ই-পেপার | রবিবার , ২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

ভাঙ্গায় ২ মিনিটের কালবৈশাখী ঝড়ে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর লণ্ডভণ্ড; ইউএনও’র পরিদর্শন

লিয়াকত হোসেন, ফরিদপুর:

ফরিদপুরের ভাঙ্গায় ২ মিনিটের কালবৈশাখী ঝড়ে আশ্রয়ণ প্রকল্পের একাধিক ঘরের চাল উড়িয়ে নিয়ে গেছে। এছাড়াও ঝড়ে পুরাতন অনেক গুলো ঘরে ভেঙ্গে পরেছে।এতে করে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরে বসবাসকারী হতদরিদ্র ও নিম্ন আয়ের সুবিধাভুগীরা পরেছে চরম বিপাকে।

 

আজ (১৭ এপ্রিল) বুধবার ভাঙ্গা উপজেলার আজিমনগর ইউনিয়নের পাতরাইল দিঘীরপাড় আশ্রয়ণ প্রকল্প এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে এসব চিত্র দেখা যায়।

 

গতকাল (১৬ এপ্রিল) মঙ্গলবার বিকাল ৬ টার সময় হঠাৎ করেই কাল বৈশাখী ঝড় আঘাত হানে এই এলাকায়।এ ঝড়ে আশ্রয়ণ প্রকল্পের নতুন পুরাতন অনেক ঘরের চাল উড়িয়ে নিয়ে যায়। এছাড়াও কাঁঠাল,আমসহ অন্যান্য গাছপালার ব্যাপক ক্ষতিসাধন হয়েছে।

 

রাস্তায় গাছের ডালপালা পড়ার কারণে কয়েক ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ ছিলো। এর ফলে চরম ভোগান্তিতে জীবনযাপন করছে আশ্রয়ণ প্রকল্পের হতদরিদ্র ও নিম্ন আয়ের সুবিধাভুগীরা।
এরপর স্থানীয় ইউপি সদস্য মো: টিটু মিয়ার এলাকাবাসী নের্তৃত্ব রাস্তা থেকে ডালপালা সরিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে সক্ষম হয়।

 

এদিকে আশ্রয়ণ প্রকল্পের নতুন পুরাতন মিলে প্রায় ২০ থেকে ২৫ টি ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়।এছাড়াও আশ্রয়ণ প্রকল্পের অধীনে থাকা একটি চৌচালা মসজিদের টিনের চাল উড়ে যায়।

 

এই বিষয়ে রানা খালাসী জানান, আমি আশ্রয়ণ প্রকল্পের পুরাতন ঘরের বাসিন্দা। গতকাল হঠাৎ করেই কালবৈশাখী ঝড় শুরু হলে আমর ঘরটি ভেঙ্গে পরে। অল্পের জন্য আমার মেয়ে টা রক্ষা পেয়েছে। এখন ঘরটা যে ঠিক করবো এই সামর্থ্য নেই আমাদের।

 

ফাহিমা বেগম জানান, আমি আশ্রয়ণ প্রকল্পের নতুন ঘর পেয়েছি। গতকালের ঘূর্ণিঝড়ে আমার ঘরের বারান্দার চাল উড়িয়ে নিয়ে গেছে। আজ অনেক খোঁজাখুজির পর পাশের ফসিল মাঠে পেয়েছি। আমার বিদ্যুতের মিটার টা ঝড়ে উড়ে গেছে।

 

আশ্রয়ণ প্রকল্পের মসজিদ ও মক্তবের সভাপতি সাইফুউদ্দিন বেপারী জানান, গতকালের ঝড়ে আমাদের মসজিদের চাল উড়িয়ে নিয়ে গেছে। আমাদের একটি মাইক ও ফ্যান উড়িয়ে নিয়ে গেছে।

 

এই বিষয়ে আজিমনগর ইউনিয়নের সংরক্ষিত ইউপি সদস্য তাসলিমা আক্তার হাসি বলেন, আমি নিজেও এই স্থানের বাসিন্দা।গতকাল মাত্র ২ মিনিটের ঝড়ে এই আশ্রয়ণ প্রকল্প এলাকায় একাধিক ঘর ভেঙ্গে চুরমার হয়ে গেছে। এছাড়াও মুজিব বর্ষ উপলক্ষে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এখানে ১৫ টি নতুন ঘর উপহার দেন।

 

নতুন ১৫ টি ঘরের ৩ টি ঘরের বারান্দার চাল উড়ে গেছে।এখানে যারা বসবাস করে তারা খুবই অসহায়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কাছে আমার আকুল আবেদন তিনি যেন আশ্রয়ণ প্রকল্পের অসহায় ও হতদরিদ্রদের পাশে দাঁড়ান।

 

এ বিষয়ে ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো: টিটু মিয়া বলেন, গতকালের ২ মিনিটের কালবৈশাখী ঝড়ে আশ্রয়ণ প্রকল্পের কয়েকটি ঘরে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। খবর শুনেই সংরক্ষিত মহিলা ওয়ার্ডের সদস্যকে নিয়ে আমি ঘটনাস্থলে আসি। এসে দেখি ঝড়ের তান্ডবে কয়েকটি ঘরের চাল উড়ে গেছে। একটি মসজিদের চাল উড়ে গেছে যা এখনো আমরা খুঁজে পাইনি।আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, মাননীয় সংসদ সদস্য, জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ স্থানীয় সমাজসেবকদের এই অসহায় ও হতদরিদ্রদের পাশে দাড়ানোর জন্য অনুরোধ করছি।

 

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিএম কুদরত এ খুদা বলেন, আমি খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। সরকারের পক্ষ থেকে তাদেরকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।

এই বিভাগের সর্বাধিক পঠিত রিপোর্ট