ই-পেপার | শুক্রবার , ২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

বিদেশি সাংবাদিকের ব্যাগ ছিনতাই : পুলিশের ৯ ঘণ্টার সাড়াশি অভিযান

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম :

 

চট্টগ্রাম নগরীর এস এস খালেদ রোডে ইতালিয়ান নাগরিকের হাতব্যাগ ছিনতাইয়ের ঘটনায় লুণ্ঠিত মালামাল উদ্ধার ও ছিনতাইকাজে ব্যবহৃত সিএনজি অটোরিকশাসহ ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

 

বৃহস্পতিবার চকবাজার, সিনেমা প্যালেস, পুরাতন রেল স্টেশন ও ফটিকছড়ির উত্তর ধুরুং এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয় বলে জানান কোতোয়ালী জোনের এসি অতনু চক্রবর্ত্তী।

গ্রেফতারকৃতরা হলো- কল্পলোক আবাসিক খালেক কোম্পানির কলোনির মো. রুবেল (২৯), মীরসরাইয়ের মধ্যম তালবাড়িয়া শফি খানের বাড়ির নুর উদ্দিন প্রকাশ রিয়াজ (৩২), নোয়াখালীর কবির হাট আনোয়ার আলী জমদ্দার বাড়ির মো. মুমিন (৫২) ও খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি ইকবালের বাড়ির মো. আরাফাত মিয়া (২১)।

 

২ জানুয়ারি রাত সাড়ে ১০টার দিকে কর্ণফুলী টাওয়ারের সামনে আলোকচিত্রি ক্রিস্টিনা জ্যামা ক্যাপরা (৫৮) ছিনতাইয়ের শিকার হন।

 

সিএনজি অটোরিকশা নিয়ে আসা ছিনতাইকারীরা তাকে ভয় দেখিয়ে সাথে থাকা ১টি কালো রঙের হাত ব্যাগ ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায়। সেটিতে ছিল ইতালিয়ান ব্যাংকের ২টি ক্রেডিট কার্ড, নগদ ৩০ হাজার টাকা ও ১টি মোবাইল সেট। এ ঘটনায় তিনি কোতোয়ালী থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।

তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মিজানুর রহমান চৌধুরী জানান, টিম কোতোয়ালী ঘটনাস্থলের আশেপাশের অন্তত ৫০টি সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে এবং গুপ্তচর নিয়োগ করে। সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ থেকে সংগৃহীত সিএনজি অটোরিকশার পিছনে ‘সিরাতাল মুস্তাকিম’ লিখা আছে এমন অটোরিকশা ১৬টি থানা এলাকার অন্তত ১০০টি গ্যারেজে খোঁজ করা হয়। গুপ্তচরের দেওয়া তথ্য মোতাবেক অভিযান চালিয়ে ৪ জানুয়ারি বিকাল ৫টার দিকে চকবাজার থানা এলাকা থেকে আসামি মো.রুবেলকে গ্রেফতার করা হয়। তার হেফাজত হতে ছিনতাইয়ের ঘটনায় ব্যবহৃত সিএনজি অটোরিকশা উদ্ধার করা হয় এবং লুণ্ঠিত নগদ ৮ হাজার ২০০ টাকা উদ্ধার করা হয়।

 

ওসি এস এম ওবায়েদুল হক জানান, জিজ্ঞাসাবাদে আসামি রুবেল পলাতক অন্য আসামিদের নাম-ঠিকানা প্রকাশ করে। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে নুর উদ্দিন প্রকাশ রিয়াজকে সিনেমা প্যালেস এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয় এবং তার হেফাজতে থাকা লুণ্ঠিত নগদ ১০ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়। এরপর রাত পৌনে ৮টার দিকে মো. মুমিনকে পুরাতন রেলস্টেশন এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয় এবং তার হেফাজতে থাকা লুণ্ঠিত মোবাইল সেট উদ্ধার করা হয়। আরেক আসামি আরাফাত মিয়াকে রাত সোয়া ২টার দিকে ফটিকছড়ির উত্তর ধুরুং এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয় এবং তার হেফাজতে থাকা লুণ্ঠিত নগদ ৩ হাজার ৮০০ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।

 

অভিযানে নেতৃত্বদানকারী এডিসি (দক্ষিণ) নোবেল চাকমা জানান, চার সদস্যের এই ছিনতাইকারী চক্র দীর্ঘদিন যাবৎ নগরের বিভিন্ন এলাকায় ছিনতাই করে আসছে বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে। তাদের একজন সিএনজি অটোরিকশা চালায় এবং অপর দুইজন অটোরিকশার পিছনের সিটে যাত্রীবেশে বসে রাতের বেলায় ঘোরাঘুরি করতে থাকে। তারা টার্গেটকে অনুসরণ করে নির্জন জায়গায় কৌশলে ভয় দেখিয়ে পথচারী ও যাত্রীদের সাথে থাকা মোবাইল ফোন, নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার সহ বিভিন্ন জিনিসপত্র ছিনিয়ে নিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে ছিনতাইকৃত মালামাল অন্যদের কাছে কম দামে বিক্রি করে।