ছাত্রলীগকে সুসংগঠিত ও শক্তিশালী করার ব্যবস্থা নিন। যার কারণে ঈদগাঁও ছাত্রলীগ অস্তিত্ব হারাচ্ছে। প্রাণের সংগঠন চোখের সামনে এভাবে ভেসে যাবে বরদাস্ত হচ্ছেনা। নতুন কমিটি করে দেন, ছাত্রলীগের ছেলেদের ভবিষ্যৎ আছে। এদের ভবিষ্যত নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

 

দীর্ঘদিনেও ঈদগাঁওতে ছাত্রলীগের কমিটি না থাকার সুবাদে আসন্ন জাতীয় সংসদ নিবার্চনকে সামনে রেখে বিরোধী দলীয় ছাত্রসংগঠন বিভিন্ন শিক্ষাঙ্গনসহ ইউনিয়ন সমুহে সংগঠনকে শক্তিশালী রূপে সুসংগঠিত করে যাচ্ছে। অন্যদিকে সরকার সমর্থিত ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগের কমিটি দীর্ঘদিনেও ঘোষণা না করায় তৃনমূল নেতাকর্মীরা ক্ষুব্ধের পাশাপাশি হতাশ হয়ে পড়ছেন। কবে হবে কমিটি- এমন প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে নেতাকর্মীদের মাঝে।

 

ঈদগাঁও উপজেলা ছাত্রলীগে পদপ্রত্যাশী ছাত্রনেতা ইরফানুল করিম বলেন- ‘চলমান সময়ে কমিটি ঘোষণা অতীব জরুরি। কেননা কমিটিবিহীন ছাত্র রাজনীতির মাঠ চাঙ্গা হচ্ছেনা। দ্রুতসময়ে কমিটি দিয়ে ছাত্রলীগকে সুসংগঠিত করার অনুরোধ জেলা নেতৃবৃন্দের প্রতি’।

পদপ্রত্যাশী সোহেল মাহমুদ রুহান বলেন,
দীর্ঘদিন ঈদগাঁও ছাত্রলীগের কমিটি না থাকার সুবাধে অপরাপর রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠনের বিভিন্ন ইউনিট ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানভিত্তিক কমিটি শক্তিশালী করে তুলছে। ছাত্রলীগের কমিটি না থাকায় অনেকে অভিমান করে যুবলীগ, আ,লীগের কমিটিতে নিজেকে স্থান করে নিয়েছেন। পাশাপাশি বহু তৃণমূলের কর্মী বিদেশে চলে গেছেন। যোগ্য ও সুশিক্ষিত ছাত্র নেতাদের হাতে দ্রুত সময়ে কমিটি দিলে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিভিন্ন ইউনিট কমিটি চাঙ্গা হবে।

 

সাবেক ছাত্রনেতা করিম সিকদার জানালেন- দীর্ঘদিন ধরে উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি না থাকায় এ ছাত্র সংগঠনের প্রতি অনীহা প্রকাশ করে অনেকে বিদেশে পাড়ি জমিয়েছেন। তিনিও দ্রুত কমিটি ঘোষণার দাবি জানান।

 

এইচ এম কাদের,সিএনএন বাংলা২৪