ই-পেপার | শুক্রবার , ২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

জামালপুরে অসময়ে ব্রহ্মপুত্রের ভাঙন, দিশেহারা পাড়ের মানুষ

জামালপুর প্রতিনিধি:

জেলার দেওয়ানগঞ্জে শুষ্ক মৌসুমে ব্রহ্মপুত্র নদে অসময়ে দেখা দিয়েছে ভাঙন। টানা দুই মাসের ভাঙনের আঘাতে পূর্বপাড়ে বিলীন হয়ে গেছে শতাধিক বসত-বাড়ি ও ফসলি জমি।

এছাড়াও হুমকিতে রয়েছে হাট-বাজারসহ সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান।
সোমবার (১৫ জানুয়ারি) দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার চরআমখাওয়া ইউনিয়নে গিয়ে দেখা গেছে, কয়েকটি গ্রাম নদের গর্ভে চলে গেছে। বসতভিটা হারিয়েছে প্রায় শতাধিক পরিবার। সবশেষ অসময়ে নদী ভাঙনে পাটাধোয়াপাড়া গ্রামে বাস করা বাসিন্দারা বিপাকে পড়ে গেছে। বেশ কয়েকবার নদী ভাঙনের পর অস্থায়ীভাবে বসতি করে থাকার জায়গাও থাকছে না এই গ্রামের মানুষের। শীতের এই সময়ে নদী তীরে চলমান এক কিলোমিটার ভাঙনের ফলে চিন্তায় নাওয়া-খাওয়া বন্ধের পথে তারা। স্থানীয়ভাবে উদ্যোগ নিয়ে কিছু বস্তা নদীতে ফেলা হলেও তা খুবই অপ্রতুল।

স্থানীয়রা জানান, বাঁধ না থাকায় ব্রহ্মপুত্র নদের পূর্ব তীরে গত দুই বছরে প্রায় চার হাজার ও গত দুই মাসে টানা ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে শতাধিক বসতবাড়ি, মসজিদ-মাদরাসাসহ দুইশত একর ফসলি জমি। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন এই এলাকার কমপক্ষে শতাধিক পরিবার। শুষ্ক মৌসুমে নদের পানি প্রবাহ স্বাভাবিক থাকলেও অসময়ের ভাঙনে হতবাক তারা।

পানির প্রবাহ কম থাকার সময়ে এখন যদি বাঁধ বা অন্য কোনোভাবে থামানো না যায় তবে বর্ষা মৌসুমে নদের ভয়াবহ ভাঙনের রূপ নিতে পারে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।

মিজানুর রহমান নামের এক ভুক্তভোগী বলেন, আমার পাঁচ বিঘা জমি নদ নিয়ে গেছে। ব্রহ্মপুত্রের ভাঙন আমি আগে কখনও দেখেনি। গত কয়েকদিনের ভাঙনে অনেক কিছু চলে গেছে।

ষাট বছরের বৃদ্ধ লুৎফর রহমানের বাড়ি এখন পর্যন্ত চারবার ভেঙেছে। ফসলি জমি গেছে কয়েক বিঘা জমি। এই ব্রহ্মপুত্রের এখন তিনি জন্য অসহায়। তিনি নদীর স্থায়ী বাঁধ চান। লুৎফর রহমান বলেন, আমার সব কিছু নিয়ে গেছে এই ব্রহ্মপুত্র। এখন আর কিছু নাই। শেষমেশ একটা জায়গায় বাড়ি করে আছি সেটাও বুঝি নিয়ে যায় যায় অবস্থা।

চরআমখাওয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জিয়াউল হক জিয়া বলেন, ভাঙনরোধে একটি বাঁধ তৈরির জন্য প্রধানমন্ত্রীসহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি৷ ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনের কারণে হুমকিতে রয়েছে হাজারও বসতবাড়ি, হাট-বাজারসহ একাধিক সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। ভাঙন থেকে রক্ষা পেতে নদীতে আগাম কোনো ব্যবস্থা নিতে হবে।

জামালপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ভাঙন প্রতিরোধে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে একটি প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। এটি অনুমোদিত হলেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া স্থায়ীভাবে বাঁধ তৈরির জন্য আলাদা একটি প্রস্তাবনাও দেওয়া হয়েছে।