ই-পেপার | রবিবার , ৬ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

ভিসা পাননি ৪৪ হাজার হজযাত্রী, শেষ সময়ে ফ্লাইট বিড়ম্বনার শঙ্কা

নিজস্ব প্রতিবেদক,সিএনএন বাংলা২৪:

মক্কা-মদিনা বাড়ি ভাড়া, মোয়াল্লেমসহ সৌদি আরবের দেওয়া বিভিন্ন শর্ত পূরণ করতে না পারায় এখনো ভিসা পাননি ৪৪ হাজার ২৬৮ হজযাত্রী। হজ এজেন্সিদের সংগঠন হাব ও ধর্ম মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

ভিসা পাওয়ার ক্ষেত্রে হজ এজেন্সির জন্য সৌদি আরবের কিছু শর্ত আছে। এর মধ্যে রয়েছে– সৌদি আরবে হজযাত্রীদের জন্য বাড়ি ভাড়া, ফ্লাইটের টিকিট, প্রবেশ ও বের হওয়ার রুট এবং আসা-যাওয়ার তারিখ নিশ্চিত করা। তবেই সৌদি দূতাবাস ভিসা দেয়।

গত ৩১ মে ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়, আগামী তিন দিনের মধ্যে বেসরকারি এজেন্সির মাধ্যমে যারা হজে যাবেন তাদের ভিসা প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে। সৌদি আরবে অতি দ্রুত ভিসা লজমেন্ট প্রক্রিয়া শেষ হয়ে যাবে।

এই সময়ে মধ্যে যারা ভিসা করতে ব্যর্থ হবেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দিয়েছে মন্ত্রণালয়। কিন্তু সৌদি আরবের ভিসা পাওয়ার জন্য যেসব শর্ত পূরণ করতে হয়, অনেক এজেন্সি সেসব শর্ত পূরণ করতে ব্যর্থ হওয়ায় হজযাত্রীদের ভিসা মিলছে না। ফলে প্রতিদিনই বিমানের ফ্লাইট ফাঁকা যাচ্ছে। এতে শেষ সময়ে হাজীদের সৌদি আরব যেতে ফ্লাইট বিপর্যয় হতে পারে এমন সংখ্যা প্রকাশ করেছে সংশ্লিষ্টরা।

সংশ্লিষ্টরা জানান, কিছু হজ এজেন্সি মালিক এখনো সৌদি আরবের শর্তগুলো পূরণ করতে না পারায় ভিসা পাননি এসব হজযাত্রী।

এদিকে সৌদি সরকারের হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী তওফিক আল-রাবিয়াহ দ্রুততম সময়ের মধ্যে বাংলাদেশি হজযাত্রীদের ভিসা সম্পন্ন করার জন্য ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খানকে বার্তা পাঠিয়েছেন। এরপর হজ এজেন্সিগুলোকে দ্রুত হাজীদের ভিসা করানোর জন্য তাগিদ দিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।

ধর্ম মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, হজযাত্রীদের ভিসা ধীরগতির কারণে হজ ফ্লাইট নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছে। প্রায়ই খালি সিট নিয়ে ছাড়তে হচ্ছে বিমানের ফ্লাইট। হজযাত্রী সংকটে এরই মধ্যে বাতিল হয়েছে বেশ কয়েকটি ফ্লাইট। ফলে শেষ মুহূর্তে হজযাত্রী পরিবহন নিয়ে চাপ বাড়বে। এতে শেষ সময়ে অনিশ্চয়তার মুখে পড়তে পারেন বেশ কিছু হজযাত্রী। এমন আশঙ্কার কথা জানিয়েছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স।

বিমানের কর্মকর্তারা জানান, আগামী ১৯ দিনে ৭৯ হাজার ১৪৭ জন হজযাত্রীকে সৌদি আরবে পৌঁছাতে হবে। ২২ জুন ঢাকা থেকে হজযাত্রার শেষ ফ্লাইট ছেড়ে যাবে।

এ ব্যাপারে হাবের সভাপতি শাহাদাত হোসাইন তসলিম বলেন, শেষ সময়ে এসে ভিসা জটিলতায় পড়তে যাচ্ছি বলে মনে হচ্ছে। ভিসার জন্য সৌদি আরবের দেওয়া শর্তগুলোর মধ্যে প্রতিটিই পূরণ করতে হয় এজেন্সি মালিকদের। একটিও পূরণ করতে ব্যর্থ হলে ভিসা হবে না। অনেক এজেন্সি এসব শর্ত পূরণ করতে পারেনি বলে তাদের ভিসা দিচ্ছে না। তবে হাবের পক্ষ থেকে সার্বক্ষণিক খোঁজখবর রাখা হচ্ছে।

এদিকে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের বেঁধে দেওয়া শর্ত অনুযায়ী, সরকারি ব্যবস্থাপনার ৩০ শতাংশ হজযাত্রীকে বিমানের ফ্লাইটে প্রথমে মদিনায় নিতে হবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত সরকারি ব্যবস্থাপনায় একজন হজযাত্রীকেও মদিনায় পাঠানোর ব্যবস্থা নেয়নি ধর্ম মন্ত্রণালয়। তবে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রীদের মধ্যে ৮ হাজার হজযাত্রী মদিনায় পৌঁছেছেন। এদিকে হাজীদের মদিনায় পৌঁছানোর জন্য একজন উপসচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তা নিয়োগ করেছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। তারপরও কাজ হচ্ছে না।

এ বছর ১ লাখ ২২ হাজার ২২১ জন বাংলাদেশি হজ পালন করতে যাবেন। এ পর্যন্ত ৭৮ হাজার ২৯০ জন হজযাত্রীর ভিসা হয়েছে বলে জানান আশকোনা হজ অফিসের পরিচালক সাইফুল ইসলাম।

 

 

এইচ এম কাদের,সিএনএন বাংলা২৪