ই-পেপার | শনিবার , ২৯শে জুন, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

ফের অশান্ত ঘুমধুম-টেকনাফের ওপার, ভেসে আসছে মর্টারশেল ও গুলির শব্দ

নিজস্ব প্রতিবেদক:

 

মিয়ানমারের রাখাইনে দখলকৃত অঞ্চল পুনরুদ্ধার করতে বিদ্রোহীদের সঙ্গে দেশটির সেনাবাহিনীর সংঘাত চলমান রয়েছে। এক মাস আগে শুরু হওয়া এ সংঘাতে কিছুদিন আগেও ঘুমধুম ও উখিয়া-টেকনাফ সীমান্ত খুবই উত্তেজনাকর পরিস্থিতি বিরাজ করছিল। তবে মাঝখানে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত থাকলেও ফের সীমান্তের ওপারে শুরু হয়েছে গোলাগুলি। এমন ঘটনায় ঘুমধুম-টেকনাফ সীমান্তের ওপারে মিয়ানমার থেকে ভেসে আসছে মর্টারশেল ও গুলির শব্দ।

 

এ অবস্থার মধ্যে বাংলাদেশে পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলেও ভয়ে টেকনাফের জেলেরা সাগরে মাছ ধরতে যেতে পারছে না। গেলেও ভয়ের মধ্যেই দিন কাটাতে হচ্ছে সীমান্তের বাসিন্দাদের। এ অবস্থায় সীমান্তে বিজিবি ও কোস্ট গার্ডের সদস্যের পাশাপাশি পুলিশের সদস্যরা সর্তক অবস্থানে রয়েছে।

 

শুক্রবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) রাত থেকে শনিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) বিকাল পর্যন্ত ঘুমধুমের বাইশঁফাড়ি ও টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ-হোয়াইক্যং ও হ্নীলা সীমান্তের মিয়ানমারের ওপারে থেমে থেমে মর্টারশেল ও গোলাগুলির শব্দ এপার কেঁপে উঠে। থেমে থেমে এখনো গোলাগুলি অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

 

শাহপরীর দ্বীপের বাসিন্দা নেজাম উদ্দিন বলেন, শনিবার রাত থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত মিয়ানমার থেকে গোলাগুলির শব্দ এপারে শোনা গিয়েছিল। তার মধ্যেই ঘণ্টাখানেক তেমন শব্দ শোনা যায়নি। বিকালের দিকে আবারও মর্টারশেল ও গুলির শব্দে বাড়ি পর্যন্ত কেঁপে উঠেছে। ওপারে সংঘাত চললেও সেটি তাদের অভ্যন্তরের ঘটনা। কিন্তু আমরা সীমান্ত এলাকার মানুষের ভয় কাটে না।

 

ঘুমধুমের বাসিন্দা আজিজুল উল্লাহ বলেন, ওপারে চলমান রয়েছে গোলাগুলি। এর মধ্যে শনিবার রাতে ঘুমধুমের বাইশফাঁড়ি সীমান্তের ওপারে ব্যাপক গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। তবে এমন ঘটনায় পুনরায় সীমান্তের কাছের বসবাসকারী মানুষ ঘর থেকে বের হতে ও চাষাবাদে যেতে ভয় পাচ্ছেন।

 

হোয়াইক্যং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ নুর আহমদ আনোয়ারী বলেন, গত এক মাস ধরে চলা ওপারের সংঘাতে হোয়াইক্যং এলাকার বহু মানুষ নিজের চিংড়ি ঘের-চাষাবাদ ও খেতের কাজে যেতে পারেনি। তার মধ্যে বিগত সাড়ে ৬ বছর যাবৎ নাফ নদীতে মাছ ধরাও বন্ধ রয়েছে। যেসব মানুষ নাফ নদী ও চাষাবাদের ওপর নির্ভরশীল তারা সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন।

 

এখনো হোয়াইক্যং সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের রাখাইনে সংঘর্ষ চলমান রয়েছে। তাই এপারে ভেসে আসছে গোলাগুলির শব্দ। তবে সীমান্তে বিজিবির সদস্যরা সর্তক পাহারায় রয়েছে বলে জানান তিনি।

 

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আদনান চৌধুরী বলেন, স্থানীয়দের মাধ্যমে জানা যায় মিয়ানমারের ওপারের গোলাগুলি হয়। সেখান থেকে এপারে গোলাগুলির শব্দ ভেসে আসে। তবে এটি মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সমস্যা। মিয়ানমারের সংঘাতময় পরিস্থিতির কারণে বিজিবি-কোস্টগার্ড ও পুলিশের টহল জোরদার রয়েছে। সীমান্তে বসবাসরতদের সতর্ক থাকত বলা হয়েছে। তবে এমন পরিস্থিতিতে সরকারের পক্ষ থেকে আমাদেরকে যে নির্দেশনা দেবেন আমরা সেটি করে যাব।