ই-পেপার | সোমবার , ১লা জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

১০ বছরের অহনা ছুঁয়ে এল অন্নপূর্ণা

চট্টগ্রাম ব্যুরো :

চিটাগং সানশাইন গ্রামার স্কুল অ্যান্ড কলেজের পঞ্চম শ্রেণির এই শিক্ষার্থী সম্প্রতি বাবার হাত ধরে জয় করে এসেছে অন্নপূর্ণা পর্বতশৃঙ্গ অভিযান। বিশ্বের দশম উচ্চতম শৃঙ্গ এই অন্নপূর্ণা।অহনা’র বাবা অনিকেত চৌধুরী পেশায় স্থপতি। মা মেহজাবিন ইবানা ইন্টেরিয়র ডিজাইনার। নগরের নাছিরাবাদ আবাসিক এলাকায় থাকেন তারা। তাদের ভ্রমণের ব্যবস্থাপনায় ছিলেন রোপফোর আউটডোর অ্যাডুকেশনের প্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মদ মহিউদ্দিন। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে অন্নপূর্ণা পর্বতশৃঙ্গের উচ্চতা ৮০৯১ মিটার। পুরো এলাকা ৭,৬২৯ বর্গকিলোমিটার। এটি নেপালের প্রথম ও সবচেয়ে বড় সংরক্ষিত অঞ্চল। এই অঞ্চলটি ট্রেকিং এর জন্য বিশ্বখ্যাত। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ট্রেকাররা এখানে ট্রেকিং এর উদ্দেশ্যে আসেন।

 

অনিকেত চৌধুরী বলেন, ৩০ অক্টোবর সকাল ১০টায় ঢাকা থেকে ১১ সদস্যের একটি দল বিমানে যাত্রা শুরু করে বেলা দুইটার দিকে নেপাল পৌঁছান। ত্রিভুবন বিমানবন্দর থেকে রাত আটটার দিকে পোখারার উদ্দেশে রওনা দেন। ৩১ অক্টোবর ভোর পাঁচটায় পোখারা পৌঁছে সকাল ৯টার দিকে জিপে চড়ে ‘ঝিনু’ এলাকায় যান। সময় লাগে পাঁচ ঘণ্টা। সেখান থেকেই শুরু হয় অন্নপূর্ণা ট্র্যাকিং। ঝিনু থেকে বিকেল চারটার দিকে ২ হাজার ১৭০ মিটার দুর্গম পথ অতিক্রম করে ৩১ অক্টোবর সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে চোমরং পৌঁছে যায় দলটি। রাতে তাপমাত্রা নেমে যায় ৫-৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। সেখানে একটি লজে রাত কাটিয়ে পরদিন ১ নভেম্বর সকালে ডোবানের উদ্দেশে যাত্রা শুরু। প্রায় ১০ কিলোমিটার উঁচু-নিচু পাহাড়ি পথ মাড়িয়ে আট ঘণ্টায় তারা পৌঁছে যান ডোবানে। তখন সন্ধ্যা।

 

 

২ নভেম্বর সকাল আটটার দিকে হিমালয়া গ্রাম হয়ে দেউরালি ট্র্যাকিং শুরু। সময় লেগেছে পাঁচ ঘণ্টা। ৩ নভেম্বর ভোরে দেউরালি থেকে মচ্ছপুছারে বেজ ক্যাম্প হয়ে সবাই পৌঁছে যান অন্নপূর্ণা বেজ ক্যাম্পে, যার উচ্চতা ৪ হাজার ১৩০ মিটার। সময় লেগেছে সাত ঘণ্টা। এসময়ে অনুভূতি প্রকাশ করে অহনা জানায়, বরফে ঢাকা সাদা পাহাড় ছোঁয়ার ইচ্ছে ছিল। সেটা পূর্ণ হয়েছে। অন্নপূর্ণা পর্বতশৃঙ্গে ওঠার সময় তাপমাত্রা ছিল প্রায় ছয় ডিগ্রি সেলসিয়াস। প্রচণ্ড ঠাণ্ডার মধ্যে গায়ে পাঁচ-ছয়টা গরম কাপড় পড়ে, কাঁধে চার কেজি ওজনের ব্যাগ নিয়ে কখনও খাড়া পাহাড় আবার কখনও পাথরের নিচু পথ ধরে হেঁটেছি। বরফের মাঝখানে চলেছি, ঝরনার গান শুনেছি। ৪ নভেম্বর অন্নপূর্ণা ছুঁয়ে ফিরে এসেছি। অহনা’র মা মেহজাবিন ইবানা বলেন, অহনা ট্র্যাকিংয়ে আগ্রহী। আমরা তাকে নিয়ে দেশের অনেক জায়গায় ঘুরেছি। সফলভাবেই তারা অন্নপূর্ণা ঘুরে এসেছে। সেখানে উড়িয়েছে বাংলাদেশের পতাকা।