নিজস্ব প্রতিনিধি, পেকুয়া:
কক্সবাজারের পেকুয়ায় টানা ভারীবর্ষণ ও বেড়িবাঁধ ভেঙে মাতামুহুরী নদীর উজান থেকে নেমে আসা
পাহাড়ি ঢলের পানিতে প্লাবিত হওয়ার দুইদিন পর আস্তে আস্তে পানি নামতে শুরু করছে। এখনো পানিবন্দী আছে বহু পরিবার।
৯ আগষ্ট বিকালে উপজেলা চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পূর্বিতা চাকমা, সদর ইউপির চেয়ারম্যান বাহাদুর শাহ লোকজন নিয়ে বন্যার পানি নামতে পেকুয়ার মৌলভীপাড়া ও বিলহাসুরা এলাকায় দুইটি বাঁধ কেটে দিয়ে পানি সরানোর ব্যবস্থা নেন। ফলে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বিকাল সাড়ে ৫ টা নাগাত সড়কসহ ঘরবাড়ী থেকে ৩- ৪ ফুট পানি কমে গেছে। এছাড়াও এ বি সি আঞ্চলিক মহাসড়কে গাড়ি চলাচল স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে।
এদিকে বিভিন্ন এলাকা ও আশ্রয়কেন্দ্র ঘুরে দেখা যায়, আশ্রয় কেন্দ্রগুলো থেকে আশ্রয় নেওয়া লোকজন তাদের গৃহপালিত পশু নিয়ে বাড়ি ফিরছে। আবার অনেকই ঘর পানিবন্দী থাকায় আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করছেন। সকাল থেকে গুটি গুটি বৃষ্টি রয়েছে।
এদিকে উপজেলা চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম ও উপজেলা প্রশাসন বন্যা কবলিত লোকজন ও বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নেওয়া লোকজনকে শুকনো খাবার ও ত্রাণ সামগ্রী এবং বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করেছেন। উপজেলা প্রশাসনের পাশাপাশি বন্যা দুর্গতদের মাঝে ভয়েস অব হিউম্যানিটির ফাউন্ডার অব প্রেসিডেন্ট এম এ হাসানের অর্থায়নে এম এ সাজ্জাদের সার্বিক তত্বাবধানে শুকনো খাবার ও ত্রাণ বিতরণ করা হয়।
উপজেলা প্রশাসন জানিয়েছে, বন্যাদুর্গত লোকজনের জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ পেয়ে তা ইউপি চেয়ারম্যানকে ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও শুকনো খাবার ও সুপেয় পানি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে পানি কমে গেলেও বিদ্যুৎ পরিস্থিতি অস্বাভাবিক রয়েছে। বিদ্যুৎ অফিস জানিয়েছে এখনো অনেক গ্রামে পানি নামেনি।
এ বিষয়ে পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পূর্বিতা চাকমা জানান, বন্যার পানি কমিয়ে মানুষের স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আনতে দুইটি বাঁধ কেটে দিয়ে পানি কমানো হয়েছে। সরকারী বরাদ্দ যা পেয়েছি তা ইউপি চেয়ারম্যানদেরকে বরাদ্দ দিয়েছি।
উল্লেখ, গত ৭ আগষ্ট (সোমবার) ভোর সাড়ে ৫ টায় পেকুয়া উপজেলার সদর ইউনিয়নের পূর্ব মেহেরনামার বাঘগুজারা রাবার ড্যাম সংলগ্ন বেড়িবাঁধের দেড় চেইন পর্যন্ত ভেঙে গিয়ে পেকুয়া সদর ইউনিয়ন, শিলখালী, বারবাকিয়া ও টৈটং, উজানটিয়া ইউনিয়নের সব গ্রামে পানি ঢুকতে শুরু করে। বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে বীজতলা, চিংড়ি ঘের, সড়ক ও বিভিন্ন ঘর বাড়ি এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।বন্যাকবলিত লোকজন নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছে।