চট্টগ্রাম ব্যুরো :
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, আজ নির্বাচন নিয়ে জনগণের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা তৈরি হয়েছে। নির্বাচন নিয়ে বিএনপিসহ দেশে-বিদেশে যারা ষড়যন্ত্র করেছিল তারা বেলুনের মতো টুস করে চুপসে গেছে।
এখন শক্তিশালী ভিটামিন ট্যাবলেট দিয়েও বিএনপিকে দাঁড় করানো যাচ্ছে না। ইনশাআল্লাহ ৭ জানুয়ারি ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, সারা দেশের মতো এই রাঙ্গুনিয়ায়ও হাজার হাজার, লাখ লাখ মানুষ নিয়ে আমরা ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেব।
নির্বাচন নিয়ে যারা ষড়যন্ত্র করেছিল, তারা এখন গর্তের মধ্যে ঢুকেছে এবং বিএনপির রিজভী আহমেদও গর্তের ভেতর ঢুকেছে উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, যখন ইঁদুরকে দৌড়ানো হয়, ইঁদুর তখন গর্তের মধ্যে ঢোকে। জনগণ বিএনপিকে ধাওয়া করেছে, জনগণের দৌড়ানি খেয়ে গর্তের মধ্যে ঢুকেছে। আপনারা যারা ইঁদুর ধাওয়া করেছেন তারা জানেন, ইঁদুর গর্তের ভেতর ঢুকে চোখ মেলে মেলে তাকায়। এখন বিএনপির রিজভী আহমেদ গর্তের ভেতর থেকে চোখ মেলে মেলে তাকায় আর কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) বিকেলে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-০৭ (রাঙ্গুনিয়া উপজেলা ও বোয়ালখালী আংশিক) আসনে পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ ডিঙ্গি নৌকায় কর্ণফুলী নদী পার হয়ে ইছাখালীর রাঙ্গুনিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনে থেকে সাইকেল চালিয়ে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেন।
চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়ক দিয়ে মরিয়মনগর চৌমুহনী গিয়ে পথসভার মধ্য দিয়ে কর্মসূচি শেষ করেন। এর আগে পাহাড়চূড়ায় সত্যপীরের মাজার এবং নিজের বাবা-মাসহ মুরুব্বিদের কবর জেয়ারতের মাধ্যমে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেন তিনি।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপির কর্মসূচি হচ্ছে গাড়ি ঘোড়া পোড়ানো। গাড়ি-ঘোড়া পোড়ানো কোনো রাজনৈতিক দলের কর্মসূচি হতে পারে না। যারা গাড়ি-ঘোড়া পোড়ায় তাদের আমরা বর্জন করি, তাদের জনগণও বর্জন করেছে। সুতরাং রাঙ্গুনিয়ার মাটিতেও তাদের কোনো স্থান নেই। রাঙ্গুনিয়ায় যারা ছিল তারাও গর্তের মধ্যে ঢুকেছে। আমরা কিন্তু বলিনি গর্তের মধ্যে ঢুকার জন্য, এরপরও জনরোষ থেকে উদ্ধার পাওয়ার জন্যই তারা এখন গর্তে ঢুকেছে।
তিনি বলেন, এই নির্বাচন যাতে অনুষ্ঠিত না হয়, সেজন্য অনেক ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল। বিএনপি-জামায়াত মনে করেছিল, আমরা নির্বাচন করতে পারব না। এখন তারা বুঝতে পেরেছে, সব প্রতিকূলতা উপড়ে ফেলে দেশে একটি অংশগ্রহণমূলক জনগণের ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। যেভাবে প্রতিবার ভোটকেন্দ্রে গিয়ে আপনারা ভোট দিয়েছেন এবারও দ্বিগুণ উৎসাহে মা-বোনদের সঙ্গে নিয়ে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে নৌকা মার্কায় ভোট দেওয়ার জন্য আপনাদের প্রতি বিনীত অনুরোধ জানাই।
সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৫৪ সালে সাইকেলে চড়ে নির্বাচনী প্রচারণা করেছিলেন। ১৯৫৪ সাল থেকে আমাদের দলীয় প্রতীক হচ্ছে নৌকা, আমি আজ রাঙ্গুনিয়ার দলীয় কার্যালয় থেকে সাইকেল চালিয়ে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেছি এবং আজ আমি নৌকায় চড়ে কর্ণফুলী নদী পার হয়েছি। যারা ‘বঙ্গবন্ধু’ ছবি দেখেছেন, সেখানে আপনারা দেখেছেন বঙ্গবন্ধু কীভাবে নৌকায় চড়তেন। নৌকা এবং সাইকেলে চড়ে বঙ্গবন্ধু নির্বাচনী প্রচারণা করতেন এবং নৌকায় যাতায়াত করতেন। বঙ্গবন্ধুর সেই স্মৃতিকে স্মরণ করে আজ আমি নৌকায় চড়েছি এবং সাইকেল চালিয়ে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেছি।
নির্বাচনী এলাকার জনগণের উদ্দেশে তথ্যমন্ত্রী হাছান বলেন, আমি প্রতিবারই আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছি, কিন্তু নির্বাচিত হবার পর আমি সব মত-পথের মানুষের সংসদ সদস্য হিসেবে কাজ করার চেষ্টা করেছি, কে কোন দলের সেটি কখনো দেখিনি। আমার কাছে যিনিই গেছেন, আমি কাউকে নিরাশ করিনি। ১৫ বছর ধরে আমার দুয়ার সব মানুষের জন্য খোলা ছিল। এখন আমি আপনাদের দুয়ারে হাজির হয়েছি, আপনাদের কাছে আমার বিনীত ফরিয়াদ, আপনারা দয়া করে আমার জন্য আপনাদের দুয়ারটি খুলে দিবেন।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সারাদেশে অভাবনীয় উন্নয়ন হয়েছে। দেশের অনেক উপজেলার চেয়ে বেশি উন্নয়ন আমাদের রাঙ্গুনিয়া উপজেলা ও বোয়ালখালী অংশে হয়েছে। জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাকে মনোনয়ন না দিলে আপনারা আমাকে ভোট দিতে পারতেন না। আপনারা আমাকে নির্বাচিত করেছেন, তিনি আমাকে মন্ত্রীর দায়িত্ব দিয়েছেন। সেই দায়িত্বে থাকার কারণে আমার পক্ষে এখানে উন্নয়ন করা সম্ভব হয়েছে, অন্যতায় এতো উন্নয়ন করা সম্ভব হতো না। আপনাদের সেই ভালোবাসার প্রতিদান আমি দেওয়ার চেষ্টা করেছি।
এ সময় নির্বাচন পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান ও উপজেলা চেয়ারম্যান স্বজন কুমার তালুকদার, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ নেতা আবুল কাশেম চিশতি, মো. শাহজাহান সিকদার, কামরুল ইসলাম চৌধুরী, নজরুল ইসলাম তালুকদার, মুহাম্মদ আলী শাহ, ইফতেখার হোসেন বাবুল, আকতার হোসেন খান, নির্বাচনী পরিচালনা কমিটির সচিব ইঞ্জিনিয়ার শামসুল আলম তালুকদার, গিয়াস উদ্দিন খান স্বপন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।