শেখ আলাউদ্দিন, চট্টগ্রাম :
সরকার পতনের একদফা দাবি ও ঘোষিত নির্বাচনী তফসিল বাতিলের দাবিতে বিএনপির ডাকা ৬ষ্ট দফা অবরোধে বুধবার (২২ নভেম্বর) চট্টগ্রাম নগরী ও জেলার বিভিন্ন স্থানে শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভ মিছিল ও সড়ক অবরোধ করেছে বিএনপির নেতাকর্মীরা। অবরোধকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রামে বিএনপির আরো ১০ জন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
এদিকে অবরোধের সমর্থনে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির উদ্যোগে দুপুরে নগরীর চাঁন্দগাও কাপ্তাই রাস্তার মাথা এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল, সড়ক অবরোধ ও সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর ও দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহবায়ক আবু সুফিয়ান মিছিলের নেতৃত্ব দেন।
এসময় আবুল হাশেম বক্কর বলেন, ‘বিএনপির একদফা আন্দোলনের মধ্যে আরেকটি একতরফা পাতানো ভুয়া নির্বাচনের অপচেষ্টা করছে সরকার। মেরুদণ্ডহীন নির্বাচন কমিশন আওয়ামী নির্বাচনি তফশিল বাস্তবায়ন করতে জোরেশোরে মাঠে নেমেছে। ভোটাধিকারের দাবিতে আন্দোলনরতদের ওপর হায়েনার মতো ঝাঁপিয়ে পড়ছে পুলিশ ও আওয়ামীলীগের সন্ত্রাসীরা। দিশাহীন, উন্মাদ হয়ে গণগ্রেফতার চালাচ্ছে। আর বিএনপির বিরুদ্ধে নাশকতার অপবাদ দিয়ে দেশে বিদেশে প্রচার করছে। কিন্তু এবার সন্ত্রাসের অপবাদ দিয়ে আর বিদেশে মার্কেটিং করতে পারছে না। কারণ সারা দুনিয়া টের পেয়েছে বিএনপির নামে সন্ত্রাসের অপবাদ মূলত একতরফা নির্বাচনের কৌশল। তাই সরকার দলীয় সন্ত্রাসীরাই আত্মঘাতীমূলক নাশকতা চালাচ্ছে।’
আবু সুফিয়ান বলেন, ‘বিএনপিসহ বিরোধী মত দমনে আওয়ামীলীগ এখন রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করছে। চট্টগ্রামে বিএনপির বলিষ্ঠ নেতাকর্মীদের বেছে বেছে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। বিএনপির সকল প্রবীণ নেতাদের জেলে আটকে রেখেছে। অনেকের মিথ্যা মামলায় সাজাও দিয়েছে। এর প্রধান কারণ হচ্ছে এই সকল বিরোধী দলের নেতারা জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে লিপ্ত।’ এতে উপস্থিত ছিলেন মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক ইয়াছিন চৌধুরী লিটন, আবদুল মান্নান, আহবায়ক কমিটির সদস্য মাহবুব আলম, আনোয়ার হোসেন লিপু, চাঁন্দগাও থানা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন ভূইয়া সহ নেতৃবৃন্দ।
এছাড়া অবরোধের সমর্থনে চট্টগ্রাম মহানগর যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ শাহেদ ও সি. সহ সভাপতি ইকবাল হোসেনের নেতৃত্বে মুরাদপুরে মহানগর যুবদলের নেতাকর্মীরা পিকেটিং ও সড়ক অবরোধ করে মিছিল বের করা হয়। তাছাড়া মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এইচ এম রাশেদ খান ও সাধারণ সম্পাদক বেলায়েত হোসেন বুলুর নেতৃত্বে প্রবর্তক মোড়, শেভরন এলাকায় মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের বিক্ষোভ মিছিল, বন্দর থানা বিএনপির সভাপতি হাজী মো. হানিফ সওদাগর ও সাধারণ সম্পাদক জাহিদ হাসানের নেতৃত্বে আগ্রাবাদ গোসাইলডাঙ্গা সংযোগ সড়কে বিক্ষোভ মিছিল, ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কে চট্টগ্রাম মহানগর যুবদলের সহ সভাপতি ফজলুল হক সুমনের নেতৃত্বে সড়ক অবরোধ, দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক রবিউল হোসেন রবির নেতৃত্বে আনোয়ারা পিএবি সড়কে দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের বিক্ষোভ মিছিল, টাইগার পাস আমবাগান সড়কে খুলশী থানা ছাত্রদলের আহবায়ক ওমর ফারুকের নেতৃত্বে থানা ছাত্রদলের মিছিল, সীতাকুণ্ড উপজেলা ছাত্রদলের আহবায়ক কাজ্বী সেলিম উদ্দীনের নেতৃত্বে ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কের সোনাইছড়ির মদনহাট ও কাশেম জুট মিল এলাকায় ছাত্রদলের পিকেটিং ও মিছিল, চান্দগাঁও থানা যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক খোরশেদ আলম রুবেলের নেতৃত্বে সিএন্ডবি এলাকায় যুবদল সেচ্ছাসেবক ও ছাত্রদলের মিছিল, পুরাতন চাঁন্দগাও থানা এলাকায় চান্দগাঁও ওয়ার্ড যুবদলের মিছিল, মহানগর ছাত্রদলের সাবেক প্রশিক্ষণ সম্পাদক জিয়া উদ্দিনের নেতৃত্বে প্রবর্তক মোড়ে মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।
দলটির পক্ষ থেকে বলা হয়, সোমবার সন্ধ্যা থেকে বুধবার পর্যন্ত আরো ১০ জন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এরমধ্যে দক্ষিণ কাট্টলী ওয়ার্ড বিএনপির সি. যুগ্ম আহ্বায়ক জাফর আহমেদকে কাজিরদিঘী এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে পাহাড়তলী থানা পুলিশ। তাছাড়া মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ সাধারণ সম্পাদক রাসেল খানকে রাতে সদরঘাট থানা, পশ্চিম ষোলশহর ওয়ার্ড যুবদলের সদস্য সানি আহমেদকে পাঁচলাইশ থানা, বাকলিয়া থানা যুবদল নেতা জাকির হোসেনকে বাকলিয়া থানা পুলিশ, চালিতাতলী বাজার থেকে রাউজান উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব শাহজাহান শাহিলকে র্যাব, পাহাড়তলী থানা স্বোচ্ছাসেক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরকে পাহাড়তলী থানা, পটিয়া সরকারি কলেজ ছাত্রদলের সাবেক আহ্বায়ক রিদওয়ান আরিফুল ইসলামকে পটিয়া থানা, পটিয়া বরলিয়া ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক আবদুল মান্নান তালুকদার ও মো. আসিফকে কোতোয়ালি থানা পুলিশ গ্রেপ্তার করে নাশকতা মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠিয়ে দিয়েছে।