সেলিম উদ্দীন, ঈদগাঁও
লবণ ও চিংড়ি সরবরাহ নামে তথাকথিত প্রতিষ্ঠানের হর্তাকর্তা বেশি মুনাফার প্রলোভন দেখিয়ে সাধারণ মানুষের অর্ধ কোটি টাকা নিয়ে জাহাঙ্গীর আলম নামের এক ব্যবসায়ী উধাও হয়ে গেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এমনতর ঘটনাটি ঘটেছে কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার খুটাখালী ইউনিয়নে।এ বিষয়ে ২ জনকে আসামি করে গত ১ অক্টোবর চকরিয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা হয়েছে। মামলার বাদী উপজেলার খুটাখালী ইউনিয়নের ফুলছড়ি শিয়াপাড়া গ্রামের মৃত জেবর মুল্লুকের পুত্র ছাদেক হোসাইন।
মামলার আসামিরা হলেন ইউনিয়নের একই গ্রামের মৃত আবু তাহেরের পুত্র জাহাঙ্গীর আলম ও তাঁর স্ত্রী এলোমুন্নাহার এলি। অন্য একটি মামলায় উভয়ের গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি রয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ করা হলেও স্থানীয় এক ইউপি সদস্য জানান, ঐ প্রতারক মানুষের কাছ থেকে কমপক্ষে অর্ধ কোটি টাকা নিয়ে পালিয়ে গেছে।ভুক্তভোগীরা জানান, বিগত কবছর আগে জাহাঙ্গীর মেসার্স আল আমিন এন্টারপ্রাইজ নামের একটি প্রতিষ্ঠান চালু করেন। উপজেলার খুটাখালী বাজার এলাকায় একটি ঘরে কার্যক্রম শুরু করেন। তাঁরা বেশি মুনাফার প্রলোভন দেখিয়ে মানুষকে বিনিয়োগ করার প্রস্তাব দিতে থাকেন। তবে প্রথম প্রথম তাঁদের এ প্রস্তাবে কেউ সাড়া দেননি। তবে গত কবছরে নানা কৌশলে বেশ কিছু লোককে তাঁদের ব্যবসার প্রতি আকৃষ্ট করতে সক্ষম হন। গত ২ বছরে ইউনিয়নের বেশ কিছু সাধারন মানুষের কাছ থেকে মোটা অংকের লভ্যাংশ দেয়ার প্রতিশ্রুতিতে অর্ধ কোটি টাকা সংগ্রহের পর গত ২০২০ সালের দিকে হঠাৎ প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে জাহাঙ্গীর আলম উধাও হয়ে সৌদি আরবে গিয়ে আত্ন গোপন করেন। সম্প্রতি তিনি দেশে ফিরে আসলে হন্য হয়ে খুঁজে বেড়ান পাওনাদাররাটাকা আত্মসাতের অভিযোগে হওয়া মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, জাহাঙ্গীর আলম খুটাখালী বাজারে মেসার্স আল আমিন এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ভুয়া প্রতিষ্ঠান খুলে মানুষকে প্রতারণার ফাঁদে ফেলেন। খুটাখালী বাজারে বসে ১ লাখ টাকা জমা রাখলে বছরে ২০ হাজার টাকা মুনাফা বা লাভ দেবেন বলে প্রলোভন দেখান। তাঁদের এ প্রস্তাবে অনেকেই আকৃষ্ট হন।
এরপর আসামিরা মামলার বাদী ছাদেক হোসাইনের কাছ থেকে ৩শ টাকার স্ট্যাম্পমুলে বিগত ২০১৭ সালে ২লাখ ৫০ হাজার টাকা নেন। তথাকথিত ওই প্রতিষ্ঠানের কর্তাবাবু জাহাঙ্গীর মুনাফাসহ সব টাকা ফেরত দেবেন বলে তাঁর সঙ্গে চুক্তিও করেন। দীর্ঘদিন ছাদেক মুনাফা পাওয়ার আশায় অপেক্ষা করার পর জানতে পারেন, জাহাঙ্গীর আলম পালিয়ে গেছেন এবং তাঁর মুঠোফোনও বন্ধ রয়েছে।
বেশি মুনাফার প্রলোভন দেখিয়ে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা আদায় করার অভিযোগের বিষয়ে জাহাঙ্গীর আলমের মুঠোফোনে ফোন দিলে তা বন্ধ পাওয়া যায়। এমনকি ঐ প্রতিষ্ঠানের কাউকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছেনা। ভুক্তভোগী সাধারণ মানুষ প্রতারক জাহাঙ্গীরের কঠোর শাস্তি দাবি করেন এবং পুলিশ প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চান। চকরিয়া থানার ওসি জাবেদ মাহমুদ বলেন, ঘটনাটি তিনি শুনেন নি। তবে এ ঘটনায় তাঁদের কাছে কোনো অভিযোগও আসেনি।