ই-পেপার | সোমবার , ২০শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

সাংবাদিকদের পাহাড়ে আবাসন, বরাদ্দে মানা হাইকোর্টের

নিজস্ব প্রতিবেদক :

কক্সবাজার সদরের ঝিলংজায় মৌজায় পাহাড় শ্রেণির জমিতে সাংবাদিকদের আবাসনের জন্য প্রস্তাবিত ভূমি বরাদ্দ কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন হাইকোর্ট। পরিবেশ আইনবিদ সমিতি বেলার জনস্বার্থে করা রিটে প্রাথমিক শুনানির পর রবিবার (২৩ জুলাই) বিচারপতি ভীষ্মদেব চক্রবর্তী ও বিচারপতি মো. আলী রেজার হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন।

 

একইসঙ্গে ঝিলংজায় পাহাড় কাটা বন্ধ করতেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রুলে কক্সবাজারের ঝিলংজা মৌজার ৪৯ দশমিক ৯৭ একর পাহাড় রক্ষার ব্যর্থতা সংবিধান, প্রচলিত আইন ও উচ্চ আদালতের রায়ের পরিপন্থী হওয়ায় কেন তা আইন বহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়েছেন। সেইসঙ্গে পাহাড় রক্ষার নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না এবং পাহার কাটা ও পাহাড় ধ্বংসকারীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তাও রুলে জানতে চাওয়া হয়েছে।

পরিবেশ সচিব, ভূমি সচিব, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, প্রধান বন সংরক্ষক, চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও কক্সবাজারে পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালককে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মিনহাজুল হক চৌধুরী। তার সঙ্গে ছিলেন এস হাসানুল হক বান্না। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত তালুকদার।

বেলার পক্ষে গত ১৩ জুলাই রিট আবেদনটি করা হয়। রিট আবেদনে বলা হয়েছে, প্রাকৃতিক ভারসাম্য বজায় রাখা ও পরিবেশগত বিপর্যয় থেকে কক্সবাজার শহরকে রক্ষা করতে ১৯৯৯ সালে সরকার জেলার ১০ হাজার ৪৬৫ হেক্টর এলাকাকে প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা ঘোষণা করে। এর মধ্য দিয়ে সেখানে ভূমির শ্রেণি পরিবর্তন নিষিদ্ধ করা হয়। জেলার প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকার মধ্যে ঝিলংজা রয়েছে। এই ঝিলংজা মৌজার ৪৯ দশমিক ৯৭ একর ভূমি পাহাড় শ্রেণির ভূমি হিসেবে রেকর্ড রয়েছে। অথচ এই মৌজার ৫ একর পাহাড় শ্রেণির ভূমি সাংবাদিকদের আবাসনের জন্য বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে।

রিট আবেদনে আরও বলা হয়েছে, সাংবাদিকদের আবাসনের জন্য ভূমি বরাদ্দ জাতীয় অপরিহার্য স্বার্থ না। তার পরও পাহাড় শ্রেণির ভূমিতে আবাসনের প্রস্তাব বাতিল না করে বরং তা নথিভুক্ত করা হয়েছে, যা দেশের প্রচলিত আইনের পরিপন্থি। প্রচলিত আইন অনুযায়ী জাতীয় অপরিহার্য স্বার্থ ও পরিবেশগত ছাড়পত্র ছাড়া পাহাড় কাটা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।

পরে বেলার পক্ষ থেকে জানানো হয়, ঝিলংজা মৌজার ৫০ একর পাহাড় শ্রেণির জমির বর্তমান অবস্থা নিয়ে প্রতিবেদন চেয়েছেন হাইকোর্ট। পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, পরিচালক, কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে এ প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে এ প্রতিবেদন কত দিনের মধ্যে দিতে বলা হয়েছে, তা আদালতের লিখিত আদেশ পেলে জানা যাবে।

 

নুর মোহাম্মদ, সিএনএন বাংলা২৪