বিশেষ প্রতিবেদক:
রাত পোহালেই কক্সবাজার পৌরসভা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। নির্বাচনে সব ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা প্রতিরোধ ও আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে মোতায়েন করা হয়েছে পুলিশ, র্যাব, বিজিবি, আনসারসহ বিভিন্ন বাহিনীর ১১০০ সদস্য। এছাড়া থাকছেন ১২ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও তিনজন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট।
রবিবার মধ্য রাতে প্রচার-প্রচারণা শেষ হওয়ার পর থেকেই কঠোর নজরদারির মধ্যে ভোটের মাঠে রয়েছেন নির্বাচন সংশ্লিষ্টরা।
নির্বাচন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, শতভাগ সুষ্ঠু নির্বাচন করতে কোনো ধরণের ছাড় নেই। তাই প্রয়োজনের অতিরিক্ত আইন-শৃঙ্খলাবাহিনী মোতায়েন থাকবে। আইন-শৃঙ্খলাবাহিনী ইতিমধ্যে পৌরসভাজুড়ে টহল জোরদার করেছে।
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং কর্মকর্তা শাহাদাত হোসেন জানান, পুলিশ, র্যাব, বিজিবি, আনসার সদস্য ১১০০ আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্য মাঠে থাকবে। তাদের নেতৃত্বে থাকবেন ১২জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও তিনজন জুড়িসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট।
তিনি জানিয়েছেন, সব কেন্দ্রই আইন-শৃঙ্খলবাহিনীর কাছে অতিগুরুত্বপূর্ণ। তার মধ্যে ১ ও ২ নম্বর ওয়ার্ডকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এই দুই কেন্দ্রে অতিরিক্ত নজরদারি রাখবে আইন-শৃঙ্খলাবাহিনী।
জেলা নির্বাচন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, কক্সবাজার পৌরসভার ১২টি ওয়ার্ডে ভোটার সংখ্যা ৯৪ হাজার ৮০২ জন। যার মধ্যে পুরুষ ভোটার ৪৯ হাজার ৮৭৯ ও নারী ভোটার ৪৪ হাজার ৯২৩ জন। ১২টি ওয়ার্ডের ৪৩টি কেন্দ্রে ইভিএমে ভোটগ্রহণ হবে।
কক্সবাজার পৌরসভার সর্বশেষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ২০১৮ সালের ২৫ জুলাই। ওই নির্বাচনে মেয়র হন আওয়ামী লীগের প্রার্থী, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান।
এবারের নির্বাচনে জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান চৌধুরী দলীয় প্রতীক নৌকা নিয়ে ও আরেক সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মাসেদুল হক রাশেদ নাগরিক কমিটির ব্যানারে নারকেল গাছ প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে হেলমেট প্রতীকে আলোচিত ব্যক্তি জগদীশ বড়ুয়া, হাতপাখা প্রতীক নিয়ে ইসলামি আন্দোলনের প্রার্থী মাওলানা জাহেদুর রহমান এবং মাসেদুল হক রাশেদের স্ত্রী জোসনা হক মোবাইল ফোন প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
তফসিল ঘোষণার পর থেকে প্রায় দুই মাস রাতদিন সমানভাবে ভোটের মাঠ চষে বেড়িয়েছেন প্রার্থীরা। তার মধ্যে তুমুল আলোচনায় দুই মেয়র প্রার্থী মাবু ও রাশেদ। প্রচারণার মাঠে তীব্র লড়াইয়ের পরে ভোটের মাঠে গড়াচ্ছে রাত পোহালেই। এই দুই প্রার্থীই হাড্ডাহাড্ডি অবস্থানে থাকায় এখন পর্যন্ত একজনকে বাদ দিয়ে অন্যজনকে এগিয়ে রাখছেন ভোটাররা। একইভাবে দুই প্রার্থীও নিজেদের জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী।
আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী মাহবুবুর রহমান চৌধুরী বলেন- ‘দীর্ঘ ২২ বছর কাউন্সিলর হিসেবে রাতদিন জনগণের সেবা করেছি। সাড়ে তিন বছর ভারপ্রাপ্ত মেয়রের দায়িত্ব পালনকালে শহরকে জলাবদ্ধতা মুক্ত করেছি। সর্বোপরি নিরাপদ মানুষ হিসেবে ভোটাররা আমাকেই ভোট দেবেন’।
নাগরিক কমিটি মনোনীত প্রার্থী মাসেদুল হক রাশেদ বলেন- ‘আমার পিতা, বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক একেএম মোজাম্মেল হক স্বাধীনতার পর প্রথম নির্বাচিত পৌর চেয়ারম্যান ছিলেন। তিনি দীর্ঘকাল পৌরবাসীর সেবা করেছেন। তার অবদান এখনো মানুষের মুখে মুখে। পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে আমরা তার সন্তানেরা সবসময় পৌরবাসীর সাথে ছিলাম। আর কক্সবাজারের আওয়ামী লীগের পরিবারের হিসেবে আমাদের পরিবারকে চিনে মানুষ। সব কিছু বিবেচনা করে ভোটাররা আমাকেই ভোট দেবে’।