মাসুদ রানা,পাবনা প্রতিনিধি:
বিডিআর বিদ্রোহ হত্যাকান্ডের ঘটনায় দায়ের হওয়া তিনটি মামলার দুটি নিষ্পত্তি হলেও বিস্ফোরক মামলাটি ১৫ বছরেও নিষ্পত্তি না হওয়ায় উদ্বিগ্নের মধ্যে দিন পার করছে স্বজনরা। মামলাটি দ্রুত নিষ্পত্তি করে তাদের মুক্তির দাবি জানিয়েছে পরিবার।
বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারী) দুপুরে পাবনা জেলা প্রশাসকের নিকট প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে ভুক্তভোগীদের পরিবার।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, বিডিআর হারুন অর রশিদের ভাই শফি আহমেদ, মোকারর হোসাইনের ভাই রফিকুল ইসলাম, রজব আলীর ছেলে শরিফুর রহমান।
স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০০৯ সালের ২৫ শে ফেব্রুয়ারি বিডিআর সদরদপ্তরের সংঘটিত ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে তিনটি মামলা দায়ের করা হয়।
ইতিমধ্যে আমাদের স্বজনরা বিডিআর আইনের সাজা ভোগ শেষ করেছে। ফৌজদারি আইনে হত্যা মামলা হতে কেউ খালাস পেয়েছে, আবার অনেকে হত্যা মামলায় ফৌজদারি আইনে বিভিন্ন মেয়াদের সাজা ভোগ শেষ করেছে। কিন্তু দূর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে, ১৫ বছর যাবত শুধুমাত্র বিস্ফোরক দ্রব্য মামলাটি নিষ্পত্তি না হওয়ায় এবং সাংবিধানিক অধিকার থাকা সত্ত্বেও জামিন না পাওয়া আমাদের স্বজনদের আমরা ফিরে পাচ্ছি না।
স্বরকলিপিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, দীর্ঘ ১৫ বছর যাবত আমাদের এই অসহায় পরিবার গুলোর কারো উপার্জনক্ষম পিতা, কারো স্বামী, কারো সন্তান কারাগারে থাকায় আমরা মানবতার জীবনযাপন করতেছি। দীর্ঘ সময় কারাগারে থাকায় আমাদের স্বজনরা বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু শয্যায় রয়েছে। পিলখানার সংঘটিত ঘটনায় দায়েরকৃত বিস্ফোরক মামলাটি ইতিমধ্যে ১৫ বছর অতিবাহিত হয়েছে।
হত্যা মামলাটির ২ বছর ১১ মাসে সকল আইনি প্রক্রিয়া শেষ করে রায় প্রদান করা হয়। কিন্তু বিস্ফোরক মামলাটি আজ ১৫ বছর দৃশ্যমান কোন অগ্রগতি নাই। আমরা বারবার বিস্ফোরক মামলাটি দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য আমরা নিম্ন আদালতে আবেদন করলেও দৃশ্যমান কোন অগ্রগতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে না।
বিডিআর বিদ্রোহ মামলার আসামী মোকাররম হোসেনের ভাই রফিকুল ইসলাম বলেন,মামলাটি উচ্চ আদালতে পরিচালনার জন্য আমরা আর্থিকভাবে অক্ষম বিধায় পুরোপুরিভাবে উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হতে পারছি না এবং আর্থিক অভাব অনটনের কারণে আইনজীবী নিয়োগ দিতে পারছি না। শুধুমাত্র বিস্ফোরক মামলার কারণে ১৫ বছরের অধিক সময় ধরে আমাদের স্বজনেরা কারা ভোগ করছে। সাংবিধানিক অধিকার থাকা সত্ত্বেও জামিনে মুক্তি বা মামলাটি দ্রুত নিষ্পত্তি হচ্ছে না। বিস্ফোরক মামলাটি অতি দ্রুত নিষ্পত্তির দাবি প্রধানমন্ত্রীর প্রতি।
পাবনা জেলা প্রশাসক মুহা, আসাদুজ্জামান বলেন, বিডিআর বিদ্রোহ মামলার ৩ জন আসামির স্বজনরা প্রধানমন্ত্রী বরাবর আমার দপ্তরে লিখিত স্মারকলিপি জমা দিয়েছে। আমরা ঢাকায় পাঠিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করব।