বাঁশখালি প্রতিনিধি :
চট্টগ্রামের বাঁশখালি পৌরসভায় রাতের অন্ধকারে জোরপূর্বক সরকারি খাস জায়গায় দখল করে দোকান নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। বাঁশখালির প্রধান সড়ক সংলগ্ন জলদি মিয়ার বাজার চৌধুরী মার্কেটের সামনেই পৌর কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই এসব দোকান নির্মাণ করছেন হাবিব উল্লাহ ওয়াকফ এস্টেট এর যুগ্ম মোতওয়াল্লী দাবিদার শেখ মুঈনদ্দিন চৌধুরী।
স্থানীয় ও চৌধুরী মার্কেটের ব্যবসায়ীরা জানান, জলদি মিয়ার বাজার চৌধুরী নিউ মার্কেটের সামনে খাস খতিয়ানের জায়গা দখল করে রাতের অন্ধকারে দোকান ঘর নির্মাণ করা হচ্ছে। তারা জানান, মিয়ার বাজারের ঐতিহ্যবাহী হাবিব উল্লাহ ওয়াকফ এস্টেট জামে মসজিদের জায়গায় মার্কেট নির্মাণ করা হচ্ছে। মার্কেটের সামনের খাস খতিয়ানভুক্ত গাড়ির পার্কিংয়ের জায়গায় রাতের আঁধারে বেশ কয়েকটি দোকান নির্মাণ করছেন মুঈনুদ্দিন চৌধুরী।
মিয়ার বাজার পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক আতিকুল আলম বলেন, খাস জায়গাটিতে গতবছরও বিল্ডিং নির্মাণের চেষ্টা করা হয়েছিলো। আমরা বাধা দিয়েছিলাম, কিন্তু গায়ের জোরে এসব দোকান নির্মাণ করা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে বাঁশখালী পৌরসভার প্যানেল মেয়র-১ রোজিয়া সোলতানা রোজি ও একই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. ইসহাক বলেন, জায়গাটি সরকারি খাস খতিয়ানভুক্ত। খাস খতিয়ানভুক্ত জায়গায় পৌর কর্তৃপক্ষের অনুমতিবিহীন রাতের অন্ধকারে মার্কেট নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। উক্ত জায়গার উপর হাইকোর্টে মামলা চলমান আছে। মামলা চলাকালীন সময়ে আদালতকে অমান্য করে রাতের অন্ধকারে মার্কেট নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন মুইনুদ্দিন চৌধুরী। আমরা এ বিষয়ে পৌর মেয়র এবং স্থানীয় প্রশাসনকে জানিয়েছি।’
এ বিষয়ে হাবিব উল্লাহ ওয়াকফ এস্টেট এর যুগ্ম মোতাওয়াল্লী দাবিদার অভিযুক্ত শেখ মুঈনুদ্দিন চৌধুরীর সাথে বেশ কয়েকবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তার অপর ভাই হাবিব উল্লাহ ওয়াকফ এস্টেটের ১নম্বর যুগ্ম মোতওয়াল্লী, বাঁশখালী পৌরসভার সাবেক মেয়র আলহাজ্ব শেখ ফখরুদ্দিন চৌধুরী বলেন, হাবিব উল্লাহ ওয়াকফ এস্টেট এর আমি ১ নম্বর মোতওয়াল্লী। অথচ সে উক্ত ওয়াকফ এস্টেটের অনুমতি না নিয়ে গায়ের জোরে কিছু সন্ত্রাসীদের মাধ্যমে রাতের অন্ধকারে মার্কেটের সামনে থাকা পার্কিংয়ের জায়গায় দোকান নির্মাণ করছে। সে শুধু এটা নয়, হাবিব উল্লাহ ওয়াকফ এস্টেট এর পরিচালনাধীন প্রায় ৩-৪ শত বছরের ঐতিহ্যবাহী মিয়ার বাজার জামে মসজিদ ও চৌধুরী মার্কেটের কোটি টাকা লুটপাট করে খেয়েছে। কোন আয়-ব্যয় এর হিসাব নাই। নিজের একক স্বেচ্ছাসারীতায় যা মন চায় তা করে যাচ্ছে। অন্যদিকে ওয়াকফ এস্টেটের পক্ষ থেকে সুপ্রিমকোর্টে মামলা চলমান রয়েছে। অথচ সে আদালতকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে একের পর এক হাবিব উল্লাহ ওয়াকফ এস্টেটের সমস্ত জায়গা এবং মার্কেটের সবকিছু লুটপাট করে খাচ্ছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) খন্দকার মাহমুদুল হাসান জানান, খাস খতিয়ান ভুক্ত জায়গায় দোকান নির্মাণের বিষয়ে আমাকে কেউ অবহিত করেনি। খোঁজ নিয়ে দেখতেছি। তদন্ত পূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সাইদুজ্জামান চৌধুরী জানান, সরকারি কোনো নিয়মনীতির বাইরে কোনো কাজ আইনত দন্ডনীয় অপরাধ। উপজেলা ভূমি কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। কেউ যদি জোরপূর্বক সরকারি জায়গায় দোকান নির্মাণ করে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নুর মোহাম্মদ,সিএনএনবাংলা২৪