ই-পেপার | বৃহস্পতিবার , ২১শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

আব্দুল হাইয়ের মতো ত্যাগী নেতার কারণে দেশের উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে: প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক,ঢাকা:

ঢাকা: ঝিনাইদহ-১ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আব্দুল হাইয়ের মৃত্যুতে শোক জানিয়েছে জাতীয় সংসদ। বৃহস্পতিবার (২ মে) জাতীয় সংসদে আনা শোকপ্রস্তাব সর্বসম্মতিক্রমে গ্রহণ করা হয়।

এর আগে শোক প্রস্তাবের ওপর আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সরকার দলের এমপিরা বক্তব্য রাখেন। পরে সংসদের বৈঠক রবিবার বিকাল ৫টা পর্যন্ত মুলতবি করা হয়।

শোক প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, আব্দুল হাইয়ের মতো ত্যাগী নেতা আওয়ামী লীগে ছিল বলেই দেশের উন্নয়নে সফলতা আনা সম্ভব হয়েছে। ঝিনাইহদ এমন একটা সন্ত্রাসী এলাকা ছিল যেখানে গ্রামে মানুষ টিকতে পারতো না। সেখানে নির্বাচন ও রাজনীতি করাটা অত্যন্ত কষ্টকর ছিল। সেই অবস্থার মধ্যেও আব্দুল হাই অত্যন্ত দৃঢ়তার সাথে সংগঠন ধরে রাখেন এবং সংগঠনকে সংগঠিত করে দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন। আব্দুল হাই অত্যন্ত সাহসী ছিলেন। ভালো সংগঠক ছিলেন। সফলতার সঙ্গে তিনি সংগঠনটাকে দাঁড় করান। গ্রামে মানুষ টিকতে পারতো না, অস্ত্রের ঝনঝনানি। বিএনপি নামক দলটি সৃষ্টি হয়েছিল। আন্ডারগ্রাউন্ড পার্টির বেশিরভাগ লোক বিএনপিই করতো। সেখানে প্রতিনিয়ত আমাদের নেতাকর্মীর ওপর হামলা হতো। কত লাশ যে পড়েছে তার হিসেবে নেই। সেই অবস্থায় সংগঠনকে গড়ে তোলা এবং বার বার নির্বাচিত হয়ে আসা এটা একটা বিরাট দক্ষতার পরিচয় তিনি দিয়েছিলেন।

সরকার প্রধান বলেন, এটাই সবচেয়ে বেশি কষ্ট লাগছে, তিনি এই সংসদে বসতে পারলেন না। অনেক সংগ্রামের পথ বেয়ে আওয়ামী লীগ সরকারে এসেছে। আওয়ামী লীগ সরকারে এসেছে বলেই কিন্তু আজকে বাংলাদেশের সার্বিক উন্নয়ন হয়েছে। মানুষের জীবনমান উন্নত হয়েছে। জনগণ আজ একটা মর্যাদা নিয়ে চলতে পারে বিশ্ব দরবারে। এটা আমার পক্ষে সম্ভব হয়েছে এই কারণে, আব্দুল হাইয়ের মতো ত্যাগী নেতা দলে ছিল।

শোকপ্রস্তাবের ওপর অন্যদের মধ্যে রাজবাড়ী-২ আসনের রেলমন্ত্রী জিল্লুল হাকিম, টাঙ্গাইল-১ আসনের ড. আব্দুর রাজ্জাক, খুলনা-৩ আসনের এসএম কামাল হোসেন, যশোর-২ আসনের মো. তৌফিকুজ্জামান, যশোর-৩ আসনের কাজী নাবিল আহমেদ স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য নাসের শাহরিয়ার জাহেদী বক্তব্য দেন।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদের আওয়ামী লীগ দলীয় এমপি আব্দুল হাই গত ১৬ মার্চ থাইল্যান্ডের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। চলতি সংসদের কোনো সংসদ সদস্য মারা গেলে রেওয়াজ অনুযায়ী সংসদের বৈঠক মুলতবি করা হয়।

বৃহস্পতিবারের বৈঠকে সাবেক সংসদ সদস্য ড. মোহাম্মদ শামছুল হক ভূইয়া, আবুল হাসেম খান, পিনু খান, নজির হোসেন ও মোখলেসুর রহমান। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর গোলাম আরিফ টিপু, প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সবিচ ইহসানুল করিম হেলাল, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য ড. প্রণব কুমার বড়ুয়া, বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার অন্যতম নকশাকার শিব নারায়ণ দাস, সাবেক এমপি মরহুম আব্দুর রহিমের স্ত্রী সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও হুইপ ইকবালুর রহিমের মা নাজমা রহিম, রবীন্দ্র সংগঠক শিল্পী সাদি মহম্মদ, চাইম ব্রান্ডের ভোকালিস্ট খালিদ, গজল সঙ্গীতের প্রবাদ প্রতীম পঙ্কজ উদাস, টঙ্ক আন্দোলনের নেত্রী কুমুদিনী হাজং ও প্রখ্যাত অভিনেতা আহমেদ রেজা সেলিমের মৃত্যুতে শোক জানিয়েছে সংসদ। মস্কোর ক্রোকাস সিটিতে সন্ত্রাসী হামলায় হতাহত, গাজা উপত্যকায় আবাসিক ভবনে ইসরায়েলের বিমান হামলার হতাহত এবং দেশ-বিদেশের বিভিন্ন স্থানে দুর্ঘটনায় হতাহতের স্মরণেও সংসদ শোক জানিয়েছে।