আবদুল হাকিম রানা, পটিয়া :
চট্টগ্রামের পটিয়ায় বীরকন্যা প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার এর ৯২তম আত্মাহুতি দিবস পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষে ধলঘাটস্থ প্রীতিলতা ট্রাষ্টের আবক্ষ মূর্তিতে প্রীতিলতা ট্রাষ্টসহ বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে পুস্পস্তবক দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়। দুপুরে প্রীতিলতা ট্রাষ্ট মিলনায়তনে আয়োজিত স্মরণ সভায় সভাপতিত্ব করেন বীরকন্যা প্রীতিলতা ট্রাস্টের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি পংকজ চক্রবর্তী। প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক, দৈনিক ভোরের কাগজ এর সম্পাদক, বীরকন্যা প্রীতিলতা ট্রাস্টের উপদেষ্টা শ্যামল দত্ত।
বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন চট্রগ্রাম সিটি করপোরেশনের ২১নং জামালখান ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শৈবাল দাশ সুমন, ইপসা’র নির্বাহী পরিচালক আরিফুর রহমান, চট্টগ্রাম মহানগর যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আবু মো: মহিউদ্দীন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বিপ্লবী পূর্ণেন্দু অর্ধেন্দু সুখেন্দু প্রীতিলতা বাস্তুভিটা স্মৃতি সংরক্ষণ পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রবোধ রায় চন্দন।
এতে বক্তব্য রাখেন উত্তরাধিকার এর সাবেক সাধারণ সম্পাদক শৈবাল বড়ুয়া, পটিয়া প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আবদুল হাকিম রানা, চট্টগ্রাম মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের যুগ্ম সম্পাদক সজল দত্ত, ট্রাস্টি সদস্য বিশ্বজিত দেব বাবু, কৃষ্ণা চক্রবর্তী, মো: আলী, আজীবন সদস্য সাংবাদিক আবদুর রাজ্জাক, সাংবাদিক এস এম এ কে জাহাঙ্গীর , রূপক চক্রবর্তী, গৌতম চৌধুরী, মো: জয়নাল আবেদীন, ইউপি সদস্য রনধীর চক্রবর্তী, দীপ্তি চক্রবর্তী, বরুণ পালিত, সুকান্ত নাথ, শিক্ষক চন্দন দাশ, মঞ্জু রায়, শিপ্রা দে, রূপশ্রী চক্রবর্তী, শিমু নাথ, দূর্জয় চক্রবর্তী, মো; সাকিব, অমিত চক্রবর্তী প্রমূখ।
এতে প্রধান অতিথি জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত বলেন, বীরকন্যা প্রীতিলতা বাঙ্গালীর মুক্তি চেতনার উৎস। তিনি একজন অজপাড়া গাঁয়ের মেয়ে হয়েও দেশমাতৃকাকে শত্রুমুক্ত তথা স্বাধীন স্বদেশ গড়ার প্রত্যয়ে অকাতরে নিজের জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। তার মাঝে অগাধ ও নিখুঁত দেশপ্রেম ছিল বলেই এটা সম্ভব হয়েছে। বলতে গেলে তারই ধারাবাহিকতায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রাম ও আত্মত্যাগের বিনিময়ে এদেশকে স্বাধীন করতে পেরেছিলেন। আজ তার কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নের জন্য আপোসহীন ভূমিকা রাখলেও বর্তমানে ভোগবাদী সমাজ ব্যবস্থার কারণে জনগন এর সুফল পাচ্ছে না।
তিনি আরো বলেন, এদেশ এখন পরিবর্তনমূখী হয়ে পড়েছে। সত্যিকার অর্থে অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক ও ধর্ম নিরপেক্ষ চেতনা নিয়ে এ দেশ স্বাধীন হলেও এখন আর সেই চেতনাবোধ নেই। এ পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে দেশকে সঠিক পথে এগিয়ে নিতে প্রীতিলতাসহ মুক্তি আন্দোলনের সকল শহীদের চেতনাকে ধারণ করতে হবে।
তিনি আজকের প্রেক্ষাপটে নতুন প্রজন্মের মধ্যে দেশপ্রেম ও সাংস্কৃতিক চেতনাবোধ জাগিয়ে তোলার আহবান জানিয়ে বলেন, আগামী দিনের শিশুদের মধ্যেই সৃষ্টি হবে একেকটি বীরকন্যা প্রীতিলতা। তাদেরকে সঠিকভাবে পরিচালিত করতে প্রীতিলতা ট্রাষ্টের সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডকে আরো বেশী বেগবান করতে হবে। তিনি প্রীতিলতা ট্রাষ্ট ভবন নির্মাণ করায় সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে ২য় পর্যায়ের প্রকল্প গ্রহণ করে প্রীতিলতার আদর্শ লালনের জন্য সকলকে একযোগে কাজ করার পরামর্শ দেন।
এছাড়াও তিনি বীরকন্যা প্রীতিলতার আত্মজীবনী পাঠ্যপুস্তকে অর্ন্তভূক্ত করা এবং তাঁর জন্ম ও আত্মাহুতি দিবস শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পালনের উদ্যোগ গ্রহন করার জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানান। এতে সকাল থেকে প্রীতিলতার আবক্ষ মূর্তিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন বীরকন্যা প্রীতিলতা ট্রাস্ট, বীরকন্যা প্রীতিলতা শিশু কানন, বীরকন্যা প্রীতিলতা সাংস্কৃতিক জোট, বীরকন্যা প্রীতিলতা বিপ্লবী দল, বীরকন্যা প্রীতিলতা সেলাই ও কম্পিউটার বিভাগ, বীরকন্যা প্রীতিলতা নৃত্য ও চারুকারু বিভাগ, বীরকন্যা প্রীতিলতা আউটসোর্সিং, দেশপ্রেমি নাগরিক স্মৃতি পরিষদ পটিয়া, পটিয়া স্পোর্টস ক্লাব। অনুষ্ঠানে সংগীত ও নৃত্য পরিবেশন করেন প্রীতিলতা সাংস্কৃতিক জোটের শিল্পীরা।