নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর
মোবাইল ফোনে জিনের বাদশা পরিচয়ে কয়েক লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে মনসুর আলী ওরফে টেক্কা (৪৫) নামে এক প্রতারককে গ্রেপ্তার হয়েছে। মঙ্গলবার (৪ জুলাই) দুপুরে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে র্যাব-১৩ রংপুরের সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) ও ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মাহমুদ বশির আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
এর আগে সোমবার (৩ জুলাই) রাতে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার মনসুর আলী ওরফে টেক্কা গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার সাপগাছি হাতিয়াদহ গ্রামের এনতাজ আলীর ছেলে।
কথিত জিনের বাদশা পরিচয় দেওয়া এই প্রতারকের বিরুদ্ধে গভীর রাতে ফোন দিয়ে ভয়ভীতি দেখানোসহ স্বর্ণমুদ্রা, গুপ্তধন দেওয়ার প্রলোভন এবং ফেরেস্তাদের মিষ্টি খাওয়ানোর কথা বলে বিভিন্নভাবে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আসামি মনসুর আলী ওরফে টেক্কা নিজেকে জিনের বাদশা পরিচয়ে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে গভীর রাতে ফোন করে ভয়ভীতি এবং স্বর্ণমুদ্রা ও গুপ্তধন দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে বিভিন্ন জনের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছিলেন। এরই ধারাবাহিকতায় এক ভিকটিমকে গভীর রাতে ফোন দিয়ে স্বর্ণমুদ্রা ও গুপ্তধন দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে বিভিন্ন মাজারে জায়নামাজ, কোরআন শরীফ দান এবং ৩ হাজার ২১ জন ফেরেস্তাকে মিষ্টি খাওয়ানোর কথা বলে ৭৫ হাজার ৫২৫ টাকা বিকাশের মাধ্যমে গ্রহণ করেন। এছাড়াও কথিত এই জিনের বাদশা বিভিন্ন সময় ভিকটিমকে ফোন করে প্রচুর ধন সম্পদের মালিক হওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে বিকাশের মাধ্যমে ২ লাখ ২৬ হাজার ৭৮৮ টাকাসহ কানের দুল, হাতের বালা ও গলার চেইন (মোট ৪.৫ ভরি স্বর্ণ) সুকৌশলে হাতিয়ে নেন।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, কথিত জিনের বাদশার প্রতারণার বিষয়টি ভিকটিম বুঝতে পারলে নিজে বাদী হয়ে চলতি বছরের ১৫ এপ্রিল প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে নওগাঁর মহাদেবপুর থানায় একটি মামলা করেন। এরপর থেকে আসামিরা বিভিন্নস্থানে আত্মগোপন করে। বিষয়টি নিয়ে র্যাব-১৩ রংপুর ছায়া তদন্ত শুরু করে।
এরই ধারাবাহিকতায় র্যাব-১৩ ব্যাটালিয়ন সদর রংপুর বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত পর্যালোচনা করে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গতকাল সোমবার (৩ জুলাই) রাত পৌনে ৮টার দিকে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার কাটাখালী বাজার এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে আসামি মনসুর আলী ওরফে টেক্কাকে গ্রেপ্তার করে।
র্যাব-১৩ এর রংপুরের সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) মাহমুদ বশির আহমেদ জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামি প্রতারণার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। পরবর্তীতে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণে আসামিকে নওগাঁ জেলার মাহাদেবপুর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ধরনের ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে র্যাবের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
এইচ এম কাদের,সিএনএন বাংলা২৪: