ই-পেপার | বৃহস্পতিবার , ২১শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

টেকনাফ-সেন্টমার্টিন পথে নৌযান চলাচল শুরু

টেকনাফ, কক্সবাজার

 

সাড়ে তিন শতাধিক পর্যটক নিয়ে সেন্ট মার্টিনের উদ্দেশে রওনা হয়েছে এমভি বার আউলিয়া নামের জাহাজটি। সোমবার সকালে কক্সবাজারের টেকনাফের দমদমিয়া ঘাটে ।সমুদ্রবন্দরগুলো থেকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কসংকেত প্রত্যাহারের পর কক্সবাজারের টেকনাফ-সেন্ট মার্টিন নৌপথে সব ধরনের নৌযান চলাচল শুরু হয়েছে। আজ সোমবার সকালে ‘এমভি বার আউলিয়া’ নামে একটি জাহাজ টেকনাফের দমদমিয়া জেটিঘাট থেকে সাড়ে তিন শতাধিক পর্যটক নিয়ে সেন্ট মার্টিনের উদ্দেশে রওনা হয়। দ্বীপে বেড়াতে গিয়ে দুই দিন ধরে আটকে পড়া পর্যটকেরা এই জাহাজেই ফিরবেন।

 

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ আদনান চৌধুরী প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, আবহাওয়া অধিদপ্তর গতকাল রোববার বিকেলের দিকে সতর্কসংকেত প্রত্যাহার করেছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় আজ সকাল থেকে টেকনাফ-সেন্ট মার্টিন নৌপথে পর্যটকবাহী জাহাজসহ সব ধরনের নৌযান চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়। এরপর এমভি বার আউলিয়া নামে একটি জাহাজ দমদমিয়া জেটিঘাট থেকে সকাল পৌনে ১০টার দিকে সাড়ে তিন শতাধিক পর্যটক নিয়ে সেন্ট মার্টিনের উদ্দেশে রওনা হয়েছে।

 

এর আগে গত শুক্রবার বিকেল থেকে আবহাওয়ার ৩ নম্বর সতর্কসংকেত থাকায় টেকনাফ-সেন্ট মার্টিন নৌপথে নৌযান চলাচল বন্ধ করে দেয় উপজেলা প্রশাসন। এতে সেন্ট মার্টিনে বেড়াতে যাওয়া তিন শতাধিক পর্যটক আটকে পড়েছিলেন। সেন্ট মার্টিন যাওয়ার জন্য টেকনাফের দমদমিয়া জেটিঘাটে আসছেন পর্যটকেরা। সোমবার সকালে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) টেকনাফের ট্রাফিক সুপারভাইজার মো. জহির উদ্দিন ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, আজ সকাল থেকে জাহাজ ও ট্রলার চলাচল আবার শুরু হয়েছে। সেন্ট মার্টিনে আটকে পড়া পর্যটকদের ফিরিয়ে আনার জন্য জাহাজটিকে সেন্ট মার্টিনে পাঠানো হয়েছে। তিনি আরও বলেন, সতর্কসংকেতের কারণে টেকনাফে আটকে পড়া সেন্ট মার্টিনের দেড় শতাধিক বাসিন্দা জাহাজ ও ট্রলারে করে দ্বীপের ফিরে যাচ্ছেন।

 

সকালে দমদমিয়া জেটিঘাটে সরেজমিনে দেখা যায়, দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে সেন্ট মার্টিন ভ্রমণের জন্য আসা পর্যটকেরা ঘাটের টিকিট কাউন্টারের সামনে ভিড় করেছেন। অনেকে টিকিট সংগ্রহ করে জাহাজে নির্দিষ্ট আসনে বসেন। ট্যুরিস্ট পুলিশ, নৌ পুলিশ, কোস্টগার্ড, বিআইডব্লিউটিএ ও জাহাজ কর্তৃপক্ষের লোকজনকে তৎপর থাকতে দেখা যায়। সকাল পৌনে ১০টার দিকে জাহাজটি সাইরেন বাজিয়ে সেন্ট মার্টিনের উদ্দেশে রওনা হয়। পর্যটকদের নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে বলে জানান ট্যুরিস্ট পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা উপপরিদর্শক সাইফুল ইসলাম খান।

 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বেড়াতে আসা পাঁচ শিক্ষার্থী বলেন, তাঁরা কক্সবাজার বেড়াতে এসেছিলেন। এর মধ্যে আবহাওয়ার সতর্কসংকেত প্রত্যাহারের বিষয়টি জানতে পেরে সেন্ট মার্টিন যাওয়ার জন্য টেকনাফে আসেন। অনেক কষ্ট করে টিকিট সংগ্রহ করলেন। তবে টিকিটের দাম অনেক চড়া। সরকারিভাবে টিকিটের মূল্য নির্ধারণ না করায় কর্তৃপক্ষ ইচ্ছেমতো দাম নিচ্ছে। গত বছর জনপ্রতি ৬০০ টাকায় তাঁরা সেন্ট মার্টিন ঘুরে গেছেন। অথচ এখন সেই টিকিটের দাম রাখা হচ্ছে ১ হাজার ৪০০ টাকা করে।পরিবারের সাত সদস্য নিয়ে রংপুর থেকে বেড়াতে এসেছেন মুজিবুর রহমান। তিনি বলেন, কক্সবাজার এসে জানতে পারেন, আজ থেকে পুনরায় সেন্ট মার্টিন যাওয়া যাবে। তাই দেরি না করে টিকিট সংগ্রহ করে জাহাজে উঠছেন।

 

পর্যটকবাহী জাহাজ এমভি বার আউলিয়ার টেকনাফের ব্যবস্থাপক মাহবুব আলম প্রথম আলোকে বলেন, জাহাজটির ধারণক্ষমতা ৮৫০ জনের। ৩ নম্বর সতর্কসংকেতের মধ্যেও এটি চলাচল করার মতো পরিস্থিতি রয়েছে। গত বৃহস্পতি ও শুক্রবার সেন্ট মার্টিনে বেড়াতে গিয়ে কিছুসংখ্যক পর্যটক আটকে পড়েন। আজ বেলা তিনটার দিকে ফেরার সময় তাঁদের নিয়ে আসা হবে। এদিকে নতুন করে আজও সাড়ে তিন শতাধিক পর্যটক সেন্ট মার্টিনে বেড়াতে গেছেন।