মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, ময়মনসিংহ :
ময়মনসিংহ-৫ (মুক্তাগাছা) আসনের মহাজোট মনোনীত প্রার্থী জাতীয় পার্টির সালাহউদ্দিন আহমেদ মুক্তি। পোস্টার-লিফলেটে লেখা ‘আওয়ামী লীগ সমর্থিত’ বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন প্রার্থী ও ভোটারদের মধ্যে চলছে নানা সমালোচনা।
মুক্তাগাছার বর্তমান সংসদ সদস্য সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদ বাবু এবার আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বঞ্চিত হয়েছেন। আর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সদ্য পদত্যাগ করা উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাই আকন্দকে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয়েছিল। তবে আসন সমঝোতায় আওয়ামী লীগ এ আসন থেকে দলীয় প্রার্থী প্রত্যাহার করে সালাহউদ্দিন আহমেদ মুক্তিকে মহাজোটের প্রার্থী করে।
কিন্তু এ আসনে কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য কৃষিবিদ নজরুল ইসলাম ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য অ্যাডভোকেট বদর উদ্দিন আহমদ স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মাঠে নেমেছেন। এছাড়া জাতীয় পার্টির মুক্তিকে সমর্থন দিয়েছেন বর্তমান সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী ও দলীয় মনোনয়ন বঞ্চিত কেএম খালিদ বাবু। আর স্বতন্ত্র প্রার্থী নজরুলকে সমর্থন দিয়েছেন নৌকা পেয়েও আসন ভাগাভাগিতে প্রার্থিতা হারালো আব্দুল হাই।
মো. আব্দুল করিম নামে একজন ভোটার বলেন, এবারও বিএনপি নির্বাচনে আসেনি। তাই আওয়ামী লীগ জাতীয় পার্টিকে বিরোধী দল বানিয়ে সংসদে যাওয়ার জন্য তাদেরকে বেশ কয়েকটি আসন ছেড়ে দিয়েছে। কিন্তু স্বতন্ত্র প্রার্থী থাকায় এই আসনে জাতীয় পার্টির জেতা একটু কঠিন হয়ে পড়েছে। তাই হয়তো সাধারণ ভোটারের মন আকৃষ্ট করতে পোস্টার লিফলেটে আওয়ামী লীগ সমর্থিত কথাটি লিখেছেন।
ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী কৃষিবিদ নজরুল ইসলাম বলেন, আসন সমঝোতা মানে এই নয় সালাহউদ্দিন আহমেদ মুক্তি আওয়ামী লীগ সমর্থিত। তিনি পোস্টার লিফলেটে এসব লিখে সাধারণ ভোটারদের বিব্রত করার পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর সুনামও ক্ষুণ্ন করছেন। এটি মুক্তির রাজনীতির দুর্বলতা। বিষয়টিতে কঠিনভাবে হস্তক্ষেপ করা প্রয়োজন।
মুক্তাগাছা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বিল্লাল হোসেন সরকার বলেন, মহাজোটের প্রার্থী হিসেবে আমরা উপজেলা এবং শহর আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দরা সালাহউদ্দিন আহমেদ মুক্তিকে সমর্থন দিয়েছি। তাকে জেতানোর জন্য কাজও করছি। তবে মুক্তির পোস্টার এবং লিফলেটে আওয়ামী লীগ সমর্থিত লেখা ঠিক হয়েছে কি না বলতে পারবো না। সেটা তার ব্যক্তিগত বিষয়।
এ বিষয়ে সালাহউদ্দিন আহমেদ মুক্তি বলেন, আমাকে মহাজোটের প্রার্থী করার জন্য প্রধানমন্ত্রী এ আসন থেকে নৌকা মনোনীত প্রার্থীকে সরিয়ে নিয়েছেন। তার মানে আমিই আওয়ামী লীগের প্রার্থী। বিষয়টি পোস্টার কিংবা লিফলেটে লেখা নিয়ে দোষ কিংবা সমালোচনার কিছু দেখছি না। আমার মাঠের অবস্থা খুবই ভালো, তাই একটি পক্ষ এসব নিয়ে সমালোচনা করছে।
জাতীয় পার্টির প্রার্থী সালাহউদ্দিন আহমেদ মুক্তি ২০১৪ সালেও এ আসন থেকে এমপি হয়েছিলেন। আওয়ামী লীগের দু’জন স্বতন্ত্র প্রার্থী থাকায় তৃণমূল নেতাকর্মী ও সহযোগী সংগঠনের মধ্যে বিভাজন কাজ করছে। জাতীয় পার্টির প্রার্থীর পক্ষে সরাসরি মাঠে কাজ করছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র বিল্লাল হোসেন সরকার।