ই-পেপার | বৃহস্পতিবার , ২১শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

পটিয়া মাদ্রাসার নতুন পরিচালনা পর্ষদ অবৈধ দাবি, মাওলানা ওবায়দুল্লাহ হামজা

 

বিশেষ প্রতিবেদক :

দেশের বৃহত্তম কাউমী মাদরাসা পটিয়া আল জামেয়া ইসলামিয়ার মহাপরিচালক মাওলানা ওবায়দুল্লাহ হামজার কাছ থেকে বিরোধীপক্ষ থেকে জোরপূর্বক আদায় করা পদত্যাগপত্র গৃহীত হয়েছে, এ বিবৃতির বৈধতা নেই দাবি করেছেন মাওলানা ওবায়দুল্লাহ হামজা ।

 

তিনি বলেন, মাদরাসার বৈধ মজলিশে শূরার প্রধান হচ্ছেন আল্লামা সুলতান যওক নদভী। তিনি এবং শূরার অধিকাংশ সদস্যদের অনুপস্থিতিতে তারা বিধি বহির্ভূত এ কমিটি করেছেন। আগামী ২ নভেম্বর মজলিশে শূরার বৈঠক রয়েছে। তারা তা জেনে শুনে উক্ত বৈঠককে পাস কাটিয়ে মাদ্রাসায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির জন্য শনিবার রাতে একটি অনভিপ্রেত ঘটনার সৃষ্টি করে আমার পরিবারকে জিম্মি করে অস্ত্রের মুখে আমার কাছ থেকে একটি পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর আদায় করে। আমি এ জন্য আইনী ব্যবস্থা গ্রহন করেছি। এরই মধ্যে তারা তা জানতে পেরে তাদের পছন্দের লোকজন দিয়ে তড়িঘড়ি করে মাদ্রাসা পরিচালনায় ৫ সদস্য বিশিষ্ট পর্ষদ গঠন করে রোববার রাতে মজলিসে শূরার কিছু সদস্য নিয়ে আকস্মিক বৈঠক করে পরিচালনা পর্ষদ গঠনের সিদ্ধান্ত নেয় বলে প্রেস বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। ওই বৈঠকে মহাপরিচালকের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানানো হলেও শূরার প্রধান আল্লামা সুলতান যওক নদভীসহ অধিকাংশ শূরা সদস্য এ বৈঠকে অনুপস্থিত ছিলেন। বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আল্লামা আবু তাহের নদভিকে পরিষদের আহবায়ক করা হয়। পর্ষদের অন্য সদস্যরা হলেন- আল্লামা আমিনুল হক, হাফেজ মুফতি আহমদুল্লাহ, মুফতি শামসুদ্দীন জিয়া ও মুফতি একরাম হোসাইন ওয়াদুদী।

তাৎক্ষনিক কমিটি গঠন ও কমিটির নামে চাপিয়ে দেওয়া সিদ্ধান্তকে অবৈধ দাবি করে এর প্রতিবাদ জানিয়েছেন মাওলানা ওবায়দুল্লাহ হামজা। নিজ নামের প্যাডে স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে তিনি দুটি বিষয়ে নিজের অবস্থান তুলে ধরে বলেন, ‘সবার কাছে পরিষ্কার হওয়া জরুরি’ শিরোনামে ওই বার্তায় তিনি বলেন, কওমি মাদ্রাসার সংবিধান অনুযায়ী কোনো মুহতামিম ইস্তফা দেওয়ার অভিভাবক হলো শূরা পরিষদ। বহিরাগত সন্ত্রাসীদের মুখোশ পরা সশস্ত্র হত্যার হুমকির মুখে যদি সিগনেচার নেওয়া হয় সেটি শরিয়তের দৃষ্টিতে অবৈধ, দেশীয় আইনেও অপরাধ। মূলত আমাকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে পুরো পরিবারকে হত্যা করার হুমকি দিয়ে জোরপূর্বক সিগনেচার নেওয়া হয়েছে, যার বিরুদ্ধে আমি আইনানুগ ব্যবস্থা ইতোমধ্যেই গ্রহণ করেছি। এবং শেষ পর্যন্ত তা চালিয়ে যাব।

 

দ্বিতীয় বিষয়ে তিনি বলেন, পটিয়া মাদ্রাসা ইত্তেহাদের অন্তর্ভুক্ত একটি প্রতিষ্ঠান। নিয়মতান্ত্রিক শূরা পরিষদ আছে। ইত্তেহাদের যিনি চেয়ারম্যান তিনি মাদ্রাসার শুরার চেয়ারম্যান। আগামী ২ নভেম্বর শূরার নির্ধারিত বৈঠক। সেই শূরা বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার আগে সশস্ত্র বহিরাগত গুন্ডাদের দিয়ে মাদ্রাসায় উশৃঙ্খল পরিবেশ তৈরি করে নিয়মতান্ত্রিক বৈধ পরিচালককে মাদ্রাসা থেকে অপহরণ করে বের করে দিয়ে যে স্টাইলে শূরার নামে নাটক করা হচ্ছে তা ইত্তেহাদের সংবিধান অনুসারে অবৈধ, মাদ্রাসার নিজস্ব সংবিধানে অবৈধ এবং দেশীয় আইনে অপরাধ। শূরা আহ্বান করার একমাত্র এখতিয়ার রয়েছে মাদ্রাসার পরিচালক এবং ইত্তেহাদের চেয়ারম্যানের। আর কারোই শূরা আহ্বান বৈধ নয় দাবি করে তিনি বলেন, আমি পটিয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। এর তদন্ত চলাকালে নাটক সাজিয়ে সত্যকে মিথ্যা দিয়ে ঢাকা যাবে না। তিনি আইনের মাধ্যমে তার অধিকার ফিরে পাওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

সিএনএনবাংলা২৪