নিজস্ব প্রতিনিধি :
‘নৌকা ছাড়া অন্য কোন মাকার্র লোককে এলাকায় ঢুকতে না দিতে পাহারা বসানোর আহ্বান জানিয়েছেন লালমনিরহাট-১ (হাতীবান্ধা-পাটগ্রাম) আসনের সংসদ সদস্য মোতাহার হোসেনের ব্যক্তিগত সহকারী ও গড্ডিমারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু বক্কর সিদ্দিক শ্যামল।
গতকাল শনিবার (২৩ ডিসেম্বর) রাতে হাতীবান্ধার গড্ডিমারী ইউনিয়নের দোয়ানি এলাকায় নিবার্চনী জনসভায় দেয়া বক্তব্যে ওই ইউনিয়নবাসীর কাছে এ আহ্বান জানান তিনি। এর আগে গত বৃহস্পতিবার রাতে শ্যামল ও তার লোকজন স্বত্রন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় অর্থ ও পরিকল্পনা বিষয়ক উপ কমিটির সদস্য আতাউর রহমান প্রধানের গণসংযোগে হামলা করে তার নিবার্চনী অফিস ও গাড়ি ভাঙচুর করে বলে অভিযোগ উঠে।
ওই ঘটনায় শুক্রবার লালমনিরহাট-১ ( হাতীবান্ধা-পাটগ্রাম) আসনের নিবার্চনী অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারম্যান এবং যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ মো. এরশাদ আলী শ্যামলকে নিবির্চনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের ব্যাখ্যা চেয়ে চিঠি দেন। শনিবার নিবার্চনী অনুসন্ধান কমিটির কাছে সশরীরে উপস্থিত হয়ে লিখিত ব্যাখ্যাও দিয়েছেন শ্যামল।
কিন্তু সেখান থেকে ফিরে আওয়ামী লীগ মনোননীত প্রার্থী মোতাহার হোসেনের নিবার্চনী জনসভায় যোগ দিয়ে নৌকা মার্কা ছাড়া অন্য কোনো মাকার্র লোককে তার গড্ডিমারী ইউনিয়নে ঢুকতে না দেয়ার আহ্বান জানান তিনি। শ্যামলের এমন বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় নিবার্চনের সুষ্ঠ পরিবেশ নিয়ে আশঙ্কা করছেন স্থানীয় সাধারণ ভোটাররা।
শনিবার রাতে নৌকা প্রতীকের ওই নিবার্চনী জনসভায় দেয়া শ্যামলের বক্তব্যের একটি ভিডিও ফুটেজ এই প্রতিবেদকের হাতে এসেছে। ওই ভিডিও বক্তব্যে শ্যামল বলছেন, ‘আমি গড্ডিমারীর মানুষকে আজকের (গতকাল শনিবার) তারিখ থেকে ৭ তারিখ পর্যন্ত প্রতিটি পাড়ায়-পাড়ায় মহল্লায়-মহল্লায় পাহাড়া বসাতে অনুরোধ করছি। জননেতা মোতাহার হোসেনের নৌকা ছাড়া অন্য কোনো মাকার্র লোক যেনো এই এলাকায় ঢুকতে না পারে।’ আবু বক্কর সিদ্দিক শ্যামলের ব্যবহৃত ফোন নম্বরে একাধিকবার কল দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
স্বতন্ত্র প্রার্থী আতাউর রহমান প্রধান বলেন, ‘দ্বাদশ সংসদ নিবার্চনকে উৎসব মূখর করতে আমরা যেখানে ভোটারদের কেন্দ্রে এসে ভোট দেয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। সেখানে শ্যামল সাহেব ভোটারদের মাঝে আতঙ্ক ছড়াচ্ছেন। উনি বর্তমান সংসদ সদস্যের পিএস (ব্যক্তিগত সহকারি) হওয়ার কারণেই কি নিবার্চনী আচরণ বিধিকে তোয়াক্কা করছেন না?’
উল্লেখ্য গত বছরের ২৯ ডিসেম্বর লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার সিন্দুর্ণা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদের উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন নৌকায় ভোট না দিলে তাদের দেশ ছাড়া করার হুমকি দিয়ে শ্যামল ব্যাপক সমালোচনায় পড়েছিলেন। এনিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবরও প্রকাশ হয়।
ওই সময় হিন্দু সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে শ্যামলের বিরুদ্ধে স্থানীয় থানায় লিখিত অভিযোগও দায়ের করা হয়েছিল বলে জানা গেছে।