আবদুল হাকিম রানা, পটিয়া :
ব্রিটিশবিরোধী সশস্ত্র সংগ্রামের প্রথম নারী শহীদ, বীরকন্যা প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদারের ৯১তম আত্মাহুতি দিবস ২৪ সেপ্টেম্বর, রবিবার। ১৯৩২ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর রাতে পাহাড়তলী ইউরোপিয়ান ক্লাবে সফল আক্রমণের এক পর্যায়ে তিনি গুলিবিদ্ধ হন। এ অবস্থায় ধরা পড়ার আগেই সঙ্গে রাখা পটাসিয়াম সায়ানাইড বিষ খেয়ে আত্মাহুতি দেন তিনি। মাস্টারদা সূর্যসেনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার ১৯১১ সালের ৫ মে পটিয়া উপজেলার ধলঘাট গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ব্রিটিশদের হাত থেকে দেশকে স্বাধীন করার জন্য নিজেকে নিবেদনের মাধ্যমে অসংখ্য বিপ্লবীকে প্রশিক্ষিত, অনুপ্রাণিত ও উজ্জীবিত করে গেছেন বীরকন্যা প্রীতিলতা।
এই বিপ্লবী নারী অমর হয়ে আছেন ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের বীরত্বের প্রতীক হয়ে। তার শিক্ষাজীবন চট্টগ্রাম, ঢাকা ও কলকাতায়। সে সময়েই রাজনীতিতে যুক্ত হন তিনি। একপর্যায়ে হয়ে উঠেন মাস্টারদা সূর্য সেনের বিপ্লবী আন্দোলনের সহযোদ্ধা। প্রীতিলতা ১৯২৮ সালে ম্যাট্রিক পাশ করেন। স্বাধীনতার পটভূমিতে রচনা করেন নাটক। যা মঞ্চায়ন করেন নারীদের নিয়েই।
এক পর্যায়ে সূর্যসেনের বিপ্লবী বাহিনীর সদস্য হন প্রীতিলতা। ১৯২৪ সালে বেঙ্গল অর্ডিন্যান্সের জরুরি আইনে বিপ্লবীদের বিনাবিচারে আটক শুরু হলে সংগঠনে তার গুরুত্ব বাড়তে থাকে। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কৃতিত্বের সাথে বি এ পাশ করেন তিনি। পরে চট্টগ্রাম শহরের নন্দন কানন গার্লস স্কুলের প্রধান শিক্ষয়িত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৩২ সালে চট্টগ্রামের পাহাড়তলীতে ইউরোপিয়ান ক্লাব দখলে ১৫ জনের একটা বিপ্লবী দলের নেতৃত্ব দেন প্রীতিলতা। বর্ণবাদী এই ক্লাবে আক্রমনকালে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। গুলিবিদ্ধ হন বীরকন্যা প্রীতিলতা। সহযোদ্ধা বিপ্লবীদের আত্মগোপনে যাবার নির্দেশ দেন। নিজে আত্মহুতি দেন পটাশিয়াম সায়ানাইড নিয়ে। বীর নারী প্রীতিলতা আজও মুক্তিকামী মানুষের অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে আছেন।
আজ তার ৯১ তম আত্মাহুতি দিবস উপলক্ষে পটিয়ায় বীরকন্যা প্রীতিলতা ট্রাষ্টের উদ্যোগে নানা অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়েছে। এতে সকালে প্রীতিলতার আবক্ষ মূর্তিতে শ্রদ্ধা, আলোচনা সভা ও গুনীজন সম্মাননা প্রদান।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত। এছাড়া ও পটিয়া প্রেস ক্লাব ও গৌরব সংসদসহ বিভিন্ন সংগঠন ও দিবসটি যথাযথভাবে পালন করবে বলে সংগঠন গুলোরপক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।