নুর মোহাম্মদ:
মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন আরকান স্যালভেশন আর্মি-আরসার শীর্ষ কমান্ডারসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১৫। এ সময় তাদের কাছ থেকে ৪৩ কেজি ৩১০ গ্রাম বিস্ফোরক দ্রব্য, একটি বিদেশী পিস্তল, দুইটি ওয়ানশুটারগান ও গুলি উদ্ধার করা হয়।
গ্রেপ্তাকৃতরা হলেন, উখিয়ার বালুখালী ক্যাম্পের আরসার শীর্ষ কমান্ডার রহিমুল্লাহ প্রকাশ ওরফে মুছা ও আরসা সদস্য শামছুল আলম ওরফে মাস্টার শামসু এবং স্থানীয় বাসিন্দা মো. শফি ও মো. সিরাজ। বুধবার (২৭ সেপ্টম্বর)বেলা ১১টায় র্যাব-১৫ কক্সবাজার ব্যাটালিয়ন কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এসব তথ্য জানান।
গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার পালংখালী ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডস্থ তেলখোলা-বরইতলী এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে মোহাম্মদ জাফর আলম‘র পুত্র মোহাম্মদ শফিক (২৮) ও মৃত আব্দুস সালাম‘র পুত্র মোহাম্মদ সিরাজ (৩০) কে গ্রেপ্তার করে। এসময় তাদের কাছ থেকে ৬ কেজি ৫৩০ গ্রাম বিস্ফোরক দ্রব্য উদ্ধার করা হয়।
পরবর্তীতে আটককৃতদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী পালংখালী ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডস্থ একই এলাকার গহীন পাহাড়ে অভিযান পরিচালনা করে সন্ত্রাসী সংগঠন ‘আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি’ (আরসা) এর শীর্ষ সন্ত্রাসী ও বালুখালী রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্প-১৮ এর অন্যতম কমান্ডার ও আরসার জিম্মাদার হাফেজ আহমদ‘র পুত্র রহিমুল্লাহ প্রকাশ মুছা (২৭) ও ক্যাম্প-৪ এর আরসার অন্যতম কমান্ডার মৃত বদি আলম‘র পুত্র শামছুল আলম প্রকাশ মাস্টার শামসু (২৯) (মায়ানমার) গ্রেফতার করে। এসময় তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা ৩৬ কেজি ৭৮০ গ্রামসহ ৪৩ কেজি ৩১০ গ্রাম বিস্ফোরক দ্রব্য, ১টি বিদেশী পিস্তল,২টি ওয়ানশুটারগান, ৪টি পিস্তলের বুলেট, ৩টি ওয়ানশুটারগানের বুলেট এবং ২টি বাটন মোবাইল ফোন।
জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা উদ্ধারকৃত বিস্ফোরক সংক্রান্ত এবং সন্ত্রাসী সংগঠন ‘আরসা’র সাথে সংশ্লিষ্ট থেকে খুন, অপহরণসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কার্যক্রমে জড়িত থাকার বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রদান করে। মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টম্বর) উখিয়া উপজেলার তেলখোলা-বরইতলী গহীন পাহাড়ি এলাকায় অভিযান চালিয়ে ওই চারজনকে গ্রেপ্তারের করেছেন বলে জানিয়েছেন র্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
উখিয়া ও টেকনাফের আশ্রয়শিবিরে সাম্প্রতিক সময়ে খুন, অপহরণ, ডাকাতি,চাঁদাবাজি,মাদক চোরাচালানসহ নানা অপরাধ বেড়েছে। এসব অপরাধে আরসাসহ কয়েকটি সন্ত্রাসীগ্রুপ জড়িত। গ্রেপ্তার আরসার কমান্ডার রহিমুল্লাহর নেতৃত্বে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বড় ধরনের নাশকতার পরিকল্পনা ছিল বলে তারা স্বীকার করেছে। খন্দকার আল মঈন আরও বলেন, সম্প্রতি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কয়েকটি বড় অগ্নিকান্ডের ঘটনায় আরসা বিষ্ফোরকদ্রব্য ব্যবহার করেছে।
গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানিয়েছে র্যাব-১৫ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাজ্জাদ হোসেন।