কক্সবাজার অফিস :
সাগরপথে মালয়েশিয়া যাত্রা ও সাগরে মাছ শিকারে গিয়ে মিয়ানমারে আটক হয়ে বিভিন্ন মেয়াদে কারাভোগ শেষে ২৯ বাংলাদেশিকে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি)র কাছে হস্তান্তর করেছে মিয়ানমার।
মংডুতে মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) সকালে বিজিবি ও বিজিপির মধ্যে পতাকা বৈঠক শেষে এই ২৯ বাংলাদেশি নাগরিককে হস্তান্তর করা হয়।
বিজিবি জানায়, বিভিন্ন সময়ে নাফ নদী ও বঙ্গোপসাগরে সাগরে মাছ শিকারে গিয়ে এবং সাগর পথে মালয়েশিয়া যাত্রাকালে মিয়ানমারের আইশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা এসব বাংলাদেশিকে আটক করে।
বিজিবি আরও জানায়, মংডুতে মঙ্গলবার সকাল ১১টায় বিজিবির টেকনাফ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মহিউদ্দিন আহমদের নেতৃত্বে ১৫ সদস্যের বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল ও মিয়ানমারের মংডুর ১ নম্বর বর্ডার গার্ড পুলিশ ব্রাঞ্চের কমান্ডিং অফিসার লে. কর্নেল ইয়ে ওয়াই শো’র নেতৃত্বে ১১ সদস্যের প্রতিনিধিদলের মধ্যে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে সকালে বৈঠকে অংশ নিতে টেকনাফ বিজিবির বিওপির জেটি দিয়ে রওনা হয়েছিল বিজিবির প্রতিনিধি দল।
ফেরত বাংলাদেশিদের মধ্যে টেকনাফের ৭ জন, উখিয়ার ৩ জন, মহেশখালীর ১৩ জন, রাঙ্গামাটির ৩জন ও বান্দরবানের ৩ জন রয়েছেন। এরা বিভিন্ন মেয়াদে কারাভোগ শেষেও মিয়ানমার কারাগারে দিন পার করছিলেন।
বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল দুপুরে ওই ২৯ বাংলাদেশিকে নিয়ে টেকনাফ পৌরসভার চৌধুরীপাড়া সংলগ্ন বাংলাদেশ-মিয়ানমার ট্রানজিট জেটিঘাটে পৌঁছায়। এসময় টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের মেডিকেল টিম তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে।
পরে দুপুরে জেটিঘাটে বিজিবি ২ টেকনাফ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মহিউদ্দীন আহমেদ এক সংবাদ সম্মেলন করে বিভিন্ন তথ্যাদি জানান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আদনান চৌধুরী, টেকনাফ-২ বিজিবি উপঅধিনায়ক মেজর মাসুদ রানা, পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন) আব্দুর রাজ্জাক।
সংবাদ সম্মেলনে বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মহিউদ্দীন আহমদ জানান, পররাষ্ট্র ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমতি পাওয়ার পর দুই দেশের বৈঠকের মাধ্যমে ওই ২৯ জন বাংলাদেশিকে ফেরত আনা হয়। তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মহিউদ্দীন আহমেদ আরও জানান, ‘আমরা মাদক সাধারণ চোখে দেখিনা। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে মাদকের জিরো টলারেন্স নীতিতে সীমান্তে বিজিবি রাতদিন কাজ করে যাচ্ছে। বৈঠকে সীমান্ত মাদক, অবৈধ অনুপ্রবেশ রোধসহ চোরাচালান বন্ধে দু’দেশের মধ্য আলোচনা হয়েছে। পাশাপাশি সেদেশে সাজা শেষে আরো দেড়শ’ বাংলাদেশিকে ফেরত আনার প্রক্রিয়া চলছে। এছাড়া বাংলাদেশ-মিয়ানমার জলসীমানা অতিক্রম বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে। যদি জলসীমানা থেকে কোনো বাংলাদেশিকে গ্রেফতার করা হয়, তাৎক্ষণিকভাবে আমাদের অবগত করে সমাধান করার জন্যও বলা হয়েছে।’