ই-পেপার | রবিবার , ২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

ভাঙন থেকে রক্ষা, ঐক্যবদ্ধভাবে চলবে গণঅধিকার পরিষদ 

সিএনএন বাংলা ডেস্ক:

টানা ৯ ঘণ্টার বৈঠক। গণঅধিকার পরিষদের শীর্ষ নেতৃবৃন্দের আয়োজনে সন্ধ্যা ৬টায় শুরু হওয়া এ বৈঠক শেষ হয় রাত ৩টায়। বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুসারে এখন থেকে আবার ঐক্যবদ্ধভাবেই চলবে সংগঠনটি।

বৈঠকে ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর, যুগ্ম আহ্বায়ক হাসান আল মামুন, রাশেদ খানসহ প্রায় সব পর্যায়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকের মধ্যেই বিদেশে অবস্থানরত গণঅধিকার পরিষদের আহ্বায়ক ড. রেজা কিবরিয়ার সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হয়। বৈঠকে যেসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, তার সঙ্গে একমত পোষণ করেন ড. রেজা কিবরিয়া ও নুরুল হক নুর। গণঅধিকারের বৈঠক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

বৈঠক সূত্রে জানা যায়, গণঅধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক কর্নেল (অব.) মিয়া মশিউজ্জামানের উদ্যোগে তার অফিসে এ বৈঠকের আয়োজন করা হয়। রাত সাড়ে ৮টার দিকে বৈঠকে যোগদান করেন নুরুল হক নুর। বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, কয়েক দিন ধরে চলা অচলাবস্থা নিরসনে যে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে, তারা তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করবে। এবং চলমান এ তদন্তে কেউ হস্তক্ষেপ করবে না। পাশাপাশি গত দুদিন যে বহিষ্কার এবং পাল্টা বহিষ্কারের ধারা চলে আসছে, তা থেকেও বের হয়ে আসবে দুই পক্ষ। একই সঙ্গে যাদের বহিষ্কার করা হয়েছে, তারা আগের পদেই বহাল থাকবেন।

বৈঠকে উপস্থিত কয়েকজন যুগ্ম আহ্বায়ক জানান, বৈঠকে তোপের মুখে পড়েন গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল হক নুর। বিভিন্ন বিতর্কিত কর্মকাণ্ড নিয়ে তার কড়া সমালোচনা করেন গণঅধিকার পরিষদের নেতারা। এক পর্যায়ে নুর গত কয়েক দিনের কর্মকাণ্ড নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেন।

বৈঠকে কোটা আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসান আল মামুন বলেন, গণঅধিকার পরিষদের মূল সমস্যা ড. রেজা কিবরিয়া ও নুরুল হক নুরের পরস্পরবিরোধী বক্তব্য এবং পরস্পরের বিরুদ্ধে দেওয়া অভিযোগ। যেখানে সংগঠনের অস্তিত্বের প্রশ্ন, হাজার হাজার নেতাকর্মীর শ্রম-ঘামের প্রশ্ন সেখানে অবশ্যই উভয়ের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।

তিনি বলেন, রেজা কিবরিয়া দলের আহ্বায়ক হিসেবে আমাকে সদস্য সচিবের দায়িত্ব দিতে পারেন গঠনতন্ত্র অনুযায়ী; কিন্তু নৈতিক জায়গা থেকে আমি এটি সমর্থন করি না এবং সংগঠনের সাংগঠনিক সিদ্ধান্তই হবে আমার সিদ্ধান্ত। ঠিক তেমনিভাবে রাশেদ খানকে চলতি দায়িত্ব পালনের পরিবর্তে প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক করাকেও যৌক্তিক মনে করি না।

ড. রেজা কিবরিয়া ও নুরুল হক নুরের পরস্পরবিরোধী বক্তব্যকে আমি সমর্থন করি না। শ্রম, ঘাম, রক্তের বিনিময়ে এই সংগঠন এ জন্য তৈরি করিনি যে, যে কেউ চাইলে এই সংগঠনকে বিক্রি করে দিতে পারে। এই সংগঠন প্রতিটি নেতাকর্মীর। সংগঠনে কোনো ধরনের কালিমা লেপন করতে দেওয়া হবে না। যার যার জায়গা থেকে স্বচ্ছ এবং সহনশীল আচরণ করতে হবে।

বৈঠকের সিদ্ধান্তের বিষয়ে জানতে গণঅধিকার পরিষদের নুরুল হক নুর, হাসান আল মামুন ও রাশেদ খানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তারা কেউ ফোন রিসিভ করেননি। তবে বৈঠকে অনুপস্থিত কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে রাশেদ খান যে বার্তা পাঠান তাতে লেখা রয়েছে, মিটিংয়ের সিদ্ধান্ত অত্যন্ত পজিটিভ। ঐক্যবদ্ধ শক্তিতে এগিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত। আশা করি, দু-এক দিনের মধ্যে সমস্যার চূড়ান্ত সমাধান হবে।

 

এইচ এম কাদের,সিএনএন বাংলা২৪