মোঃ আঃ রহিম জয় চৌধুরী :
মালয়েশিয়া থেকে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে আসা গিয়াসউদ্দিনকে নিচ্ছে না পরিবার শিরোনামে সংবাদ প্রকাশের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই তাকে নিতে এসেছে পরিবারের সদস্যরা। মানসিক ভারসাম্য হারানো এই প্রবাসীকে বাড়িতে নিতে গত ৭ দিন ধরে আপত্তি জানানোর জন্য অনুতপ্তও হয়েছে স্বজনরা।
মঙ্গলবার (২৬ ডিসেম্বর) সকালে ফেনীর দাগনভূঞা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল হাশিমের মধ্যস্ততায় রাজধানীর আশকোনা এলাকার ব্র্যাক মাইগ্রেশন ওয়েলফেয়ার সেন্টার থেকে গিয়াস উদ্দিনকে নিয়ে যান স্বজনরা।
এই তথ্য নিশ্চিত করে ব্র্যাকের মাইগ্রেশন ওয়েলফেয়ার বিভাগের ম্যানেজার আল আমিন নয়ন বলেন, ফেনীর দাগনভূঞা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার মধ্যস্ততায় সকালে তার দুই বোন আশকোনার ব্র্যাক মাইগ্রেশন ওয়েলফেয়ার সেন্টারে এসে তাকে নিয়ে গেছেন। এ সময় তারা জানিয়েছেন, তাদের আরও এক ভাই মানসিক ভারসাম্যহীন অবস্থায় প্রবাসে রয়েছেন। ভাইদের সঙ্গে দীর্ঘদিন তাদের কোনো যোগাযোগ ছিল না। কোনো টাকা পয়সাও বাড়িতে দিতো তারা। একারণে কিছুটা অভিমান থেকে গিয়াস উদ্দিনকে নিতে চায়নি পরিবার। তবে বিবাহিত গিয়াস উদ্দিনের স্ত্রী কোনো যোগাযোগ করেনি।
মানসিক অসুস্থ গিয়াস উদ্দিনের চিকিৎসার বিষয়ে ব্র্যাক চেষ্টা করছে জানিয়ে সুস্থ হলে পরবর্তী কর্মসস্থানের বিষয়েও ব্র্যাক সহযোগিতা করবে বলে জানান সংস্থাটির এই কর্মকর্তা।
এর আগে গত ১৯ ডিসেম্বর (মঙ্গলবার) মালয়েশিয়া থেকে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে বিকেল ৫.৫০ মিনিটে ঢাকায় আসেন মানসিক ভারসাম্যহীন অবস্থায় রেমিট্যান্স যোদ্ধা মো: গিয়াস উদ্দিন। বিমানবন্দরে গিয়াস উদ্দিনের আচরণ ও লক্ষ্যহীন চলাফেরা দেখে এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ান (APBN) ভুক্তোভোগিকে তাদের অফিসে নিয়ে তাৎক্ষণিক পরিবারের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেন। কিন্তু তার কাছে পাসপোর্ট না থাকায় পরিবারের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। এরপর গিয়াস উদ্দিনকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করতে ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের সহায়তা চায় এপিবিএন। তাকে রাজধানীর আশকোনায় ব্র্যাক লার্নিং সেন্টারে রেখে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেন কর্মকর্তারা। খোঁজ নিয়ে ব্র্যাক জানতে পারে গিয়াস উদ্দিন ফেনী জেলার দাগনভূঞা থানার রাজাপুর ইউনিয়নের সমাশপুর গ্রামের শাহাব উদ্দিনের ছেলে। ঠিকানা পেয়ে রাজাপুর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব মো. শাহ আলমের মাধ্যমে তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে ব্র্যাক ও এপিবিএন। গিয়াস উদ্দিনের গ্রামের বাড়িতেও যায় ব্র্যাকের কর্মকর্তারা। কিন্তু মানসিক ভারসাম্যহীন গিয়াস উদ্দিনকে নিতে অস্বীকৃতি জানায় পরিবার। এ সংবাদটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে নিজেদের ভুল বুঝতে পেরে গিয়াস উদ্দিনকে ফিরিয়ে নিতে মঙ্গলবার সকালে ব্র্যাক মাইগ্রেশন ওয়েলফেয়ার সেন্টারে আসে তার স্বজনরা।
সূত্র : বাংলা ভিশন।