ই-পেপার | শুক্রবার , ২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

দেশকে এগিয়ে নিতে কর্মসংস্থান বৃদ্ধিতে আরও গুরুত্ব দেওয়া উচিত : ড. আতিউর

নিউজ ডেস্ক :

দেশকে এগিয়ে নিতে কর্মসংস্থান বৃদ্ধিতে আরও গুরুত্ব দেওয়া উচিত বলে মনে করছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান। গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর বাংলামোটরে গবেষণা সংস্থা ‘উন্নয়ন সমন্বয়’ আয়োজিত ‘দ্য বাংলাদেশ ইকনোমি: ইমার্জিং স্ট্রাকচারাল ইস্যুজ অ্যান্ড কারেক্টিং পলিসি মেজার’ শীর্ষক সেমিনারে সভাপতির বক্তব্যে এই মন্তব্য করেন তিনি।

ড. আতিউর রহমান বলেন, ‘বাংলাদেশের অর্থনীতির যে সংকট তা মূলত কাঠামোগত। এই সংকট দূর করা গেলে হতাশার চেয়ে সম্ভাবনাই বেশি দেখতে পাব।’তিনি বলেন, ‘আমাদের অগ্রাধিকার হওয়া উচিত কর্মসংস্থান কিভাবে বাড়ানো যায়। কেননা কর্মসংস্থান বাড়ানো গেলে দারিদ্র কমবে। দেশ এগিয়ে যাবে।’

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান বলেছেন, ‘অর্থনৈতিক প্রয়োজনে বেশ কিছু নীতির পরিবর্তন এসেছে এবং আরও কিছু নীতি পরিবর্তনের প্রয়োজন আছে।’ তিনি বলেন, ‘মূল্যস্ফীতি কমানোর অন্যতম পথ চাহিদা কমানো। চাহিদা না কমালে মূল্যস্ফীতি বাড়তেই থাকবে। যেহেতু আমরা আমদানি-নির্ভর দেশ, তাই অলরেডি আমদানি সীমিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন নিউ ইয়র্ক স্টেট ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. বিরুপাক্ষ পাল।

উপস্থাপিত প্রবন্ধে ড. পাল বলেন, ‘বর্তমান অর্থনৈতিক সংকট থেকে উত্তরণের জন্য রাজনৈতিক সদিচ্ছা প্রয়োজন। গরিবের ওপর ট্যাক্স চাপিয়ে বড়দের ছাড় দেওয়া উচিত নয়। প্রতিবছর আমরা শুনি ট্যাক্স নেটওয়ার্ক বৃদ্ধি করা হবে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে দেশের জিডিপি রাজস্বের হার কমছে। তাই রাজস্ব বাড়াতে প্রকৃত গ্রাহকদের ট্যাক্সের আওতায় আনতে হবে।’

বিরুপাক্ষ পাল আরও বলেন, ‘মাত্র দুটি ভুল সিদ্ধান্তের জন্য মাশুল দিচ্ছে বাংলাদেশ। প্রথমটি ডলারের দাম ধরে রাখা এবং দ্বিতীয়টি এক অংকে ঋণের সুদ হারের সীমাবদ্ধতা। দুটি জিনিসই বাজারের ওপর ছেড়ে দিতে হয়। ডলার এবং ব্যাংকের ঋণের সুদহার নির্ধারণ করবে বাজার। ডলারের দাম ধরে রাখার কারণেই দেশে রেমিট্যান্স প্রবণতা কমে গেছে। বেড়েছে হুন্ডি ব্যবসা। যার প্রভাব সরাসরি গিয়ে পড়েছে দেশের বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভে। অর্থনীতির স্বার্থেই ব্যাংকগুলোকে স্বাধীনভাবে কাজ করতে দিতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘সবকিছু বাজারের ওপর ছেড়ে দিলে প্রথমে ঊর্ধ্বমুখী হবে ঠিকই, কিন্তু একটা সময় পর আবার নিচে নেমে আসবে। উদাহরণস্বরূপ শ্রীলঙ্কার দিকে লক্ষ্য করা যেতে পারে। কারণ, শ্রীলঙ্কায় মূল্যস্ফীতি ৬৮ শতাংশ থেকে এখন আবার নিচে নেমে এসেছে। এটি একটি বলের মতো। ওপরে চললে একটা সময় আবার নিচে নেমে আসবে।’ ‘উন্নয়ন সমন্বয়’-এর হেড অব প্রোগ্রাম শাহিনুল আলমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে অংশ নেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের সদস্য অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান।
সূত্র: সমকাল

এই বিভাগের সর্বাধিক পঠিত রিপোর্ট