নিজস্ব প্রতিবেদক:
কলকাতার মহম্মদ আলি পার্কের কাছে সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউতে মঙ্গলবার ভোর পাঁচটায় একটি তেলের ট্যাংকার উল্টে অগ্নিকাণ্ড ঘটে। স্থানীয়দের মতে, ট্যাংকারটি তীব্র গতিতে আসছিল। তার একটি টায়ার ফেটে যায়। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ট্যাংকারটি সামনে দাঁড়ানো একটি ট্রাকে ধাক্কা মারে ও উল্টে যায়। সঙ্গে সঙ্গে সেখানে তেল ছড়িয়ে পড়ে এবং ট্যাংকারে আগুন ধরে যায়।
পুলিশ জানিয়েছে, ট্যাংকারের চালক অগ্নিদগ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান। ট্যাংকারটিতে চালক ছাড়া আর কেউ ছিলেন কিনা তা জানা যায়নি। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণও জানাতে পারেনি পুলিশ।
ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, তারা একটি পোড়া দেহ পেয়েছেন। সেটি পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে রাস্তার ধারে একটি বাড়িতে সেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে। তবে সেই বাড়িতে কেউ ছিলেন না। নিচে একটি দোকান ছিল। সেই দোকানসহ বাড়িতে আগুন ছড়িয়ে যায়। রাস্তা ও বাড়িতে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলতে থাকে। ঘন কালো ধোঁয়া আকাশে উঠতে থাকে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, সকাল সকাল তারা একটা ভয়ংকর ঘটনা দেখেছেন। বাড়িটি পরিত্যক্ত ছিল। সেখানে কেউ থাকতেন না। সেটাই বাঁচোয়া। না হলে আরও অনেক বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারত।
দুর্ঘটনার পরই আশপাশের বাড়িগুলোতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। মানুষ বাড়ির বাইরে চলে আসেন। স্থানীয় মানুষকে নিরাপদ দূরত্বে নিয়ে যাওয়া হয়।
প্রথমে দুইটি ফায়ার সার্ভিস এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। তারপর আরও আটটি ইউনিট সেখানে যায়। দুই ঘণ্টা ধরে চেষ্টা করার পর তারা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। প্রথমে পানি দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করা হয়। তারপর ফোম ব্যবহার করা হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, আগুন লাগার পর সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ বন্ধ করে দেওয়া হয়। ফায়ার সার্ভিস তাদের কাজ শেষ করার পর তা আবার খুলে দেওয়া হয়েছে।
ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, আগুন যাতে না ছড়ায়, তার জন্য তারা প্রথম থেকে চেষ্টা করে সফল হয়েছেন। এলাকাটি অত্যন্ত ঘন বসতিপূর্ণ। তাই আগুন একবার ছড়ালে তা নিয়ন্ত্রণে আনা কঠিন হতো।
কলকাতায় অবশ্য এর আগে সরকারি হাসপাতাল, কারখানা, বাজার, বস্তি, সরকারি ভবনে আগুন লাগার অনেকগুলি ঘটনা ঘটেছে। আগুন নেভানোর ব্যবস্থা কতটা আছে, মানুষের সচেতনতা কতটা আছে, সে সব নিয়ে প্রশ্নও উঠেছে। বাজারে আগুন লাগার পর পুরসভা উদ্যোগী হয়ে কিছু ব্যবস্থা নিয়েছিল। কিন্তু পরবর্তীকালে দেখা গেছে রক্ষণাবেক্ষণের অভাব সেখানে স্পষ্ট।
এক্ষেত্রে অবশ্য গাড়ি উল্টে আগুন লেগেছে। কিন্তু এই ধরনের ট্যাংকারের বা ট্রাক, বাসের টায়ার পরীক্ষা করার কোনো ব্যবস্থাও নেই বলে স্থানীয় মানুষের অভিযোগ।
আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছেন ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা। মোট ১০টি ইউনিট ঘটনাস্থলে যায়।