ই-পেপার | বৃহস্পতিবার , ২১শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

ঘন কুয়াশায় নষ্ট হচ্ছে বোরো বীজতলা

নিজস্ব প্রতিবেদক :
দেশের বিভিন্ন স্থানে ঘন কুয়াশা ও কনকনে শীতে নষ্ট হচ্ছে বোরো ধানের বীজতলা। রোপণকৃত বোরো চারারও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। অনেকেই বীজতলা রক্ষায় পলিথিন দিয়ে ঢেকে রাখছেন। কৃষকরা জানান, ঘন কুয়াশা আর অব্যাহত শীতের কারণে বীজতলার চারা হলুদ ও বিবর্ণ হয়ে যাচ্ছে। এতে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তারা। গঙ্গাচড়া (রংপুর) সংবাদদাতা জানান, অব্যাহত শীত ও ঘন কুয়াশায় রংপুরের গঙ্গাচড়ায় বোরো বীজতলা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। কৃষকরা জানান, ঘন কুয়াশা আর অব্যাহত শীতের কারণে বোরো ধানের বীজতলার চারা হলুদ ও বিবর্ণ হয়ে যাচ্ছে। এতে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষক। উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে সদ্য বীজতলায় গজানো চারা হলুদ ও বিবর্ণ হয়ে গেছে। অনেকে নতুন করে আবার বীজতলা তৈরি করছে। সেইসঙ্গে সদ্য রোপণকৃত বোরো চারাগাছও হলুদ হয়ে যাচ্ছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মারুফা ইফতেখার সিদ্দিকা বলেন, ঘন কুয়াশার কারণে বীজতলায় গজানো চারা ছত্রাকে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এজন্য কৃষকদের সকালে বীজতলার শিশির রশি টেনে ফেলে দিতে হবে। তাছাড়া বীজতলা সাদা পলিথিন দিয়ে ঢেকে দেওয়া যেতে পারে। যদি সেচ দেওয়ার সুযোগ থাকে, সেখানে বিকালে সেচ দিয়ে বীজতলা তলিয়ে রাখতে হবে এবং পরদিন পানি বের করে দিতে হবে। তাহলে চারা ভালো থাকবে।

পাইকগাছা (খুলনা) সংবাদদাতা জানান, পাইকগাছায় তীব্র শীত ও কুয়াশায় বোয়ালিয়া বীজ উত্পাদন খামারে বোরো আবাদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। খামার সূত্রে জানা গেছে, হঠাত্ করে তীব্র শীত আর ঘোন কুয়াশা শুরু হওয়ায় কৃষিকাজ যেমন ব্যাহত হচ্ছে, তেমনি বীজতলা ও রোপণকৃত ধানের চারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। খামারে ব্রি ধান ৬৭-এর রোপণকৃত প্রায ১০ একর জমির চারা লাল হয়ে মরে গেছে। এর মধ্যে পাঁচ একর পুনরায় রোপণ করা হয়েছে আর বাকি পাঁচ একরে মরে যাওয়া চারার স্থানে নতুন চারা রোপণ করা হয়েছে। তীব্র শীত আর ঘন কুয়াশা থাকায় সূর্যের আলো না পাওয়ায় বীজতলার চারা লালছে রং ধারণ করেছে। খামারের সিনিয়র সহকারী পরিচালক কৃষিবিদ নাহিদুল ইসলাম বলেন, বীজতলা তৈরির পরই তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশা শুরু হয়। সূর্যের আলো না পাওয়ায় চারা খাদ্য তৈরি ও শিকড় বাড়তে পারছে না। এতে চারা লালচে রং ধারণ করে মরে যাচ্ছে। আর শিশিরের পানি ও লবণাক্ততায় রোপণকৃত চারার গোড়া পচে মরে যাচ্ছে।

নওগাঁ প্রতিনিধি জানান, রাণীনগর উপজেলার বাঁশবাড়ীয়া গ্রামের গোপাল প্রামানিক জানান, মৃদ্যু শৈত্যপ্রবাহ ও তীব্র শীতের কারণে জমিতে ধানচারা লাগালে মরে যাওয়ার আশঙ্কায় তা সম্ভব হয়নি। গত তিন থেকে দুপুরে রৌদ বের হচ্ছে। ফলে ধান লাগাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক।

নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তারের উপপরিচালক আবুল কালাম আজাদ জানান, নওগাঁয় চলতি বোরো ধানের আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে প্রায় ১ লাখ ৯১ হাজার হেক্টর জমিতে। শীতের কারণে বোরো চাষে কিছুটা স্থবিরতা দেখা দিলেও গত কয়েক দিন থেকে দুপুরে রৌদ বের হওয়ায় কৃষক ধান লাগাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। জেলায় এখন পর্যন্ত ১৫ শতাংশ জমিতে বোরো ধান রোপণ করা সম্পন্ন হয়েছে। আশা করা হচ্ছে, আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবার ইরি-বোরো চাষে কৃষক লাভবান হবে।