নিজস্ব প্রতিবেদক
আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বর্তমান বিশ্ব পরিস্থিতিতে অর্থনৈতিক চাপটা আছে, ডলারের ক্রাইসিস সারা বিশ্বব্যাপী, আমাদের ওপরও রয়েছে। তারপরও আমি বলব, আমাদের অর্থনীতি গতিশীল। এবারও আমরা সাত লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকার বাজেট দিয়েছি।
‘আজকেও আমি খবর নিলাম বিভিন্ন এলাকা থেকে আমাদের নেতাকর্মীরা এসেছিলেন, জিজ্ঞেস করলাম কী অবস্থা? তারা বলেন, এখানে দাম বেশি, আমাদের ওখানে সব ঠিক আছে। গ্রামে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। হয়তো ঢাকা শহর সবাই দেখেন, গ্রামের দিকে যাননি। গ্রামে কিন্তু কোনো দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নাই।’
বুধবার (১৯ জুলাই) সন্ধ্যায় গণভবনে ১৪ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের সূচনা বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। শুরুতে কেন্দ্রীয় ১৪ দলের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হয়।
সূচনা বক্তব্যে দেশের সার্বিক পরিস্থিতি তুলে ধরে সরকারপ্রধান বলেন, আমরা সমাজের সবদিকে লক্ষ্য দেশটাকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। আজকের বাংলাদেশ সারা বিশ্বের কাছে উন্নয়নের রোল মডেল।
বর্তমান বিশ্ব পরিস্থিতির কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা এখন মোটামুটি ভাবে এমন জায়গা আছি, অর্থনৈতিক চাপটা আছে, ডলারের ক্রাইসিস সারা বিশ্বব্যাপী, আমাদের ওপরও রয়েছে। তারপরও আমি বলবো আমাদের অর্থনীতি গতিশীল। এবারও আমরা সাত লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকার বাজেট দিয়েছি।
চালের মজুদের বিষয়ে সরকারের পরিকল্পনার কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের চালের অভাব নাই। চাল এবং অন্যান্য ফসল প্রচুর পরিমাণে আছে। আজকে আমাকে খাদ্যমন্ত্রী বলেছে, আমাদের চাল রাখার জায়গা নেই। এখন জায়গা খালি করি কীভাবে। যাদের আমরা রেশন দেই, যেমন আমাদের সশস্ত্র বাহিনী আছে, পুলিশ বাহিনী। তাদের মধ্যে যাদের রাখার ব্যবস্থা আছে তাদের আমরা একবারে তিন মাসেরটা দিয়ে দেবো। ভিজিডি, ভিজিএফ মাসে মাসে দেই সেটাও দরকার হয় তিন মাসের দিয়ে সেখানে আমরা জায়গা করবো। সেখানে নতুন করে আবার খাদ্য মজুদ করবো। যাতে ভবিষ্যতে কোনো দুর্যোগে সমস্যা না হয়।
শেখ হাসিনা বলেন, মানুষের জীবন পরিবর্তন হয়েছে। আমরা এখন উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি, সেটাও কার্যকর করতে হবে। সেখানে কিছু চ্যালেঞ্জ আমাদের আসবে। সে প্রস্তুতি আমরা নিচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকে মানুষ অন্তত খেয়ে-পরে ভালো আছে। এখন বর্ষাকালেও শীতকালের সবজি দেখেন। সবই পাওয়া যায়। আবার সেটা দাম বেশি হলে সবাই চিৎকার-চেচামেচিও করে। কিন্তু আগে তো এগুলো পাওয়াই যেতো না। এখন সবই পাওয়া যাচ্ছে।
স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় পুনর্ব্যক্ত করে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা একটা লক্ষ্য নির্ধারণ করেছি- ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ হবে উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ। ২০০৮ এ আমরা ঘোষণা দিয়েছি ডিজিটাল বাংলাদেশ, এখন আমরা ঘোষণা দিয়েছি স্মার্ট বাংলাদেশ করবো।
নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, পদ্মা সেতু নিয়ে একটা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হয়েছে। পদ্মা সেতু, এই একটা সিদ্ধান্ত, এখন সবাই বাংলাদেশকে সমীহ করে। পদ্মা সেতুতে দক্ষিণের মানুষের ভাগ্যের দুয়ার খুলে গেছে।
বৈঠকে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য এবং ১৪ দলের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র আমির হোসেন আমু, আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু, জাসদ সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়াসহ ১৪ দলের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন। সূচনা বক্তব্যের পর আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ১৪ দলের নেতাদের বক্তব্য শোনেন।