ই-পেপার | রবিবার , ২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

পটিয়ায় পিপিআর রোগমুক্তকরণ কর্মসূচি উদ্বোধনে হুইপ : শেখ হাসিনার জন্যই বাংলাদেশ প্রাণীসম্পদেও স্বয়ংসম্পূর্ণ

আবদুল হাকিম রানা, পটিয়া :

চট্রগ্রামের পটিয়ায় উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও পটিয়া ভেটেরিনারি হাসপাতালের উদ্যোগে প্রাণী সম্পদ দপ্তরের পিপিআর রোগ নির্মূল এবং ক্ষুরারোগ নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পের সহযোগিতায়
রবিবার ছাগল ও ভেড়ার পিপিআর রোগমুক্তকরণ কর্মসূচির উদ্বোধন করা হয়েছে। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন জাতীয় সংসদের হুইপ আলহাজ্ব সামশুল হক চৌধুরী এমপি।

 

 

পটিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আতিকুল মামুনের সভাপতিত্বে এতে বিশেষ অতিথি অতিথি ছিলেন প্রাণী সম্পদ দপ্তরের চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিচালক ডা.এ. কে. এম হুমায়ুন কবির, বড়লিয়া ইউপির চেয়ারম্যান শাহিনুল ইসলাম শানু, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এম এজাজ চৌধুরী। স্বাগত বক্তব্য রাখেন পটিয়া উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা: মোহাম্মদ ইলিয়াছ।

 

 

এতে হুইপ সামশুল হক চৌধুরী এ টিকাদান কর্মসূচি উদ্বোধন ঘোষণা করে বলেন, পটিয়া প্রাণী সম্পদ উৎপাদনে সারা বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিতীয়। এখানে খামারীদেরকে শেখ হাসিনার সরকার প্রণোদনাসহ সব রকমের সুযোগ সুবিধা দিয়ে যাচ্ছে। যা অব্যাহত থাকলে আমাদের দেশের মোট প্রাণী সম্পদ চাহিদার বিদেশ নির্ভরতা কমবে। তিনি আরও বলেন, আমাদের দেশের খামারী ও কৃষকরা এখন আগের তুলনায় অনেক বেশী সচেতন। তাদেরকে সরকারের দেয়া সহায়তা তারা কাজে লাগিয়েছেন বলেই বিগত ঈদুল আজহায় দেশীয় পশুতে আমাদের দেশের মানুষ কুরবানি দিতে পেরেছে। কৃত্রিম সংকট করে কোন দালাল প্রকৃতির লোক লাভবান হতে পারেনি।তিনি আরো বলেন, জাতির পিতার কন্যা শেখ হাসিনা সারাবিশ্বে একজন মডেল রাষ্ট্রনায়ক। তার নিরলস প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ অন্যান্য সব খাতের ন্যায় প্রাণী সম্পদেও স্বয়ংসম্পূর্ণ।

 

 

তিনি শেখ হাসিনার সরকারের প্রাণী সম্পদ, কৃষি ও সমবায়সহ সবক্ষেত্র অর্জিত সাফল্য ধরে রাখতে আবারো সরকারের ধারাবাহিকতা রক্ষায় সকলকে একযোগে কাজ করার আহবান জানান। অনুষ্ঠানে বলা হয়, পিপিআর ছাগল ভেড়ার ভাইরাসজনিত একটি মারাত্নক সংক্রামক রোগ। রোগটি সর্বপ্রথম আইভরিকোস্টে ১৯৪২ সালে সনাক্ত হয়। বাংলাদেশে এই রোগটি ১৯৯৩ সালে দেখা দেয়।

 

 

এই রোগে আক্রান্তের হার প্রায় ৪০-১০০ ভাগ এবং মৃত্যুর হার ৪৫-৯০ ভাগ হতে পারে। Economic Impact of Trans boundary Animal Diseases in SAARC Countries, ২০১৩ অনুযায়ী প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রতিবছর এই রোগে বাংলাদেশে প্রায় ১৮৪.২২ কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়। তাছাড়া, প্রজনন ক্ষমতা কমে যায়, চিকিৎসা খরচ বেশী, উৎপাদনশীলতা কমে যায় ফলে সামগ্রিক ক্ষতির পরিমাণ অনেক বেশি।

 

আন্তর্জাতিক প্রাণিস্বাস্থ্য সংস্থা (WOAH) ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বকে পিপিআরমুক্ত/নির্মূল করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। এই লক্ষ্য অর্জনে বর্তমান সরকার মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীন প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরে “পিপিআর রোগ নির্মূল এবং ক্ষুরারোগ নিয়ন্ত্রণ প্রকল্প” গ্রহণ পূর্বক বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। এই প্রকল্পের আওতায় দেশব্যাপি সকল ছাগল ও ভেড়াকে পিপিআর টিকা প্রদান কার্যক্রম গ্রহন করা হয়েছে।
অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশে ছাগল ভেড়ার সংখ্যা ২,৯৪,৮৪,৬৮৭টি। সকল ছাগল/ভেড়াকে টিকা প্রদানের লক্ষে উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে মাত্রা টিকা আমদানি করা হয়েছে এবং এলআরআই, মহাখালী, ঢাকা কর্তৃক প্রস্তুতকৃত ৫৩,০০,০০০ মাত্রা টিকাসহ মোট ৩,০৩,০০,০০০ মাত্রা টিকা মজুদ রয়েছে। অর্থাৎ চাহিদার তুলনায় ৮,০০,০০০ মাত্রা টিকা বেশী মজুদ রয়েছে। ইতোমধ্যে চাহিদা অনুযায়ী দেশের সকল জেলায় টিকা প্রেরণ করা হয়েছে। প্রকল্প সংস্থান অনুযায়ী প্রতিটি ইউনিয়নে ১জন ভলান্টিয়ার ভ্যাক্সিনেটর রয়েছে। সংশ্লিষ্ট উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা রাজস্ব/ প্রকল্প / বেসরকারী স্বেচ্ছাসেবীর সমন্বয়ে টিম গঠন করে এই টিকা প্রদান কার্যক্রম বাস্তবায়ন করবেন। প্রতি মাত্রা টিকা প্রয়োগের জন্য টিকা প্রয়োগকারীকে ৫/- হারে প্রদান করা হবে। এতে পটিয়ায় ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে আগামী ৯ অক্টোবর পর্যন্ত টিকাদান কর্মসূচি চলবে।

 

প্রসংগত: এদিন পটিয়ায় ২৪ জন কৃষককে ১২০০০০ টাকা প্রণোদনা দেয়া হয়। এছাড়া প্রথম ডোজ ভেক্সিন সর্বমোট ২০,০০০ মাত্রা প্রদান করা হয়। তা পটিয়ার প্রতিটি ইউনিয়ন এবং ওয়ার্ড র্পযায়ে পৌঁছে দেওয়া হবে বলে সভায় বলা হয়।

 

এইচ এম কাদের,সিএনএন বাংলা২৪