চট্টগ্রাম অফিস:
চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) ও বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে চট্টগ্রামে শুরু হয়েছে ‘এক টাকায় ঈদ বাজার’। নগরের সদরঘাট রোডের আরএসএল টার্ফ প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও আয়োজন করা হয়েছে দুস্থদের নিয়ে এই ঈদ বাজার।
শুক্রবার (৫ এপ্রিল) সকাল ১১টায় সিএমপি কমিশনার কৃষ্ণপদ রায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এ ঈদবাজারের উদ্বোধন করেন।আয়োজনের মধ্যে আছে দুস্থ মানুষের জন্য মাত্র এক টাকায় ১৫০০-২০০০ টাকার শপিং করার সুযোগ।
এক টাকার বিনিময়ে গ্রাহককে ২০টি টোকেন দেওয়া হয় যার প্রতিটি টোকেনের মুল্য ধরা হয়েছে ১ টাকা।
এক টাকার এই বাজারে নগরের বিভিন্ন এলাকার প্রায় ২০০০ দুস্থ মানুষ অংশ নেওয়ার সুযোগ পাচ্ছে। ১ টাকা দিয়ে পাওয়া ২০টি টোকেনের প্রতীকী মূল্যে চাল, ডাল, তেল, লবণ, আটা, নারকেল, চিনি, গুড়, মাছ, মুরগি, সবজি, শাড়ি, লুঙ্গি, পাঞ্চাবী কিংবা বাচ্চাদের জামাকাপড় কেনার সুযোগ দেওয়া হয়। সব মিলিয়ে প্রতিটি পরিবার সাধারণ বাজার মূল্যে প্রায় দেড় হাজার টাকা থেকে ব্দুই হাজার টাকা সমমূল্যের পণ্য পাওয়া যাচ্ছে।
বিদ্যানন্দের পক্ষ থেকে জানানো হয়, দুস্থদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে নগরের বিভিন্ন বস্তি এলাকায় সার্ভে করে সুবিধাবঞ্চিত পরিবারগুলোকে টোকেন প্রদান করা হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, ১ টাকা থেকে ৫ টাকার মধ্যে শাড়ি, লুঙ্গি, পাঞ্জাবি, ফ্রক, শার্ট, প্যান্ট সহ ঈদের সকল নতুন কাপড় পাওয়া যাচ্ছে! অন্যদিকে ১-৫ টাকার মধ্যে চাল, ডাল, চিনি, তেল, সুজি, সেমাই সহ বাহারি সব খাদ্যপণ্য পাওয়া যাচ্ছে।
বাজারে এক লিটার সয়াবিন তেলের দাম যখন ১৭০ টাকা সেখানে গরিবের এই সুপারশপে মাত্র ৩ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। ২৫০ টাকার মাছ এখানে মিলেছে ৪ টাকায়। এক ডজন ডিম ১ টাকায়, ১ কেজি চাল মিলেছে মাত্র ১ টাকায়। একটি শাড়ি ৫ টাকা,পাঞ্জাবি ৩ টাকা, ছোটদের পোশাক মাত্র ২ টাকায় বিক্রি করেছে!
ফিরিঙ্গিবাজার থেকে আসা তৃতীয় লিঙ্গের শিউলি বেগম জানান, ১ টাকার বাজারে এসে খুব ভালো লাগছে। এত কম দাম জিনিস পাওয়ার কথা চিন্তা করতে পারি নাই। এই বাজারের ব্যবস্থা করায় সত্যি খুব খুশি হয়েছি। কেনাকাটা করে মন ভরে খেতে পারবো। এবারের ঈদ খুব ভাল কাটবে।
বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের স্বেচ্ছাসেবক মো. মুবারক বলেন, চট্রগ্রাম শহরের তিন শতাধিক প্রান্তিক পরিবার মাত্র ১ টাকায় যে পণ্যগুলো কিনেছেন তার বর্তমান বাজার মূল্য প্রায় ১৫০০ থেকে ২০০০ টাকা। সুবিধাবঞ্চিত মানুষের পণ্য বাছাই করে নিজের ক্রয় করার স্বাধীনতা তৈরি করতে এ ধরনের আয়োজন করা হয়েছে। আর তারা যেন কোনোভাবেই মনে না করেন যে এটি কোনও দান, এজন্য নামমাত্র মূল্য নেওয়া হয়েছে।
সিএমপি কমিশনার কৃষ্ণপদ রায় বলেন, ঈদ উপলক্ষে দুস্থ মানুষের পাশে দাঁড়ানো বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের এটি একটি প্রশংসনীয় মানবিক কাজ। বিভিন্ন দুর্যোগে তারা মানুষের পাশে দাঁড়ান। চট্টগ্রাম নগরীর সুবিধাবঞ্চিত ও দরিদ্র মানুষদের জন্য এ আয়োজন সত্যিই প্রশংসনীয়। তাঁদের এই কার্যক্রম সারাদেশব্যাপী সফলভাবে সম্পন্ন হোক এই কামনা করি।
বিদ্যানন্দের বোর্ড মেম্বার মো. জামাল উদ্দিনের সভাপতিত্বে এতে আরও উপস্থিত ছিলেন সিএমপির ডিসি (হেড কোয়ার্টারস) আব্দুল ওয়ারিস, ডিসি (দক্ষিণ) মো. মুস্তাফিজুর রহমান সহ সিএমপির সিনিয়র অফিসার ও বিভিন্ন গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।