ই-পেপার | বৃহস্পতিবার , ২৭শে জুন, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

সাগরে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা, সীমাহীন দুশ্চিন্তায় জেলেরা

নিজস্ব প্রতিবেদক : প্রজননকালে সাগরে ইলিশসহ অন্যান্য প্রজাতির মাছ ধরার ওপর ৬৫ দিনের সরকারি নিষেধাজ্ঞা শুরু হয়েছে গেল শুক্রবার মধ্যরাতে। কক্সবাজার-চট্টগ্রামসহ দেশের উপকূলীয় এলাকার ১৪টি জেলা ও ৬৫টি উপজেলা এই নিষেধাজ্ঞার আওতাভুক্ত। মৎস্য অধিদফতরের দেয়া তথ্য অনুসারে, এসব এলাকার সাড়ে ৩ লাখের বেশি নিবন্ধিত জেলে ছাড়াও ৬৮ হাজার মেকানাইজড বোট ও ২৬০টি ইন্ডাস্ট্রিয়াল বোটের ওপর এই নিষেধাজ্ঞা প্রযোজ্য হবে।

এর ফলে জীবিকার একমাত্র মাধ্যম মাছ ধরা বন্ধ থাকায় পরিবার-পরিজনের ভরণপোষণ নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় পড়েছেন এক লাখের বেশি জেলে। জেলেরা বলছেন, বন্ধের এই দিনগুলোতে জেলেদের জনপ্রতি সরকারি যে সহায়তা দেয়া হয়, তা চাহিদার তুলনায় একেবারেই অপ্রতুল। সরকারি সহায়তার বরাদ্দ বাড়ানোর দাবি তাদের। এ নিয়ে প্রশাসনের সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মাছ ধরা বন্ধের নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করার লক্ষে জেলেদের সহায়তাসহ নানা কর্মসূচি সরকারের রয়েছে।

প্রতি বছরই তা বাড়ছে। জানা যায়, মাছ ধরা বন্ধের নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হওয়ায় ইতোমধ্যেই সাগর থেকে উপকূলে ফিরেছে প্রায় সবগুলো ট্রলার। সাগর থেকে ফিরে আসা সারি সারি নোঙর করা এসব ট্রলারের দেখা মিলেছে কক্সবাজার শহরের তীরবর্তী বাঁকখালী নদীর বিভিন্ন নৌঘাটে। তীরে ফিরে আসা জেলেদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, কিন্তু দীর্ঘ দুই মাসের বেশি সময় সাগরে মাছ ধরার উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করায় স্বজনদের নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় ভুগছেন তারা। বলছেন, নিত্যপণ্যের দুর্মূল্যের বাজারে জেলেদের সরকারি সহায়তার বরাদ্দ অপ্রতুল। প্রকৃত অনেক জেলে নিবন্ধনের আওতায় না এলেও ভুয়া অনেকে তালিকাভুক্ত হয়েছেন।

কক্সবাজার মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের মৎস্য ব্যবসায়ী ঐক্য সমবায় সমিতির উপদেষ্টা ও কক্সবাজার সদর উপজেলা মৎস্যজীবী সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি জয়নাল আবেদীন বলেন, মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করতে জেলেদের সহায়তার বরাদ্দ বাড়ানো জরুরি। প্রকৃত জেলেদের নিবন্ধনের আওতায় এনে তালিকাভুক্তদের স্বচ্ছতার সাথে সহায়তার ব্যবস্থা নিতে হবে।

কক্সবাজার সদরের সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা তারাপদ চৌহান বলেন, শুক্রবার মধ্যরাত থেকে সাগর থেকে মাছ আহরণ, পরিবহন ও বিপণনসহ সব ধরনের কর্মকাণ্ড নিষেধাজ্ঞার আওতায় রয়েছে। আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে।

জেলেদের সহায়তার বিষয়টি সরকারের চলমান কর্মতৎপরতারই অংশ। শুক্রবার মধ্যরাত থেকে আগামী ২৩ জুলাই মধ্যরাত পর্যন্ত সাগরে মাছ ধরার ওপর এই নিষেধাজ্ঞা অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি। জেলা মৎস্য অফিসের তথ্য মতে, জেলায় মাছ ধরার নিবন্ধিত ট্রলার রয়েছে ৫ হাজার ১৫৩টি এবং নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা ৬৪ হাজার ৩৯৪ জন। এছাড়া অনিবন্ধিত ট্রলার রয়েছে অন্তত ৩ হাজার এবং অনিবন্ধিত জেলের সংখ্যা প্রায় ৫০ হাজার।