ই-পেপার | সোমবার , ১লা জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

আমার অফিস হবে বিএনপি-জামায়াত-জাতীয় পার্টি সবার: সামশুল

চট্টগ্রাম ব্যুরো:
চট্টগ্রাম-১২ (পটিয়া) আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বঞ্চিত স্বতন্ত্র প্রার্থী সামশুল হক চৌধুরী বলেছেন, আমার অফিস হবে বিএনপি-জামায়াত-জাতীয় পার্টি-আওয়ামী লীগ সবার। তার এ ধরনের একটি বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে (ফেসবুক) ভাইরাল হয়ে পড়েছে।

জানা গেছে, রোববার (২৪ ডিসেম্বর) পটিয়া উপজেলার কচুয়াই ইউনিয়নে নিজের নির্বাচনী অফিস উদ্বোধন করার সময় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের প্রতি হুংকার দিয়ে তিনি এ কথা বলেন।

এর আগে উপজেলার অলির হাট সংলগ্ন এলাকায় ঈগল প্রতীকের গণসংযোগ করতে গেলে মহিলা আওয়ামী লীগের কর্মী ও সমর্থকরা তার কর্মী ও সমর্থকদের ঝাড়ু হাতে তাড়া করেন। জানা যায়, বিগত ১৫ বছর ধরে সামশুল হক চৌধুরী আওয়ামী লীগের টিকিটে সংসদ সদস্য (এমপি) নির্বাচিত হয়ে পটিয়াকে শাসন করেছেন।

গত পাঁচ বছর তিনি প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদায় হুইপ হয়ে ক্ষমতাকে আরও পাকাপোক্ত করেন। টানা ১৫ বছর তিনি ক্ষমতায় থেকে নিজের ও আত্মীয়-স্বজনের আখের গোছালেও দলীয় নেতাকর্মীদের কোনো সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত করেছেন। দলে বিএনপি-জামায়াত-জাতীয় পার্টি থেকে অনুপ্রবেশকারীদের প্রাধান্য দিয়েছেন। মামলা-মোকদ্দমা দিয়ে কোণঠাসা করে রেখেছেন আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের। তাই হাইকমান্ডের কাছে পটিয়ার তৃণমূল আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের দাবি ছিল মনোনয়ন পরিবর্তনের। আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তৃণমূলের ক্ষোভের বিষয়টি বিবেচনা করে এবার সামশুল হক চৌধুরীকে মনোনয়ন দেননি। দক্ষিণ চট্টগ্রামে একমাত্র পটিয়ায় প্রার্থী পরিবর্তন করে মনোনয়ন দিয়েছেন ৭৫ পরবর্তী আওয়ামী লীগের দুঃসময়ের কান্ডারি চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরীকে।

আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, কৃষক লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, শ্রমিক লীগসহ অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের সব নেতাকর্মীরা মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরীর নৌকার পক্ষে একাট্টা হয়ে রাত-দিন সমান তালে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন।

অপরদিকে দল থেকে মনোনয়ন বঞ্চিত হয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ঈগল প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন সামশুল হক চৌধুরী। শেখ হাসিনা মনোনীত প্রার্থীর নৌকা প্রতীকের বিপক্ষে গিয়ে নির্বাচন করায় দলীয় নেতাকর্মীদের মাঝে ক্ষোভ চরম আকার ধারণ করেছে। দলের নেতাকর্মীরা তার বিরুদ্ধে একাট্টা হয়ে মাঠে নেমেছেন। সামশুল হক চৌধুরী যেদিকে যাচ্ছেন ক্ষুব্ধ দলীয় নেতাকর্মীদের তোপের মুখে পড়ছেন। ইতোমধ্যে তিনি কাশিয়াইশ, দক্ষিণ ভূর্ষি ও কচুয়াই ইউনিয়নসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় গণসংযোগ করার সময় ভুক্তভোগী ও বঞ্চনার শিকার দলীয় নেতাকর্মীদের তোপের মুখে পড়েছেন। অনেকটা পুলিশ পাহারায় তিনি নির্বাচনী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছেন।

পটিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আ.ক.ম. শামসুজ্জামান চৌধুরী জানিয়েছেন, চট্টগ্রাম-১২ (পটিয়া) আসনে তিনবারে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত হয়েছেন সামশুল হক চৌধুরী। মনোনয়ন না পাওয়ার পর তিনি দলীয় নেতাকর্মীদের হুংকার দিয়ে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগে কোনো ত্যাগী নেতা নেই। যারা আছেন, তারা মূলমুত্র ত্যাগী। এ ধরনের আপত্তিজনক বক্তব্যের কারণে দলীয় লোকজন ক্ষুব্ধ হয়েছেন।

আগামী ৭ জানুয়ারি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরীকে বিজয়ী করার আহ্বান জানান তিনি।