ই-পেপার | শুক্রবার , ১৭ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

মেটাল কয়েনে বিনিয়োগের প্রলোভন দেখিয়ে কয়েক কোটি টাকা আত্মসাৎ

নিজস্ব প্রতিবেদক,ঢাকা:

ঢাকা: মেটাল কয়েন বা ধাতব মুদ্রায় মাত্র ৩০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করে করে দুদিনের ব্যবধানে পাওয়া যাবে শত কোটি টাকা, এমন প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে একটি চক্র।

 

রাজধানীর বিমানবন্দর থানায় দায়ের হওয়া একটি মামলার পরিপ্রেক্ষিতে ২৯ এপ্রিল চাঁদপুর ও ফেনী থেকে চক্রের দুজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

 

তারা হলেন কাজী মো. ইউসুফ (৪৬) ও মানিক মোল্লা (৬৬)।
বৃহস্পতিবার (০২ মে) দুপুরে আগারগাঁওয়ে পিবিআই ঢাকা মেট্রো উত্তরের বিশেষ পুলিশ সুপার মো. জাহাঙ্গীর আলম এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান।

 

জাহাঙ্গীর আলম জানান, মামলার বাদী মো. রফিকুল ইসলামের সঙ্গে পূর্ব পরিচিত মো. ইউসুফের মাধ্যমে পরিচয় হয় আরেক আসামি মানিক মোল্লার। পরিচয়ের সূত্র ধরে অল্প সময়ের মধ্যে বেশি মুনাফার লোভ দেখিয়ে রফিকুলের কাছ থেকে বিপুল অর্থ হাতিয়ে নেন তারা।

 

পিবিআই জানায়, মেটাল কয়েনে বিনিয়োগের কথা বলে রফিকুলকে চাঁদপুরে আসামি মানিক মোল্লার বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চক্রের সদস্যরা মেটাল কয়েনকে বৈদ্যুতিক আলোয় এনে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখান।

 

আর এতেই অনেকটা লোভে পড়ে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী হন ভুক্তভোগী রফিকুল ইসলাম। চুক্তি অনুযায়ী, রফিকুল তিন কোটি ৮০ লাখ টাকা তুলে দেন চক্রের সদস্যদের হাতে। চুক্তির কথা কেউ যেন না জানে, সেই শর্তে শাহ জালাল ও শাহ পরানের নামে শপথ করানো হয় তাকে।

 

চাঁদপুর থেকে ফেরার পথে সদরঘাটে এসে চক্রের অন্য সদস্যরা সাদা পোশাকে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ইউসুফকেসহ মেটাল কয়েন নিজেদের হেফাজতে নিয়ে নেন। জিজ্ঞাসাবাদের একটি নাটক সাজিয়ে শেষে রফিকুল ইসলামসহ অন্যদের ছেড়ে দেন।

 

পরে চক্রের আরেক সদস্য সাখাওয়াত এসে কয়েন ফিরিয়ে আনার প্রতিশ্রুতিতে দুই কোটি ২৩ লাখ টাকা এবং আরেক সদস্য লিটন ৮০ লাখ টাকা নিলে রফিকুল ইসলামের সন্দেহ হয়। এরপর তিনি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

 

বাস্তবে এমন কোনো কয়েনের অস্তিত্ব এখনো কোথাও খুঁজে পাওয়া যায়নি। তক্ষক কিংবা সীমান্ত পিলারের মতো এটিও প্রতারণার একটি কৌশল বলে জানান বিশেষ পুলিশ সুপার মো. জাহাঙ্গীর আলম।

 

মামলার সূত্র ধরে পিবিআই অভিযান চালিয়ে ফেনী থেকে ইউসুফ ও চাঁদপুর থেকে মানিক মোল্লাকে গ্রেপ্তার করলেও চক্রের অন্য সদস্যরা এখনো পলাতক। বাকিদের ধরতে অভিযান চলছে বলে জানান পিবিআইয়ের এ কর্মকর্তা।