ই-পেপার | শনিবার , ২৯শে জুন, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

রোহিঙ্গা ক্যাম্পের মানববর্জ্য: হাজারো মানুষ হারিয়েছে জীবিকা

এইচএম ফরিদুল আলম শাহীন :

কক্সবাজারের উখিয়ার রাজাপালং ইউনিয়নের ‘মাছকারিয়া খাল’ এখন মৃত প্রায়। এই খালের পানি সেচ কাজে ব্যবহার ও মৎস্য আহরণ করে ১০-১২ হাজার মানুষ জীবিকা নির্বাহ করতো। ২০১৭ সালে রোহিঙ্গা ঢল নামলে প্রথমে বন ধ্বংস হয় এরপর রোহিঙ্গাদের মানববর্জ্যে ক্রমাগত ভরাট হতে থাকে খালটি। এই খাল ৫ বছর আগেও ছিল হাজারো মানুষের জীবিকার উৎস।

 

জানা গেছে, ২০১৭ সালে রোহিঙ্গারা মানবিক আশ্রয় নিলে পার্শ্ববর্তী বনাঞ্চলে গড়ে উঠে ক্যাম্প, এরপর থেকেই খালটি মানববর্জ্যের প্রভাবে নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। পানি স্বল্পতা, বর্জ্যের কারণে মাটির গুণাগুণ নষ্ট হওয়ায় এই এলাকার তিন হাজার একরের বেশি কৃষি জমিতে এখন আর আবাদ হয় না। এর ফলে কর্মহীন কৃষকেরা মানবেতর দিনযাপন করছেন।

 

অস্তিত্ব হারানো মাছকারিয়া খাল পুনরায় খনন ও সংস্কারের মাধ্যমে খালের দুই পাশে সুরক্ষিত প্রাচীর নির্মাণের উদ্যোগ নিতে সরকারসহ সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন স্থানীয়রা।

 

আঞ্চলিক অর্থনীতির উপর বিরূপ প্রভাব কমাতে দ্রুত মাছকারিয়া খালের প্রাণ ও পুরনো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনা উচিত বলে মনে করেন স্থানীয় মানবাধিকার ও উন্নয়নকর্মী আনিসুল ইসলাম।

 

‘মাছকারিয়া খাল’ এখন মৃতপ্রায়:

মাছকারিয়া খালের ওপর নির্ভরশীল স্থানীয় কৃষক আবদুল হালিম বলেন, এই খাল মানববর্জ্য, পলিথিন আর প্লাস্টিকে সয়লাব। বন্ধ হয়ে গেছে পানি সরবরাহ। ফলে ব্যাহত হচ্ছে সেচ কাজ। এ কারণে বিস্তীর্ণ এলাকার হাজার হাজার একর জমি পড়ে আছে অনাবাদি।

 

মাছকারিয়া খাল পাড়ের জেলে আমিন বলেন, এই খালের মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করতো আমার মতো শত শত জেলে। সবাই আজ পেশা হারিয়ে দিনমজুরি করে সংসার চালাচ্ছেন।

 

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী বলেন, মাছকারিয়া খাল সেচ কাজে ব্যবহার করে ও মৎস্য আহরণ করে ১০-১২ হাজার মানুষ জীবিকা নির্বাহ করতো। এখন এই খাল প্রায় মৃত। জীবন্ত এই খালের গতি ফেরাতে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন।