সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি
সিরাজগঞ্জের কাজীপুর উপজেলার যমুনার চরাঞ্চলে চাষ করা হচ্ছে শীতপ্রধান আবহাওয়ার বিদেশি ফসল স্ট্রবেরি। উচ্চ মূল্যের ফসল স্ট্রবেরি উপজেলায় প্রথম পরীক্ষামূলকভাবে চাষ করেছেন উপজেলার গান্ধাইল গ্রামের শিক্ষিত যুবক রোকনুজ্জামান রাসেল। তার দুই বিঘা জমিতে মালচিং পদ্ধতিতে চাষ করা স্ট্রবেরি গাছ ইতিমধ্যেই ফুল এবং ফলে ভরে গেছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ভালো ফলনের আশা করছেন তিনি।
জানা গেছে, বর্তমানে বাংলাদেশের যে সব এলাকায় শীত বেশি পড়ে ও বেশি দিন স্থায়ী থাকে সেসব এলাকায় বারি স্ট্রবেরি-১ নামে উচ্চফলনশীল জাতের স্ট্রবেরি চাষ করা হচ্ছে। স্ট্রবেরির পাকা ফল টকটকে লাল রঙের হয়। এ ফলটি সুগন্ধীযুক্ত, টক মিষ্টি স্বাদের। জমির পাশাপাশি টব, বাড়ির ছাদ বা বারান্দায় এ ফল চাষ করা সম্ভব। বর্তমানে আমাদের দেশের চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী, যশোর, শ্রীমঙ্গল, ময়মনসিংহ, সিরাজগঞ্জ জেলার বিভিন্ন এলাকায় স্ট্রবেরি চাষ ও বাজারজাত করা হচ্ছে।
যমুনা নদী দ্বারা বিভক্ত কাজীপুর উপজেলার কৃষিজমি পলিমাটি সমৃদ্ধ, কম খরচ ও পরিচর্যায় এখানে অধিক ফসল ফলান কৃষক। প্রধান অর্থকরী ফসল হিসেবে বিবেচিত হয় ধান এবং ভুট্টা। স্ট্রবেরি চাষে যে পরিমাণ খরচ ও পরিচর্যা প্রয়োজন হয়, সে তুলনায় অধিক লাভজনক। আর এবারই উপজেলার গান্ধাইল গ্রামের শিক্ষিত তরুণ উদ্যোক্তা রোকনুজ্জামান রাসেল তার পারিবারিক দুই বিঘা জমিতে স্ট্রবেরি চাষের উদ্যোগ নেন। মৌসুমের শুরুতে চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে স্ট্রবেরির চারা সংগ্রহ করে রোপণ করেন এবং ইন্টারনেট ও সিরাজগঞ্জের সফল একজন স্ট্রবেরি চাষির পরামর্শ অনুযায়ী সার, পানি ও পরিচর্যা করতে থাকেন। দুই মাস পর থেকে ফল আসতে শুরু করেছে, আগামী এক মাস পর ফল সংগ্রহ করা যাবে। রাসেল বলেন, দুই বিঘা জমিতে ১০ হাজার চারা রোপণ করি, চারার মূল্য, সার, পানি, পরিচর্যা ও অন্যান্য বাবদ ৪ লাখ ২০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। সর্বোচ্চ ১ হাজার ২০০ টাকা থেকে ৩০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে বাজারে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে দুই বিঘা জমিতে ২ হাজার কেজি স্ট্রবেরি উৎপাদন হবে আশা করছেন তিনি। গড়ে ৫০০ টাকা কেজি মূল্যে বিক্রি করলে ১০ লাখ টাকা আয় হবে বলে তিনি জানান। ইতিমধ্যেই গাছের ফল পাকা শুরু হয়েছে।
কাজীপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শরিফুল ইসলাম তরুণ উদ্যোক্তা রাসেলের সাফল্য কমনা করেন। পরবর্তী সময় তাকে উচ্চ মূল্যের ফসলের প্রদর্শনীর জন্য বিবেচনা করা হবে। এছাড়াও পলি নেট হাউজ প্রকল্পের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে চাহিদা দেওয়া আছে। যা আগাম স্ট্রবেরি চাষে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে।