আন্তর্জাতিক ডেস্ক
পবিত্র নগরী মদিনার মসজিদে নববিতে এখন এক অনন্য দৃশ্য দেখা যাচ্ছে। সেখানে ইমামতি করছেন একই পরিবারের দুই সদস্য – পিতা ও পুত্র। কখনো বাবা ছেলের ইমামতিতে নামাজ আদায় করেন, আবার কখনো বাবার পিছনে দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করেন পুত্র।
এই দুই পিতা-পুত্র হচ্ছেন, মসজিদে নববির সবচেয়ে বয়োজ্যেষ্ঠ ও প্রবীণ সম্মানিত ইমাম ও খতিব শায়খ আলি আবদুর রহমান আল-হুজাইফি এবং তার ছেলে তরুণ ইমাম ও খতিব শায়খ আহমদ বিন আলি আল-হুজাইফি।
শায়খ আলি আল-হুজাইফি পবিত্র কোরআনের চমৎকার ও বিশুদ্ধ উচ্চারণের জন্য পুরো বিশ্বে প্রসিদ্ধ। অল্প বয়সেই তিনি সুমধুর কন্ঠে পবিত্র কোরআন তিলাওয়াত করে বিশ্বব্যাপী কোরআনপ্রেমী মানুষের মন কেড়েছেন। মসজিদে নববিতে তিনি দীর্ঘ ৪০ বছরের বেশি সময় ধরে ইমাম ও খতিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
১৯৪৭ সালের ২২ মে জন্ম নেওয়া শায়খ হুজায়ফি মিশরের আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইসলামী আইনের ওপর মাস্টার্স ডিগ্রি নেন। পরে তিনি একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রিও অর্জন করেন। কর্মজীবনের শুরুর দিকে অধ্যাপনার পাশাপাশি তিনি মদিনার ঐতিহাসিক মসজিদে কুবায় ইমাম নিযুক্ত হন। ১৯৭৯ সালে মসজিদে নববির প্রধান ইমাম হিসেবে যোগ দেন। পরের বছরের রমজান মাসে তাকে মক্কার হারাম শরিফে ইমামতির দায়িত্ব দেওয়া হয়। পরে পুনরায় তিনি মসজিদে নববিতে ফিরে আসেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা ও মসজিদে নববিতে ইমাম-খতিবের দায়িত্বের পাশাপাশি আরও বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন শায়খ হুজায়ফি।
২০১৯ সালে মসজিদে নববিতে তার দায়িত্ব পালনের ৪০ বছর পূর্ণ হওয়ার বছর নতুন দুইজন ইমাম নিয়োগ দেওয়া হয়। তাদের অন্যতম হচ্ছে শায়খ হুজাইফির ছেলে শায়খ ড. আহমদ বিন আলি আল-হুজাইফি। অবশ্য তিনি রমজানে মসজিদে নববীতে তারাবিহ নামাজের ইমাম হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।
তখন থেকেই প্রায়ই মনমুগ্ধকর সেই দৃশ্যটি দেখা যায়। কখনো মসজিদে নববির মিহরাবে ছেলে নামাজ পড়াচ্ছেন, আর পিতা মুক্তাদি হিসেবে নামাজ আদায় করছেন। আবার কখনোবা পিতা ইমাম হিসেবে নামাজ পড়াচ্ছেন, আর ছেলে মুক্তাদির কাতারে।