ই-পেপার | শনিবার , ২৯শে জুন, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

আ.লীগ বিদেশিদের ওপর ভর করে টিকে আছে : রিজভী

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা :

আওয়ামী লীগ বিদেশিদের ওপর ভর করে ক্ষমতায় টিকে আছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, ডামি নির্বাচনের মাধ্যমে ডামি সরকার গঠন করে তারা (আ.লীগ) এখন ক্ষমতা হারানোর আতঙ্কে ভুগছেন। জনগণ থেকে প্রত্যাখ্যাত হয়ে এখন ষড়যন্ত্র তত্ত্ব খুঁজছেন। ৭ জানুয়ারিতে জনগণ আওয়ামী লীগকে চূড়ান্তভাবে ‘লাল কার্ড’ দেখিয়েছে। রোববার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

সরকারের ‘মহাদুর্নীতি, অর্থ ও সম্পদ পাচারের’ কারণেই অর্থনীতিতে বারবার ধাক্কা আসছে অভিযোগ করে রিজভী বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন ‘রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধ, ফিলিস্তিন-ইসরাইলে যুদ্ধের কারণে জিনিসের দাম আরও বেড়েছে। এর মধ্যে আমেরিকা হুথিদের আক্রমণ করল, এ কারণে অর্থনীতিতে আরেকটা ধাক্কা আসবে।’ আমি বলতে চাই, ইউক্রেন যুদ্ধসহ কোনো কারণেই বিশ্বের অন্যান্য দেশে দ্রব্যমূল্য বাড়েনি। কারণ মানুষের সব অধিকার কেড়ে নিয়ে কর্তৃত্ববাদী শাসন কায়েম করে উদ্ভট উন্নয়নের নামে বাংলাদেশে মহাসমারোহে দুর্নীতি আর লুটপাট চলছে। মেগা প্রকল্পের নামে মেগা দুর্নীতি হচ্ছে। এটি এখন সর্বজনস্বীকৃত।

তিনি বলেন, সরকারদলীয় লোকরা সব ব্যাংক লুটে নিয়েছে। মন্ত্রী ও দলীয় ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটের কারণে সব পণ্যের মূল্য এখন আকাশচুম্বী। দেশ থেকে লাখ লাখ কোটি টাকা আওয়ামী লীগের লোকজন পাচার করে নিয়ে যাচ্ছে। এক কেজি চালের দামে এক কেজি আলু কেনা যায় না। সবজির এই সিজনেও সব সবজি একশ থেকে দুইশ টাকার নিচে নয়। পেঁয়াজ, কাঁচামরিচের মূল্য আকাশ স্পর্শ করছে। মানুষ ক্ষুধার জ্বালায় সন্তান বিক্রি করে আহাজারি করছে। কিন্তু ক্ষমতাসীন দলের লোকরা সুখ-স্বর্গে বাস করছে বলে ক্ষুধার্ত জনগণের সঙ্গে মশকারা করতে তাদের বাধে না।

তিনি আরও বলেন, গুম, খুন, সাজানো মিথ্যা মামলা দিয়ে বিএনপিসহ বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার ও নির্যাতন চালিয়ে, হাজার হাজার নেতাকর্মীকে কারাগারে ঢুকিয়ে একতরফা নির্বাচন করলেও জনগণ বিএনপির আহ্বানে সাড়া দিয়ে ভুয়া ভোট বর্জন করেছে। নির্বাচনের পর কৃত্রিম আনন্দ-ফুর্তিতে মেতে থাকার চেষ্টা করলেও আপনাদের মনে শান্তি নেই। প্রতিনিয়ত ক্ষমতা হারানোর ভয় তাড়া করছে আপনাদের। কারণ সহিংসতা ও বিরোধী নেতাকর্মীদের দমনের মধ্য দিয়ে একতরফা নির্বাচন করলেও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বলছে, এই নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের অধিকার ক্ষুণ্ন করা হয়েছে।

বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, ‘এখন অবৈধ সরকারের প্রধানমন্ত্রী টুঙ্গিপাড়ায় বসে দেশবাসীর সঙ্গে সস্তা রসিকতা করছেন। উনি বিএনপির শীর্ষ নেতাদের হুমকি দিচ্ছেন, ফুরফুরে মেজাজি ঢংয়ে পেয়ারা হিন্দুস্থানের হিন্দি গান শোনাচ্ছেন, রবীন্দ্রসংগীত শোনাচ্ছেন। এটা শুনে আমরা হতবাক হয়েছি।’

তিনি বলেন, বাংলাদেশের বৃহত্তম একটি রাজনৈতিক দলের অফিস পুলিশ প্রশাসন যেভাবে বন্ধ করে দিয়ে ক্রাইম সিন লাগিয়ে অবরুদ্ধ করে রেখেছিল; লাল ফিতা দিয়ে ব্যারিকেড দিয়ে রেখেছিল। সেটার পর প্রচণ্ড দমন-পীড়নের মধ্য দিয়ে তারা একতরফা নির্বাচন করেছে। এই পরিস্থিতিতে রবীন্দ্রনাথের ‘বাঁধ ভেঙে দাও, বাঁধ ভেঙে দাও’-এই গানে উদ্বুদ্ধ হয়ে আমরা তালা ভেঙেছি। আর জাতীয় কবি নজরুল ইসলামের ‘কারার ঐ লৌহকপাট ভেঙে ফেল কররে লোপাট’ এই দুই মহাকবি, বিখ্যাত কবির গান আমাদের উদ্বুব্ধ করেছে এই স্বৈরাচারী সরকারের তালা ভাঙতে।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ, মীর নেওয়াজ আলী খান, রবিউল ইসলাম রবি, আমিনুল ইসলাম, তারিকুল ইসলাম তেনজিং, ইমতিয়াজ বকুল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।